বাসস
  ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:৪৭

নরম মাটিতে জিওটেক্সটাইল মোড়ানো বাঁধ ভূমিকম্প প্রতিরোধী : আইইবি’র সেমিনারে বক্তারা 

ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ (বাসস) : নরম মাটিতে জিওটেক্সটাইল মোড়ানো খাড়া বাঁধ ভূমিকম্প প্রতিরোধী এবং টেকসই। ভূমিকম্প অথবা ওয়েভ এর সময় বাঁধের বিভিন্ন স্তরের গতিশীল গুনাবলী কি রকম পরিবর্তন হয় সেটা বিবেচনায় নিয়ে বাঁধ ডিজাইন করলে, বাঁধটি ভূমিকম্প প্রতিরোধী ও টেকসই হবে।
আজ বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর পুরকৌশল বিভাগ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের নরম মাটিতে ভূমিকম্প প্রতিরোধী মোড়ানো বাধেঁর  (ওয়ার্প ফেইস এমবাঙ্কমেন্ট) প্রয়োগ’ র্শীষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আইইবি পুরকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মুনাজ আহমেদ নূরের সভাপতিত্বে এবং বিভাগের সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার অমিত কুমার চক্রবর্তীও সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও আইইবি’র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইইবি’র প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুল হুদা, আইইবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এইচআরডি) ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুজ্জামান এবং এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুর রশীদ খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, আইইবি’র সম্মানী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু)। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, এলজিইডি’র সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী ড. ইঞ্জিনিয়ার রিপন হোড়। মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী আহমেদ আনসারী। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিভাগের ভাইস-চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. জিকরুল হাসান।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, মোড়ানো বাঁধটি বিভিন্ন জিওটেক্সটাইল দ্বারা প্যাঁচানো থাকে এবং বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের বালু (সিমেন্ট বালু অথবা লোকাল বালু) দ্বারা পূর্ণ করা হয়। বাঁধটি খাড়া হবার কারণে প্রচলিত বাঁধের তুলনায় দুই পাশের কৃষিজমি অধিগ্রহণ করার প্রয়োজন হবেনা। বাঁধ তৈরী করার সময় দুই ধরনের ওভেন অথবা নন ওভেন জিওটেক্সটাইল ব্যবহার করা হয়। মোড়ানো বাঁধটি নরম মাটির গুনাবলির পারস্পারিক অবস্থান, ভৌগোলিক অবস্থা এবং ইজিএল এর উপর নির্ভর করে বিভিন্ন লেয়ারের হয়ে থাকে।  
তারা বলেন, ভূমিকম্প বা বিভিন্ন ওয়েভের সময় নরম মাটির উপর নির্মিত বাঁধের গতিশীল গুনাবলী বিশ্লেষন করা এবং এমন ধরনের বাঁধ নির্মাণ করা যেটা ভূমিকম্প প্রতিরোধী হবে। পাশাপাশি গতানুগতিক বাধের তুলনায় কম খরচে নির্মাণ করা যাবে এবং এটি নির্মাণে কম জায়গার প্রয়োজন হবে।
বক্তারা বলেন, মোড়ানো বাঁধ সরকারের ব্যাপক জমি অধিগ্রহণ ব্যয় কমিয়ে দিবে। বাঁধটি খাড়া হবার কারণে দুইপাশের জায়গা প্রয়োজন হবে না। মোড়ানো বাঁধটি ৭০ শতাংশ খরচ কমিয়ে দিবে প্রচলিত বাঁধের তুলনায়। বলা যায় যেখানে ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা মোড়ানো বাঁধ নির্মানে প্রয়োজন হবে, যেটা প্রচলিত বাঁধ নির্মানে ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা লাগত জমি অধিগ্রহণের খরচসহ। ব্যাপক কৃষি জমি রাস্তা বানানোর জন্য ব্যবহার করতে হবে না। এসব কৃষি জমিতে ফসল  উৎপাদন হবে।
বাঁধটি জলবায়ু সহিষ্ণু হবে অর্থ্যাৎ বন্যা ও সাইক্লোন এটি সহ্য করতে পারবে। বাঁধটি জিটেক্সটাইল দ্বারা মোড়ানো থাকার কারণে এবং বালুর সাথে  ঘর্ষণ ডেভেলপ করা এবং পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবে ইন্টারলক থাকার কারণে এটি প্রচলিত বাঁধের থেকে বেশী বন্যা ও সাইক্লোনের প্রভাব সহ্য করতে পারবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়