শিরোনাম
ঢাকা, ২ মে, ২০২৫ (বাসস) : দেওয়ানী ও ফৌজদারি এখতিয়ার অনুসারে পৃথক আদালত স্থাপনে আইন মন্ত্রণালয়ে সুপ্রিম কোর্টের চিঠি।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে নিউজ আপডেটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। নিউজ আপডেটে সুপ্রিম কোর্ট হেল্প লাইনের সাফল্য, বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের প্রস্তাবিত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের অধীনস্থ করে আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে বেঞ্চ সহকারীকে সুপ্রিম কোর্টের বরখাস্তের তথ্য তুলে ধরা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সুপ্রিম কোর্টের হেল্প লাইন সার্ভিস শুরু হওয়ার পর হতে গত ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে হতে আইনি পরামর্শ, মামলা সম্পর্কিত তথ্য ও অভিযোগ দাখিল সংক্রান্ত মোট ২০২৬টি কল গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে আইনি পরামর্শ গ্রহণের কল আসে ১০৬৮টি। আর বিভিন্ন তথ্য জানতে চেয়ে ৭৭১টি কল আসে। সবগুলো ক্ষেত্রেই সেবাগ্রহীতাদের তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, সুপ্রিম কোর্টের হেল্প লাইনের আদলে দেশের বিভিন্ন জেলা আদালতে নিজস্ব হেল্পলাইন নাম্বার চালু করা হয়েছে। সে সব হেল্পলাইনে ফোন করার মাধ্যমে সেবাগ্রহীতাগণ সংশ্লিষ্ট আদালত সংক্রান্ত সেবা গ্রহণ করে উপকৃত হচ্ছেন।’
গণসংযোগ কর্মকর্তা জানান, সুপ্রিম কোর্টে আগত কোনো বিচারপ্রার্থী বা সেবাগ্রহীতা সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কোনো শাখায় সেবা গ্রহণে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলে বা সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে সহায়তা করার জন্য গতবছর ২৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট হেল্পলাইন নাম্বার চালু করা হয়েছে। সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতি রোববার হতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা হতে বেলা ৪ টা পর্যন্ত উক্ত হেল্পলাইন সার্ভিস হতে সেবা গ্রহণ করা যায়। একইসাথে হেল্পলাইন নাম্বারে হোয়াটসঅ্যাপ ও মোবাইল অ্যাপ সার্ভিস চালু রয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হেল্পলাইনের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি বরাবর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস হতে মোট ৩৪ টি অভিযোগ এসেছে। সে সব অভিযোগসমূহ সুপ্রিম কোর্টের এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় হেল্পলাইনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিযোগকারীকে করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঘোষিত ১২ দফা নির্দেশনার আলোকে বিচারসেবা প্রদানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির আলোকে পদক্ষেপ নেয়া শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে একজন বেঞ্চ সহকারীকে সাময়িক বরখাস্ত করার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে দুদক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
‘বিচার বিভাগীয় সচিবালয় অধ্যাদেশ-২০২৪’ এর খসড়ায় প্রয়োজনীয় সংশোধনসহ নাম পরিবর্তন করে ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ ২০২৫’ এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান গণসংযোগ কর্মকর্তা। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ গতবছর ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের ইনার গার্ডেনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও দেশের জেলা আদালতসমূহে কর্মরত বিচারকদের উদ্দেশ্যে অভিভাষণ প্রদানকালে বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। প্রধান বিচারপতি ঘোষিত সে রোডম্যাপে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণ বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়। প্রধান বিচারপতি তার অভিভাষণে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দেন। তারই ধারাবাহিকতায় সুপ্রিম কোর্টের অধীনে বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাবনা গত ২৭ অক্টোবর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। সে পত্রে সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ
যথাযথরূপে পালনের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে আইন ও বিচার বিভাগকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়।
ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ইতিবাচক সহযোগিতায় বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো প্রস্তুতকরণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে বলে গণসংযোগ কর্মকর্তা জানান।