বাসস
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৫৩
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:০১

টাঙ্গাইলের ভারত পাল ৫০ বছর ধরে তৈরি করছেন দুর্গা প্রতিমা

টাঙ্গাইল, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ (বাসস) : শিশুকালেই বাবার হাতে হাতেখড়ি, নিখুঁতভাবে মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করেন প্রতিমা। তার হাতের কারুকাজ যেন মুগ্ধতা সৃষ্টি করে। প্রতিমা তৈরি যেন মিশে আছে তার মনে-প্রাণে। এখন তৈরি করছেন দুর্গা দেবীর প্রতিমা।
জেলার বাসাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাশড়া গ্রামের ভারত পালের (৬০) কথা বলছিলাম। বয়স যখন ১০ বছর তখন থেকে বাবার সাথে হাতেখড়ি হয় প্রতিমা তৈরির। তারপর গত ৫০ বছর ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় তৈরি করছেন প্রতিমা।
আর ক’দিন বাদেই আসছেন দেবী দুর্গা। তাই শিল্পীর নিপুঁণ হাতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। পাশাপাশি চলছে লক্ষ্মী, স্বরস্বতী, গণেশ ও কার্তিকের প্রতিমা তৈরির কাজও। প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। আগামী ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোন মন্ডপে করছেন কাঠামো তৈরি, আবার কোথায় করা হচ্ছে মাটির কাজ। প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। দেড় মাস আগে থেকেই শুরু করে দেন প্রতিমা তৈরির কাজ। ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রতিমা তৈরিতে যেন দম ফেলার ফুসরত নেই তার।
প্রতিমা শিল্পী ভারত পাল বলেন, ছোট সময় থেকে বাবার কাছে প্রতিমা তৈরির কাজ শিখি। প্রতিমা তৈরি আমার আত্মার সাথে মিশে আছে। আমার বয়স যখন ১০ বছর তখন থেকেই প্রতিমা তৈরির কাজে লেগে পড়ি। মনের আবেগ আর ভালোবাসা দিয়েই প্রতিমা তৈরি করি। প্রতিমা তৈরিই আমার ধ্যান-জ্ঞান। প্রতিমা তৈরি কাজে নিয়োজিত রয়েছি প্রায় ৫০ বছর ধরে। এ বছর প্রায় ১৪টি প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। কোনো মন্ডপে চলছে কাঠামোর কাজ আর কোনো মন্ডপে চলছে মাটির কাজ। আমার ছোট দুইভাইও প্রতিমা তৈরির কাজের আমাকে সাহায্য করে। এ বছর প্রতিমা তৈরি সরঞ্জামের দামটাও বেশি।
উপজেলার রাশড়া গ্রামের যাদব পাল জানান, ভারত ছোট সময় থেকে প্রতিমার তৈরির কাজ করছে। প্রায় ৫০ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করছে। বাসাইল ছাড়াও পাশ্ববর্তী উপজেলা সখীপুরে প্রতিমা তৈরিতে ভারতের সুনাম রয়েছে।
উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের জিকাতলী পাড়া গ্রামের শীতল চক্রবর্তী জানান, ছোটকাল থেকে দেখছি ভারত প্রতিমা তৈরি করছে। আমি মাঝে মাঝে তার প্রতিমা তৈরি দেখতে যেতাম। কি অসাধারণ নিপুঁন হাতের কারুকাজ।
বাসাইল উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ সুনীল রায় স্বপন বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ার কারণে আমরা বড় দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ঈশ্বরের কৃপায় করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু কমায় পূজার আয়োজন ও প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত হয়ে পরেছেন প্রতিমা তৈরিতে। রাত-দিন প্রতিমার কারিগররা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। গত বছর ৪২টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর প্রায় ৫৬ টি মন্ডপে পূজা উদযাপন করা হবে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা মন্ডপ গুলোতে শারদীয় দুর্গা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। শারদীয় দুর্গা উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও বাসাইল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।