শিরোনাম
জাহিদুল খান সৌরভ
শেরপুর, ৪ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : জেলায় গতবছরের ৪ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে তিন শিক্ষার্থী মাহবুব আলম (২০), সারদুল আশিস সৌরভ (২২) ও সবুজ মিয়া (১৮) শহীদ হন।
গত বছরের ৪ আগস্ট শেরপুর জেলা শহরের বুলবুল সড়ক মোড়, নিউমার্কেট মোড়, থানা মোড় রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। ছাত্রদের সাথে সংঘর্ষে জড়ায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ওই দুপুর ২ টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহত হন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
ওইদিন সকাল থেকে জেলা শহরের কলেজ মোড়ে জমায়েত হতে শুরু করে ছাত্র জনতা। একই দিন শহরের নিউমার্কেট মোড় ও থানা মোড়ে জড়ো হয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সেদিন দুপুরে ছাত্র জনতা শহরের কলেজ মোড় থেকে একটি মিছিল নিয়ে নিউমার্কেট মোড়ের দিকে প্রবেশ করতে চাইলে সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এসময় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ছাত্রদের মিছিলের দিকে এগিয়ে কলেজ মোড়ের দিকে অগ্রসর হয়। ছাত্ররা পিকআপ ভ্যানটিকে অনুসরণ করে দৌঁড়াতে থাকে। ঠিক তখনই জেলা প্রশাসনের একটি দ্রুতগামী সাদা গাড়ি ছাত্রদের মিছিল ভেদ করে পার হয়ে যায়। সেই গাড়ির চাপায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন শিক্ষার্থী মাহবুব আলম (২০) ও সারদুল আশিস সৌরভ (২২)। একই দিন শহরের খাদ্য গুদাম মেড়ে বিকেলে আন্দোলনে যোগ দিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে শহীদ হন সবুজ মিয়া (১৮)
শহীদ মাহবুব শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের তারাগড় কান্দাপাড়া গ্রামের মিরাজ আলী ও মাহফুজা খাতুন দম্পতির দ্বিতীয় ছেলে। তিনি শেরপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও একজন আইসিটি উদ্যোক্তা ছিলেন।
শহীদ সৌরভ ঝিনাইগাতি উপজেলার পাইকুড়া গ্রামের মো. সোহরাব হোসেন ও মোছাম্মৎ শামসুন্নাহার বেগমের ছোট ছেলে। সৌরভ শেরপুর সেকান্দার আলী কলেজে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরপুর জেলা শহরের একটি ছাত্র হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করতেন।
শহীদ সবুজ মিয়া শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজিরচর ইউনিয়নের রূপারপাড়া গ্রামের আজহার আলী ও সমেজা খাতুন দম্পতির ছেলে। তিনি গত বছর শ্রীবরদী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪ দশমিক ৩৩ পেয়ে ‘এ’ গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শেরপুর জেলা কমিটির সাবেক আহ্বায়ক মামুনুর রহমান গণঅভ্যুত্থানে শহীদ তিন শিক্ষার্থী হত্যার বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, চলতি মাসেই শেরপুর তিন শিক্ষার্থী হত্যা মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুসারে পুলিশ কাজ করবে।