বাসস
  ০২ মে ২০২৫, ১৭:১১

গো খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে খামারিরা, খুশি কৃষক

লালমনিরহাটে ধানের খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে গবাদিপশু পালনকারী খামারিরা। ছবি: বাসস

।। বিপুল ইসলাম ।।

লালমনিরহাট, ২ মে ২০২৫ (বাসস) : জেলায় ধানের খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন গবাদিপশু পালনকারী খামারিরা। গো খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে তাদের। এদিকে খড়ের দাম বাড়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। অনেক কৃষক শুধু খড় বিক্রি করেই ধান চাষের খরচ তুলে আনছেন বলেও জানা গেছে।    

জানা যায়, ধান কাটার মৌসুম শেষে কৃষকরা গোলায় ধান তোলার পর অবশিষ্ট খড় মজুত করে রাখেন ভালো দামের আশায়। এবার ধান কাটার সাথে সাথে বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় খড় বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন তারা। বর্তমানে ১০০ আঁটি খড় বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। আর ১ হাজার বড় আঁটির দাম ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। 

খামারিদের অভিযোগ, সাধারণত এই সময় খড়ের দাম এতটা বাড়ে না। এবছর খড়ের দাম আগের চেয়ে বেশি। 

বড়বাড়ী ইউনিয়নের খামারি আবু সালাম বলেন, ‘আমার গোয়ালঘরে ৭টি গরু ও ১টি বাছুর রয়েছে। মজুদ করা খড় শেষ হয়ে গেছে। এখন প্রতিদিন গরুদের জন্য ৭০ থেকে ৯০ টাকার খড় কিনতে হচ্ছে। সঙ্গে অন্যান্য খাবারের খরচও যোগ হচ্ছে।’

একই এলাকার খামারি সুনীল চন্দ্র জানান, ‘কয়েক দিনের মধ্যে পুরোদমে ধান কাটার কাজ শুরু হলে খড়ের সংকট কিছুটা কমবে। তবে আধুনিক যন্ত্রে ধান মাড়াইয়ের ফলে প্রচুর খড় নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি ধান চাষিরা খড় মজুদ করে রাখায় বাজারে সরবরাহ কমে গেছে।’

তবে খড়ের ভালো দাম পেয়ে সন্তুষ্ট কৃষকরা। পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমার ৩ বিঘা জমি থেকে প্রায় ৩ হাজার আঁটি  খড় পেয়েছি। এখন এগুলোর বাজারমূল্য প্রায় ২২ হাজার টাকা। এখন মনে হচ্ছে ধানের থেকে খড়ের দামই ভালো পাচ্ছি।’

খড় ব্যবসায়ী বাবলু রহমান জানান, ভরা মৌসুমে খড়ের আঁটি ২ থেকে ৩ টাকায় সংগ্রহ করা গেলেও এখন পরিবহণ ও শ্রমিক খরচসহ সেটি বিক্রি করতে হচ্ছে ৬ থেকে ৭ টাকায়। তার মতে, দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হচ্ছে সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণের ব্যয় বৃদ্ধি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘খড়ের দাম বৃদ্ধিতে কৃষকরা লাভবান হলেও খামারিরা সমস্যায় পড়ছেন। গবাদিপশুর খাদ্য তালিকায় খড় একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই খামারিদের শুধু খড়ের ওপর নির্ভর না করে উন্নত জাতের ঘাস চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এতে করে খরচও কমবে, আর গোখাদ্যের সংকটও কমে আসবে।’