বাসস
  ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:৫৮

বরগুনার দর্জিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন

বরগুনা, ৪ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস): মহিমান্নিত রমজান মাস প্রায়  শেষ।  আর কয়েকদিন পরই বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ’র খুশির দিন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে দিন কিংবা রাত; -বিরাহীন ব্যস্ত সময় পার করছেন বরগুনার দর্জিরা।
ঈদে সকলেরই চাই নতুন কাপড়। কারো পছন্দ রেডিমেট পোশাকে আর কারো পছন্দ টেইলারের তৈরি পোশাক। মন মতো ঈদের পোশাক তৈরি করতে দর্জি দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। আর ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে বিরামহীন নির্ঘুম রজনী পার করে কাজে দর্জিরা । ক্রেতাদের চাহিদা ও আধুনিকতার সংমিশ্রনে পোশাক তৈরি করছেন তারা। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ করছেন দর্জি ও তার কারিগররা।
বরগুনার শহরগুলোর দর্জিদের পাশাপাশি মহিষকাটা, তালুকদার বাজার, গাজীপুর, আড়পাঙ্গাশিয়া, কুকুয়া. গুলিশাখালী, অফিস বাজার,  মানিকঝুড়ির মতো প্রত্যন্ত এলাকার   দর্জি ও  কারিগররা স্থানীয় নর-নারী-শিশুদের পছন্দের পোশাক তৈরিতে চরম ব্যস্ত সময় পার করছে। ইতিমধ্যে দর্জির  দোকানগুলোতে ক্রেতাদের লাইন লেগেছে তাদের পছন্দের পোশাক ডেলিভারি নিতে।
প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দর্জিদের  সেলাই মেশিনের শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যায়না। সেলাই মেশিনের শব্দে মুখরিত  দোকানগুলো। দর্জিদের যেন দম ফেলারও সময় নেই। গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে নিঘুম রজনী অতিবাহিত হচ্ছে তাদের। রোজার শুরু থেকেই কারিগররা কেউ মাপ নিচ্ছেন, কেউ কাপড় কাটছেন, কেউ আবার সেলাই করছেন, কেউবা বোতাম লাগিয়ে আয়রন করে অর্ডার বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তৈরি জামা সাজিয়ে রাখছেন। এখন আর অর্ডার না নিলেও অর্ডার নেওয়া কাজ ঈদের আগে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ব্যস্ত দর্জি ও  কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, খুবই ব্যস্ত তারা। তাই কথা বলারও সময় পাচ্ছেননা।
অন্যান্য বছরে টেইলর্স এর দোকানগুলোতে ব্যস্ততা আর সময়মত ডেলিভারি দিতে না পারার অজুহাতে অর্ডার নিতে অস্বীকৃতির কারণে এবার রোজার শুরু থেকেই টেইলার্স এর দোকানগুলোতে ছেলেদের শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, পায়জামা আর মেয়েদের থ্রি-পিস, ব্লাউজ, বোরকা তৈরির অর্ডার ক্রেতারা আগেই দিয়ে দেন। রোজা যত বাড়ছে কাজের চাপ ততই বাড়ছে। আর তাতে বাড়ছে দর্জির দোকান গুলোর  কারিগরদের ব্যস্ততা। আর এইসব কাজ সময়মত বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক টেইলার্সের দোকানে  অতিরিক্ত লোক নিয়োগ করেছে।
আমতলী পুরাতন বাজারের জাফর টেইলার্স জানান - রোজার আগে কাজের অর্ডার বেশি থাকায় ডেলিভারি দিতে হিমসিম খাচ্ছি। তিনি আরও জানান, কাজের অর্ডার এখন পর্যন্ত  অনেক। নতুন করে অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিয়েছি। একে স্কুল এলাকার  গ্রাহক  সাইদুর রহমান জানান, ঈদের সময় সবাই চায় নতুন পোশাক পরতে। তাই তিনি ছোটবেলা থেকেই তৈরি করা পাঞ্জাবি, পায়জামা ও শার্ট-প্যান্ট পরেন। প্রতি বছর দুই-তিন সেট পোশাক বানাতে হয়। ব্যতিক্রম হয়নি এবারের ঈদেও।
রেডিমেড পোশাকের চেয়ে বানানো পোশাক টেকসই ও উন্নত। ঈদ উপলক্ষে দর্জিরা  মজুরি নিচ্ছেন বেশি, -এমন অভিযোগ রয়েছে। তবে দর্জিরা  বলছেন, দোকানভাড়া, দর্জি কারিগদের পারিশ্রমিক , বিদ্যুৎ বিলসহ সব কিছুর দাম বেড়ে  যাওয়ায়  ছেলেদের প্যান্ট ৪০০- ৫০০ টাকা, শার্ট ৩৫০ - ৫০০ টাকা, পাঞ্জাবি ৪০০- ৫০০ টাকা, পায়জামা ২০০ - ২৫০ টাকা মেয়েদের থ্রি-পিস ২০০ - ৩৫০ টাকা, কামিজ ২০০ - ২৫০ টাকা মজুরি নেওয়া হচ্ছে। তারা আরো জানান অন্যান্য সময়ে একটি প্যান্ট ,শার্ট, পাঞ্জাবি, পায়জামা, মেয়েদেন থ্রি-পিস, কামিজসহ বিভিন্ন পোশাক থেকে গড়ে বাড়তি মজুরি নেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। ভালো ব্যবসার জন্য ঈদ মৌসুমের অপেক্ষায় থাকেন। এ সময়ে তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় এবং তা অব্যাহত থাকে চাঁদ রাত পর্যন্ত।  এ বছর দর্জি দোকানে পুরুষ গ্রাহকের চেয়ে নারীরা বেশি ভিড় করছেন। মেয়েদের পোশাক তৈরির দোকান গুলোতো প্রচন্ড ভিড় রয়েছে।    

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়