বাসস
  ১২ মে ২০২৫, ১৮:৪৮

সমাবর্তনের জন্য প্রস্তুত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, অংশ নেবেন ২২৫৮৬ গ্র্যাজুয়েট

সমাবর্তনের জন্য প্রস্তুত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, অংশ নেবেন ২২৫৮৬ গ্র্যাজুয়েট। ছবি: বাসস

চট্টগ্রাম, ১২ মে, ২০২৫ (বাসস): একদিন পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বহুল প্রতীক্ষিত ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। দীর্ঘ ৯ বছর পর হতে যাওয়া এই সমাবর্তনে অংশ নেবেন ২২৫৮৬ জন গ্র্যাজুয়েট। আগামী ১৪ মে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান।

সমাবর্তনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ও চবির সাবেক শিক্ষক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এসময় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করা হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ও শিক্ষা উপদেষ্টা অংশগ্রহণ করবেন। এ সুবিশাল আয়োজনে সভাপতিত্ব করবেন চবি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার।

আজ সোমবার (১২ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য মোহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার সমাবর্তন আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ১০টি অনুষদের অধীনে ৪৮টি বিভাগ, ৬টি ইনস্টিটিউট এবং ৫টি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। বর্তমানে ২৮,৫১৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন এবং ৯৯৬ জন শিক্ষক, ৪৪৫ জন কর্মকর্তা ও ১,৫২৮ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন।

সমাবর্তনে মোট ২২,৫৮৬ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হবে। এর মধ্যে পিএইচ.ডি ৪২ জন, এম.ফিল. ৩৩ জন এবং বাকিরা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। কলা ও মানববিদ্যায় ৪,৯৮৮ জন, বিজ্ঞান অনুষদে ২,৭৬৬ জন, বাণিজ্যে ৪,৫৯৩ জন, সমাজবিজ্ঞানে ৪,১৫৮ জন, জীববিজ্ঞানে ১,৬৮৫ জন, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৭৯৬ জন, আইনে ৭০৩ জন, শিক্ষা অনুষদে ৩১৭ জন, মেরিন সায়েন্সে ২৮৪ জন এবং চিকিৎসা অনুষদে ২,২৯৬ জন শিক্ষার্থী ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

প্যান্ডেল, সাজ-সজ্জা ও আসন ব্যবস্থা সম্পন্ন করতে ঢাকার খ্যাতনামা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পালন করছে। অনুষ্ঠানের জন্য প্রায় ২৫ হাজার লোকের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অতিথি আপ্যায়নের জন্য চট্টগ্রামের এমব্রোসিয়া ও বার কোড কেটারিং সার্ভিস তিনটি স্থানে রান্নার আয়োজন করবে। অতিথিদের জন্য উন্নতমানের খাবার, ফলমূল ও গিফট আইটেম (ব্যাগ, স্মরণিকা, কলম, পিন, ওয়ালেট, কনভোকেশন টুপি) প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সমাবর্তন উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে। অংশগ্রহণকারীদের কনভোকেশন কার্ড ছাড়া প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। কেউ যেন দুশ্চিন্তা না করেন, এ বিষয়ে ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য পরিহার করার অনুরোধ করা হয়েছে।

পরিবহন ব্যবস্থাপনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ১০০টি বড় বাস সকাল ৬টা থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করবে। এছাড়াও শাটল ট্রেনের বিশেষ সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। ১নং মূল গেট থেকে শুধু নির্ধারিত বাস ও শাটল পরিবহন প্রবেশ করতে পারবে।

ডিগ্রি ও গাউন বিতরণ, খাবার বিতরণ, অতিথি আপ্যায়ন, প্রচার-প্রকাশনা, শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, বাজেটসহ ১৯টি উপ-কমিটির মাধ্যমে পুরো কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এবারের সমাবর্তনের বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সাড়ে ৬ কোটি টাকা সংগ্রহ হয়েছে।

সমাবর্তন উপলক্ষ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের কনভোকেশন কার্ড, আইডি, গাউন সংগ্রহ ও ফেরত, খাবার গ্রহণ, যানবাহন ব্যবস্থাপনা, ইলেকট্রনিক ডিভাইস বহনে নিষেধাজ্ঞাসহ একাধিক দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সমাবর্তন উদ্‌যাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী জানান, একক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটি দেশের সবচেয়ে বড় সমাবর্তন। সবাই নিয়মতান্ত্রিকভাবে এতে অংশ নিবেন, এটাই প্রত্যাশা। এছাড়া জরুরি নির্দেশনাগুলো সমাবর্তনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে পাবেন সমবর্তী শিক্ষার্থীরা।