শিরোনাম
ইব্রাহিম খলিল মামুন
কক্সবাজার, ৪ আগস্ট ২০২৫ (বাসস): ৪ আগস্ট ২০২৪। সন্ধ্যা ৬টা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারের কাছাকাছি পৌঁছায়। এসময় শহরের শহীদ সরণি ও ঘুনগাছতলা এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা সশস্ত্র হামলা চালায়। এ হামলায় এলোপাতাড়ি গুলিতে অন্তত ২০ জন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং পথচারী আহত হন। আহতদের জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু হয়। পঁচিশ বছর বয়সী ওই তরুণের বুকে গুলি লাগে। পরে অজ্ঞাতনামা হিসেবে তাকে দাফন করা হয়।
একইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কক্সবাজার জেলা বিএনপি অফিস ভাঙচুর করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা। এতে অফিসটি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
জুলাই আন্দোলনে কক্সবাজারে সম্মুখ সারির যোদ্ধা, সমন্বয়ক এম সাফওয়ান মুহাম্মদ তারেক সেদিনের স্মৃতিচারণ করে বাসসকে বলেন, ‘ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ মিছিলটি কক্সবাজার শহরের ঘুনগাছতলা এলাকায় পৌঁছার সাথে সাথে উত্তরপশ্চিম দিক থেকে বৃষ্টির মতো গুলি আসতে শুরু করে। এ সময় আন্দোলনরত ছাত্রদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এক ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গুলিতে অন্তত ২০ জন আহত হন। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা একজন পথচারীর মৃত্যু হয়।’
গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘মিছিলটি কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে এগুতেই উত্তর দিক থেকে বৃষ্টির মতো গুলি আসতে থাকে। এমন পরিস্থিতি শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, কক্সবাজারের কোন মানুষ কখনো মনে হয় দেখে নাই।’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপদে সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে হাসপাতালে ছুটে যাই। হাসপাতালে গিয়ে দেখি, গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীদের সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করে ছুটে যাই অন্য কর্মসূচিতে। চব্বিশের ৪ আগস্ট গভীর রাত পর্যন্ত এমনই ছোটাছুটির মধ্যে সময় কাটে। এভাবেই আমাদের ৫ আগস্টের বিজয় নিশ্চিত হয়।’