শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ১৩ মে, ২০২৫ (বাসস) : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো নিজ জেলায় আসছেন তিনি। চট্টগ্রামের মানুষ প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, তাই স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
আগামীকাল বুধবার (১৪ মে) ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো নিজ জেলায় সফর করবেন। আগামীকাল সকালে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে শুরু হবে তাঁর দিনব্যাপী কর্মসূচি। এরপর তিনি যোগ দেবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে তার শিক্ষকতা জীবন শুরু করেছিলেন। এরপর হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে পৈতৃক বাড়ি পরিদর্শনের মাধ্যমে যাত্রা সম্পন্ন করবেন। প্রধান উপদেষ্টার সফরকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে যোগদানের পাশাপাশি, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঐতিহাসিক জোবরা গ্রাম পরিদর্শন করবেন, যেখানে তিনি বিখ্যাত ক্ষুদ্রঋণ ধারণার জন্য খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টার সফরসূচি অনুসারে চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে এনসিটি-৫ প্রাঙ্গণে একটি সভায় যোগ দেবেন। সেখানে বন্দর ও জাহাজ চলাচল খাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও বাণিজ্য সংস্থার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি।
চট্টগ্রাম বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানে বিদ্যমান বন্দর কার্যক্রম, কর্মক্ষমতা, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার পাশাপাশি বে টার্মিনাল এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরসহ চলমান এবং প্রস্তাবিত মূল স্থাপনাগুলোর ওপর একটি মাল্টি-মিডিয়া উপস্থাপনা করা হবে।
এরপর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বন্দর থেকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে যাবেন। যেখানে তিনি কর্ণফুলী নদীর উপর কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করবেন এবং চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা সমস্যা এবং অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়কের বাস্তবায়নের অগ্রগতি পরিদর্শন করবেন।
সার্কিট হাউসের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের ২৩ একর জমির নিবন্ধিত দলিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবেন।
দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উদ্দেশে সার্কিট হাউস ত্যাগ করবেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সমাবর্তনে ২০১১ থেকে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ২২ হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থীকে সনদপত্র প্রদান করা হবে। এই অনুষ্ঠানে ২০১৫-২০২৫ সালের ২২ জনকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হবে।
চবি কর্তৃপক্ষ ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদানের জন্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি লিট ডিগ্রি প্রদান করবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, উপাচার্যের নেতৃত্বে ও তত্ত্বাবধানে সমাবর্তন অনুষ্ঠান সফল করার জন্য আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছি। সমাবর্তনে দেশের যে কোনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবর্তন হবে। কারণ এ জমকালো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রায় এক লাখ মানুষ ক্যাম্পাসে সমবেত হবেন।