শেরপুর, ১৪ নভেম্বর, ২০২১ (বাসস) : জেলায় আগাম আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ভরা মাঠ থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কৃষকেরা। এসব জমিতে শীতের সবজি আবাদ করার প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে তারা। আর কৃষকদের স্বল্প মেয়াদী বিভিন্ন ফসল চাষের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।
করোনার এ সময়ে দেশের মানুষকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। আক্রান্ত হয়েছে কৃষক-কৃষাণীরাও। এর মধ্যেও শেরপুরের সদর, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার বিভিন্ন জমিতে এখন শোভা পাচ্ছে আগাম জাতের রোপা আমন ধান। সোনালি ধানে ভরে আছে মাঠ। এ জেলার মাটি যে কোন ফসলের জন্য উপযোগী। তবে স্বল্প মেয়াদি ফসল চাষ করে বাড়তি আয় করছে কৃষক।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এ মৌসুমে জেলায় বন্যা বা প্রাকৃতিক দুূর্যোগ না হওয়ায় আমনের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছে কৃষক। ইতিমধ্যে হাইব্রিড ধানিগোল্ড, তেজগোল্ড, এজেড-৭০০৬, উচ্চ ফলনশীল বিনা-৭, বিনা-১১, বিনা-১৬ ও ১৭, ব্রি-ধান ৬২ আগাম জাতের ধান কাটা শুরু করে দিয়েছে তারা। ফলনও পাচ্ছে ভালো। প্রতি ৫ শতাংশে ৩মণ করে ফলন হচ্ছে। আগাম জাতের ধান কেটে এসব জমিতে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে চাষ করা হবে সরিষা, আলু, রসুন ও শাক সবজি। আবার সরিষা ও শাক-সবজির আবাদ ঘরে উঠিয়ে একই জমিতে করা হবে ইরি-বোরো ধানের আবাদ।
শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের মাদারপুরের কৃষক আব্বাস আলী, ছমেজ উদ্দিন, রহমত মিয়া ও আকবর আলী জানান, তারা এবার ধানী গোল্ড জাতের ধান চাষ করেছিলেন। এ ধান অন্যান্য ধানের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন আগে কাটা যায়। ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। প্রতি পাঁচ শতাংশ জমিতে তিন মণ করে ধান আসছে।
একই ইউনিয়নের লংগড় পাড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা হয়। তারা জানান, আগাম জাতের ধান কাটার পরপরই ক্ষেতে সরিষার বীজ বপন করেছে। মূলা, লালশাকসহ বিভিন্ন সবজিও চাষ শুরু করেছে । এতে তাদের বাড়তি লাভ হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড: মুহিত কুমার দে বলেন, দেশের খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ ও উদ্বৃত্ত কয়েকটি জেলার মধ্যে সীামন্তবর্তী শেরপুর জেলা একটি। চলতি বছরে জেলায় ৯১ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। আগাম জাতের ধান কেটে একই জমিতে সরিষা, আলো ও শাক সবজি চাষ করায় কৃষকদের জন্য আশির্বাদ বয়ে নিয়ে আসবে। কৃষকরা বেশ লাভবান হবে।