শিরোনাম

ঢাকা, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
জয় বাংলা ব্রিগেডের জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়।
আজ সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক মো. আব্দুস সালামের আদালতে মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ গঠন শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৫ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন দিন ধার্য করেন।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত -৯ এর রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সাইফুল্লাহ আল মামুন (সাইফুল) বাসস'কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জন আসামি।এরমধ্যে শেখ হাসিনাসহ ২৫৯ জন পলাতক রয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সাবিনা আক্তার তুহিনসহ ২৭ জন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আটক রয়েছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মিটিংয়ে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ গঠন করে একটি গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে পলাতক শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বুঝিয়ে দেয়া এবং তা নিশ্চিতকরণের জন্য শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত যুদ্ধ করে যাবেন বলে অনেকেই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। মোট ৫৭৭ জন অংশগ্রহণকারী দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উক্ত জুম মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করে এবং শেখ হাসিনার সকল নির্দেশ পালন করার ব্যাপারে একাগ্রচিত্তে মত প্রকাশ করেন। ড. রাব্বি আলম এর (যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি) হোস্টিং এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হোস্ট, কো-হোস্ট ও অংশগ্রহণকারী নেতা-কর্মীদের কথোপকথনে ভয়েস রেকর্ড পর্যালোচনায় ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামক প্লাটফর্মে দেশ/বিদেশ থেকে অংশগ্রহণকারীগণ বৈধ সরকারকে শান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনা করতে দেবে না মর্মে আলোচনা হয়।
সেই সাথে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম মিটিং এ বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য গৃহযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধের সুস্পষ্ট উপাদান রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক। এরপর সিআরপিসির ১৯৬ ধারায় ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে সিআইডির এই কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১৪ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলামের আদালতে শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন্স) মো. এনামুল হক। আদালত চার্জশিটটি গ্রহণ করে শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ আসামিরা হলেন-ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সাবিনা আক্তার তুহিন,যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড.রাব্বি আলম,জয়বাংলা বিগ্রেডের সদস্য কবিরুল ইসলাম,এডভোকেট কামরুল ইসলাম,এলাহী নেওয়াজ মাছুম,জাকির হোসেন জিকু,প্রফেসর তাহেরুজ্জামান,এ কে এম আক্তারুজ্জামান,আজিদা পারভীন পাখি,শাহীন,এডভোকেট এএফএম দিদারুল ইসলাম,মাকসুদুর রহমান,সাবেক এমপি সৈয়দ রুবিনা আক্তার,সাবেক এমপি পংকজ নাখ,লায়লা বানু,ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন,রিতু আক্তার,নুরুন্নবী নিবির,সাবিনা বেগম ও শরিফুল ইসলাম রমজান।