শিরোনাম
রুদ্র আল মুত্তাকিন
ঢাকা, ০১ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়ক মশিউর রহমান খান রিচার্ড বলেছেন, জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নির্মাণে জুলাই-ঐক্য ধরে রাখা উচিৎ। না হলে শহীদের রক্ত বৃথা যাবে।
রিচাড বলেন, তাঁর রাজনৈতিক প্রত্যাশা হলো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উত্তরণে জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন, মুক্তিযুদ্ধের স্পিরিট বাস্তবায়ন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
মশিউর রহমান খান রিচার্ড নারায়ণগঞ্জে বেড়ে উঠেন। সেখানে ছাত্র ফেডারেশনের রাজনীতিতে যুক্ত হন। বর্তমানে ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
সম্প্রতি জাতীয় বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে মশিউর রহমান খান রিচার্ড বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তাঁর সম্পৃক্ততা ও ছাত্র রাজনীতির পরিস্থিতি এবং আন্দোলনে তার অভিজ্ঞতার নানা দিক তুলে ধরেন।
বাসস : আপনি ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়ক ছিলেন। সেখানে ছাত্রদলসহ অন্যান্য সংগঠন ছিল। ২০২৩ সালে এটি গঠন হয়। এর প্রেক্ষাপটটা শুনতে চাই।
রিচার্ড : ২০১৮ সালে যখন একটা ভোট ডাকাতির নির্বাচন হয় বা রাতের ভোট হয় তখনই বাংলাদেশে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে যে এই সরকারের অধীনে আর কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না এবং প্রত্যক্ষভাবে এখানে একটা ফ্যাসিবাদী শাসন বা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তারপরে ডাকসু নির্বাচন হলো; যে নির্বাচনটাও আসলে পরোক্ষভাবে একটা কলঙ্কিত নির্বাচন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ, দখলদারিত্ব বা সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম হয়। তার বিপরীতে আমরা সারা দেশব্যাপী এই ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সর্বদলীয় ছাত্রদের ঐক্য বিশেষ করে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা জরুরি বলে মনে করি। সেই আহ্বান নিয়েই ২০১৮ সালের পর থেকেই আমরা কাজ শুরু করি। প্রগতিশীল গণতন্ত্রকামী সংগঠন গুলোর সাথে আমরা দীর্ঘদিন ধরে এনিয়ে কথা বলতে থাকি। তাদের সাথে এক ধরনের সংগ্রামের ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা চালাতে থাকি। ছাত্রদলসহ অন্যান্য সংগঠনের সাথে আলাপ আলোচনায় বসতে থাকি।
বাসস : ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য কীভাবে তৈরি হলো?
রিচার্ড : ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের প্রধান ফোকাস ছিল যে, ফ্যাসিবাদ তো শুধু কোন একটা সরকার না বরং ফ্যাসিবাদ একটা ব্যবস্থা, একটা মতাদর্শ। ফলে আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়তে চাই এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাকে মোকাবিলা করে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক চিন্তা চেতনাকে লালন করে সমাজের ভেতরে পৌঁছাতে চাই তাদের এক হওয়াটা জরুরি ছিল। এই ধরনের সংগঠনগুলোকে একত্রিত করাই ফোকাসে ছিল। তার কারণ শিক্ষার্থীদের সাথে দীর্ঘদিনের অপমান অসম্মানের যে একটা ব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল তা মোটেও মানার মত ছিল না। এর থেকে বের হয়ে কীভাবে একটা মর্যাদাপূর্ণ জীবনের দিকে নিয়ে যাওয়া যায় সেটাই ছিল আমাদের লক্ষ্য এবং আমাদের নয় দফার ভিতরে সেটা স্পষ্টভাবে আমরা বলেছি। গেস্টরুম নির্যাতনসহ অন্যান্য নিপীড়নের জায়গাগুলোতে আমরা পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষাকে অঙ্গীকার হিসেবে ধারণ করে একটা কনভেনশনের মধ্যে দিয়ে প্ল্যাটফর্মটির আত্মপ্রকাশ ঘটাই।
বাসস : বিভিন্ন সময় আপনার নামে হামলা মামলা হয়েছে। এসব উপেক্ষা করে রাজপথে আছেন। আপনার কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশটি কেমন?
রিচার্ড : ছাত্র ফেডারেশন বৈষম্যহীন মানবিক শিক্ষাব্যবস্থা এবং সমাজব্যবস্থা নির্মাণের স্বপ্নকে ধারণ করেই কাজ করে। আমরা যারা এর সদস্য হয়েছি তারা এই স্বপ্নটা লালন করি। এই স্বপ্নটা নিয়ে আমরা আমাদের সংগ্রামকে এগিয়ে নিচ্ছি। সেই সংগ্রামের পথে নানা ধরনের বাধা ছিল, হামলা-মামলা ছিল, ভয় ভীতি ছিল। ফ্যাসিবাদের সময় আমরা চরম দমনপীড়ন ভয় ভীতি উপেক্ষা করেই শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রাজপথে ছিলাম।
৭ জানুয়ারি যখন একপেশে ডামি নির্বাচন হয়েছে তখনও আমরা রাজপথে ছিলাম।
ফ্যাসিস্ট সরকার ও শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা থেকে কখনোই হাল ছেড়ে দেইনি। শাসকের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে জীবন উৎসর্গ করার মানসিকতা নিয়েই আমরা লড়াই চালিয়ে গিয়েছি। যতদিন সত্যিকার অর্থে সবার জন্যে সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা না হবে,নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা না পাবে, প্রত্যেকের শিক্ষা-স্বাস্থ্য সহ মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন না হবে, মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মানের লড়াই জারি থাকবে।
বাসস : শিক্ষা সংস্কার নিয়ে আপনার ভাবনা কী?
রিচার্ড : গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সংগঠন জন্মলগ্ন থেকে বলে আসছে। বিগত শাসকের আমলে প্রশ্নপত্র ফাঁস, শিক্ষার মান কমে যাওয়া, শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে যখন এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয় যে শিক্ষা নিয়ে আসলে আন্দোলন করা কোনো ছাড়া উপায় নেই। বিগত শাসন আমলে তারা আসলে কোন গণতান্ত্রিক আন্দোলন বা দাবি দাওয়াকে কোনভাবে তোয়াক্কা করেনি। কারণ তারা একটা ভোটবিহীন সরকার ছিল। কিন্তু অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমরা ভিন্ন নতুন বাস্তবতা নতুন একটা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে হাজির হলাম। সরকারের কাছে আমরা জাতীয় ছাত্র কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছিলাম।
রিচার্ড বলেন, পাশাপাশি আমাদের একটা ফোকাস ছিল যে কীভাবে শিক্ষার মান বৃদ্ধি করা যায়। শিক্ষা পুনর্গঠনের কথা বলেছিলাম। কারণ সত্যিকার অর্থে আমরা যদি একটা রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে চাই, ৫৩ বছরের ভঙ্গুর রাষ্ট্রব্যবস্থাটাকে নতুন করে সাজাতে চাই তাহলে আমাদেরকে শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ গত শাসনামলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা। আমরা এই সরকারের আমলেও শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছি। ব্যাপক ক্যাম্পেনিং করেছি। আমরা বর্তমান শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পয়েন্ট বলেছি। যার এক নাম্বার হচ্ছে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এখানে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের পরে শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে আমরা দেখেছি তাদের প্রধান মনোযোগের জায়গা ছিল শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত। বাংলাদেশে এটা সম্ভব ছিল। আমরা সেই জায়গা থেকে একটা উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ শিক্ষাখাতে চেয়েছিলাম এবং সেই বরাদ্দের একটা বড় অংশ আমরা আমাদের শিক্ষা সংস্কার কর্মসূচিতে দেখিয়েছি। শিক্ষকদের বেতন নিয়ে কথা বলেছি।
দেখবেন সবাই বিসিএস এর দিকে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের লেস প্রায়োরিটি শিক্ষা ক্যাডার। এই প্রায়োরিটাকে বদলানোর জন্যই আমরা বলেছিলাম যে বিসিএস-এর যারা নবম গ্রেডের বেতন পান তাদের সমতুল্য বেতন আমাদের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষকদের জন্য দেওয়া উচিৎ। সেই অনুযায়ী আমাদের বেতন স্কেলকে সাজানো, স্বতন্ত্র স্কেল গঠন করা এবং আমাদের এর জন্য বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা উচিত। এছাড়াও আমরা বলেছিলাম প্রান্তিক এবং শহুরে জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সংকট বা বৈষম্য আছে, সেই বৈষম্য দূর করার জন্য এক ধরনের বৃত্তি চালু করা। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য একটা বৃত্তির ব্যবস্থা করা। ডিজিটালাইজেশনের সংকট, ল্যাবস ফ্যাসিলিটিস এসব সংস্কার করা দরকার।
আমাদের ১১ দফা শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাব রেডি করেছিলাম সেটা বিভিন্ন গুণীজন এবং শিক্ষাবিদের সাথে পরামর্শ করে। আমরা সেটা শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর প্রস্তাব করেছিলাম।
বাসস : বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনে জুলাইয়ের ভূমিকা আপনার কাছে জানতে চাই।
রিচার্ড : এক বছরে সংস্কৃতিতে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে তা নিয়ে বলাটা একটু মুশকিল। মানে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় হয়নি। আমি মনে করি এখনো আমরা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। জুলাই এখনো চলছে। কারণ জুলাইয়ের প্রাথমিক জায়গাটা ছিল শহীদ পরিবারের বা শহীদদের তালিকা করা, আহতদের পুনর্বাসন করা। এখনো আহতদের পুনর্বাসন হয়নি। ফলে জুলাই চলছে। একই সাথে জুলাইয়ের প্রাথমিক স্পিরিট ছিল ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিপরীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উত্তরণ। এখন পর্যন্ত আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উত্তরণ ঘটাতে পারিনি। ফলে আমরা এখনো আসলে জুলাইয়ের মধ্যেই আছি।
সেই জায়গা থেকে যাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই ছিল যেই শাসক শ্রেণীর বিরুদ্ধে, যেই শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে -সেই ব্যবস্থাটা এখনো বহাল আছে। হয়তো সেই অংশটা ক্ষমতায় নেই কিন্তু তাদের ছায়া আমাদের চারপাশ থেকে এখনো ঘিরে আছে। নানা ধরনের ষড়যন্ত্র এখনো বাংলাদেশের রাজনীতির ভিতরে ক্রিয়াশীল আছে। সেটাকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে এবং মোকাবেলা করার জন্য যে জাতীয় ঐক্যটা দরকার ছিল যেই ঐক্যটা জুলাইয়ে তৈরি হয়েছিল, যেটা নানা ধরনের মতভেদ বিভাজনকে উপেক্ষা করে একটা নির্দিষ্ট শক্তির বিরুদ্ধে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলেছিল, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহলের সংকীর্ণ গোষ্ঠী স্বার্থের কারণে আজকে ঐক্যে বিভক্তির জন্ম দিয়েছে। ঐক্য ভেঙে গেছে এবং আজকে তার কারণে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ষড়যন্ত্রকারীরা আবারো নানাভাবে এখানে ডালপালা মেলেছে। আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণকে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে; এটার যাত্রাকে চ্যালেঞ্জ করছে। যার নানা ধরনের ঘটনা আমরা চারপাশে সাম্প্রতিক সময়েও দেখেছি। সেই জায়গা থেকে এটা একটা পর্ব।
আর এসবের বাইরে আমি বলব যে জনগণের রাজনৈতিক চৈতন্যে পরিবর্তন হয়েছে। যে জনগণ দীর্ঘদিন ধরে হতাশ ছিল। বিশেষ করে ১৪, ১৮ এবং ২৪-এর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের মধ্যে এক ধরনের চিন্তাই ছিল যে শেখ হাসিনা হয়তো ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থেকে যাবে। সেই জনগণ বিশেষ করে ছাত্র সমাজের তরুণরা যখন আবার একটা জাগরণের ঘটনা ঘটায় বিশেষত আবু সাঈদের শহীদের কারণে সেই জাগরণ কিন্তু এখনো ছাত্র সমাজের রক্তের মধ্যে আছে। তারা এত সহজে হার মানার পাত্র না।
এইটা হচ্ছে জুলাই স্পিরিট। এখন তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, খারাপকে খারাপ বলে, অন্যায়কে অন্যায় বলে। প্রতিবাদ প্রতিরোধের যে স্পিরিট সেই স্পিরিটের মধ্যে তারা এখনো আছে। কিন্তু প্রতিরোধের শক্তিকে যেভাবে রাজনৈতিক ঐক্যে রূপ দেওয়া দরকার, সেইটা রাজনৈতিক শক্তিপক্ষগুলো যারা মুখে বলে জুলাই স্পিরিটকে ধারণ করে তাদের কিছু ব্যর্থতার কারণে আজকে এই প্রতিরোধের বিশাল তারুণ্যের শক্তি দুর্বল হয়েছে। আজকে তারণ্যের শক্তিকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা উত্তরণে জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন, মুক্তিযুদ্ধের স্পিরিট বাস্তবায়ন, সাম্য মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। এই লড়াইটা আসলে দীর্ঘকালের লড়াই এবং এই লড়াইটা লড়বে এমন তরুণ এই জুলাইয়ের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠবে এবং আগামীতে একটা শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন যদি সংঘটিত হয় আমি বিশ্বাস করি যে এই লড়াই বিজয়ী হবে।
বাসস : ছাত্র রাজনীতিতে বিরাজনীতিকরণ নিয়ে আপনি সবসময় কথা বলে আসছেন। এখন কেমন পরিস্থিতি লক্ষ্য করছেন?
রিচার্ড : বিরাজনীতির এই প্রচেষ্টা ৯০ দশক থেকে এখানে শুরু হয়েছে এবং সেটার মোকাবেলাও এখানে বিভিন্নভাবে হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিরাজনীতি হয়েছে গত ১৫-১৬ বছরে। কারণ এখানে যখন একটা একচেটিয়া রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল শিক্ষার্থীরা যখন দেখছে যে ক্যাম্পাসে আসলে ভয়ের রাজত্ব চলছে তখন সেখানে আসলে প্রতিরোধ এবং প্রতিবাদের যে রাজনীতি, সত্যিকারের যে গণমানুষের রাজনীতি সেই রাজনীতিটা আসলে সাইড হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা দেখেছে এখানে সন্ত্রাস দখলদারিত্বের রাজনীতিটাই প্রতিষ্ঠিত ছিল; ফলে স্বাভাবিকভাবেই সেটার প্রতি শিক্ষার্থীদের একটা বিরাগ ছিল।
তিনি বলেন, জুলাই রাজনীতিরও নবজাগরণ ঘটিয়েছে। রাজনীতিমুখী করেছে শিক্ষার্থীদেরকে। সেটা আমার আশার দিক। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এই যে রাজনৈতিক প্রবণতা, যেটা একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা ছিল, এটাকে ইতিবাচক রাজনৈতিক উত্তরণের দিকে নিয়ে যাওয়ার যে একটা চেষ্টা যেটা সবগুলো রাজনৈতিক পক্ষের দিক থেকে এবং শক্তির দিক থেকে ঘটানো উচিত ছিল। সেটা কিছু কিছু শক্তির সংকীর্ণতার কারণে ঘটেনি। বিশেষ করে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আলাপ মানে ছাত্র রাজনীতির রূপরেখাটা কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা দরকার ছিল।
ঠিক তখনই আমরা দেখছি একদল গুপ্ত সংগঠন যারা তাদেরই বিভিন্ন লোকজনকে সাধারণ শিক্ষার্থীর পরিচয় দিয়ে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের প্রচারণা বা প্রোপাগান্ডা চালালো এবং এটাই আসলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করল, বিভেদ তৈরি করল এবং এর মধ্য দিয়ে আসলে আমরা যে কাঙ্ক্ষিত যাত্রা বা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ক্যাম্পাসের ভিতরে বিনির্মাণ করব সেটার দিকে যেতে বাধা দেয়। এখন পর্যন্ত সেই শক্তিগুলো এই ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তো তার বিপরীতেই আমরা ক্যাম্পাসের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতির জারি রাখার কথা বলেছি।
রিচার্ড বলেন, মাঝে মাঝে ছাত্র রাজনীতিতে লেজুড়বৃত্তির কথা ওঠে। আমি মনে করি, বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতিতে দুইটা ধারা আছে। একটা লেজুড়বৃত্তিক ধারা, আরেকটা স্বতন্ত্র স্বাধীন ধারা। যেটা স্বাধীন ধারার সেটা সমাজের ভিতরে এ্যাস্টাবলিশ না অর্থাৎ এটা ক্ষমতাবান না। যে ধারাগুলো ক্ষমতাবান তাকে কিভাবে মোকাবেলা করা যায় এটাই হচ্ছে আমাদের মধ্যে প্রধান এজেন্ডা সেই এজেন্ডাকে ধারণ করতে যেয়ে দেখা যায় যে স্বাধীন ধারাগুলোকেও নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে, ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে।
সেই জায়গা থেকে প্রথমত একে সেপারেট করার ব্যাপার আছে, মানে স্বাধীন ধারাগুলোকে কীভাবে জনপ্রিয় করা যায় সেটা আসলে আমাদের ছাত্র সমাজের কাছে প্রধান।
আমার আশাবাদ থাকবে তারা স্বাধীন ধারাগুলোর প্রতি তাদের ঝোঁক বাড়াবে আর এর বাইরে পেশিশক্তিনির্ভর যে ছাত্র রাজনীতি, যেটা এখানকার দীর্ঘদিনের সংস্কৃতি এটাকে মোকাবেলা করার জন্য ছাত্রদের প্রতিবাদ করা ছাড়া কোন বিকল্প নাই। তার জন্যই ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন যতদিন ছিল ততদিন পর্যন্ত পেশিশক্তি থাকলেও এখানে অধিকারবাদী সংগঠনগুলোও যথেষ্ট শক্তিশালী ভূমিকায় ছিল। তাদের মধ্যে এক ধরনের শক্তি ভারসাম্য ছিল। এখানে যদি ছাত্র সংসদ নির্বাচনটা ধারাবাহিকভাবে না হয় তাহলে এখানে রাতারাতি কালচারাল পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নাই।
বাসস : কোটা সংস্কার আন্দোলনে আপনি কখন, কীভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন?
রিচার্ড : একদম প্রথম যেদিন পরিপত্র দেয়া হয় আমি সেদিনই যুক্ত হই এবং ওইদিন আমি ঢাকার বাইরে ছিলাম ফলে আন্দোলনে আসতে পারিনি। তার পরের দিন থেকেই আমি সকল প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত হই। আমি যেহেতু ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ছিলাম, ফলে এখানে আমার ব্যক্তিগত যুক্ততার চেয়ে বড় প্রশ্ন আমার সংগঠনের নেতাকর্মীরা কীভাবে যুক্ত হবে! আমি প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের প্রত্যেককে নির্দেশনা দিই এবং বিশেষ করে এখানে আমাদের যারা নেতৃত্বে ছিলেন আরমানুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেক্রেটারি উমামা ফাতেমা, সাকিব রনি, সীমা উনারা প্রথমদিন থেকেই আন্দোলনে যুক্ত হয়।
আমি ব্যক্তিগতভাবে অংশগ্রহণ করি প্রত্যেকটি প্রোগ্রামেই। একদম জুলাইয়ের প্রথমদিন থেকে বলা যায়। আন্দোলনে ডোনেশন দেই কারণ ডোনেশনের মধ্যে দিয়েই এখানে কর্মসূচিগুলো হচ্ছিল। ফলে আমি নিজে ডোনেশন দেই এবং এর বাইরেও বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে যখন রংপুরে আন্দোলনটা সংগঠিত হচ্ছিল, রংপুরের শাহরিয়ার সোহাগের সমন্বয়ক ছিলেন, তিনি আমার সাথে যোগাযোগ করেন সেখানে ফান্ডিংয়ের জন্য কিছু অর্থ পাঠাই। এছাড়াও আমাদের বরিশালে, নারায়ণগঞ্জে, টাঙ্গাইলে প্রত্যেকটা অঞ্চলের সাথে আমার নিয়মিত কানেকশন ছিল।
আর এর বাইরে সরাসরি আমি মাঠে প্রত্যেকটি দিনই ছিলাম। ব্লকেড থেকে শুরু করে সবগুলোতেই। বিশেষ করে ১৮ তারিখে আমি ধানমন্ডিতে ছিলাম সেখানে শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে ছিলাম; ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মেঘমল্লার বসু’রা ওখানে ছিল। আমি দুইজনকে রেসকিউ করি, তারপরে আমি সেখান থেকে তাদেরকে সাইডে পাঠিয়ে আবার শাহবাগে এসে যুক্ত হই।
১৮ তারিখ বিকেল বেলায় আমাদের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি সৈকত আরিফ ছাত্রলীগের হামলায় মাথায় আঘাত পান। এরপরে সরাসরি মাঠে যেয়ে আন্দোলন করা সম্ভব হয়নি।
সারাদেশের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করা তখন গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত ছিলেন। ১৯ তারিখে গণতন্ত্র মঞ্চের উপরে হামলা হয় সেখানে জুনায়েদ সাকি কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি হন, সেদিন আমিও কমিউনিটি হাসপাতালে ছিলাম। আমার সামনেই সেখানে সাকি ভাইয়ের উপরে ছাত্রলীগ যুবলীগের হামলা করে।
বাসস : আপনি তো পরিচিত রাজনৈতিক মুখ ছিলেন। আন্দোলনের শুরুতে নেতৃত্ব নিয়ে কী ভাবছিলেন...
রিচার্ড : প্রথমত আমরা বুঝতে পারছিলাম যে এখানে রাজনৈতিক ফেস যারা আছেন তারা যদি সামনের সারিতে যায় তাহলে এটাকে রাজনৈতিক ট্যাগ দিতে পারে। আমরা যারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের লিডারশিপে ছিলাম তারা যদি সামনে আসার চেষ্টা করি তাহলে এটাকে রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনটাকে পলিটিসাইজ করে ব্যাপক নিপীড়নের একটা ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা হবে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এক ধরনের দ্বিধা কাজ করতে পারে ফলে আমরা স্ট্র্যাটেজি নেই যে আমরা যারা ছাত্র সংগঠনের নেতা আছি তারা যেন সামনে না যান।
তুলনামূলকভাবে আমাদের যারা জুনিয়র লিডারশিপ আছে, তাদেরকে আমরা সামনে রাখব। আমাদের যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব উমামা এবং আরমানকে আমরা আসলে সামনে রেখে আন্দোলনের পেছন থেকে আমাদের পুরো জনশক্তি এঙ্গেজ করি।
বাসস : আপনি তো নজরদারির মধ্যে ছিলেন ...
রিচার্ড : আমি নজরদারির মধ্যে ছিলাম; বিশেষ বিশেষ সময়গুলোতে বাড়িঘরে থাকতে পারতাম না। বিভিন্ন জনের বাসায় ছিলাম। আমাদের নির্বাহী সমন্বয়কারীর বাসায় ছিলাম, কখনো আমার বন্ধুর বাসায় ছিলাম। কিন্তু এরপরও আমরা প্রতিদিন অফিসে আসছি, প্রায় প্রতিদিনই শাহবাগে আসছি। যতদিন ক্যাম্পাস খোলা ছিল ক্যাম্পাসে আসছি। আন্দোলনের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য সবই করেছি। যোগাযোগ চালিয়ে গেছি।
বাসস : জুলাইয়ের মধ্যবর্তী সময়ে আন্দোলনের অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো?
রিচার্ড : ১৫, ১৬ জুলাই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ হামলা করলো, ওইদিনগেুলোতে আমি উপস্থিত ছিলাম। ১৫ তারিখে মিছিলটা কোন দিকে যাবে, না যাবে এগুলো নিয়ে একটা ইনডিসিপ্লিন ছিল, পরে ছাত্রলীগ হামলা করে বসলো। আমি ওখান থেকেই লাইভ করা শুরু করলাম এবং যারা আমার সাথে ছিল তাদেরকে আমি দিকনির্দেশনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, ভাঙচুরের জায়গাগুলো থামানোর চেষ্টা করেছি। বলেছি যে এটা যেহেতু আমাদের সম্পদ এবং ওই সময় তো আমরা জানি না ভবিষ্যতে কি হবে ফলে এই ভাঙচুরের দিকে না যেয়ে এটাকে বরঞ্চ শান্তিপূর্ণভাবে ছাত্রলীগকে প্রতিহত করা উচিৎ। সেদিন একটা সময় আমরা ব্যাকফুটে চলে আসি এবং বিভিন্ন জন বিভিন্ন দিকে চলে গেল। কিছু শিক্ষার্থীসহ ভিসি চত্বরের সামনে আসলাম। আমি বলতেছিলাম যে ওদেরকে আবার একটা ধাওয়া দিতে। কারণ বেশি কাছে আসতে দিলেই ওরা আবার হামলা করবে। এই স্মৃতিটা একটা উল্লেখযোগ্য।
বাসস : কারফিউ যখন চলছিল তখন আন্দোলন সংগঠিত করতেন কিভাবে?
রিচার্ড : কারফিউয়ের সময় আমি ব্যক্তিগতভাবে তখন কোন মিছিলে যুক্ত হইনি। সাকি ভাই আহত হয়েছেন। আমাদের সেক্রেটারি আহত অবস্থায় আছেন, ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক সেও আহত অবস্থায় আছেন- এরকম একটা বাস্তবতায় বিভিন্ন ধরনের মামলা হচ্ছে তখন আমি বিভিন্ন অঞ্চলগুলোতে যোগাযোগ করে আন্দোলন চালিয়ে নিতে বলি। তখন মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি হতো, শিল্পীরা প্রতিবাদী গান শুরু করে। আমরা সেই ধরনের কর্মসূচি পালন করছিলাম। শিক্ষক নেটওয়ার্ক মাঠে নামতেছে। এসব চলছিল। আমরা চাচ্ছিলাম কোনোভাবে যেন আন্দোলনটি বন্ধ হয়ে না যায়। আন্দোলনকে ধারাবাহিক রাখাই তখন চ্যালেঞ্জ ছিল। তাই আমি সবার সাথে যোগাযোগ করছিলাম। আন্দোলনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার চেষ্টা করতে থাকলাম।
কোনোভাবেই যাতে আন্দোলনটা কোন সমন্বয়কের কিংবা কোন ধরনের সরকারের প্রোপাগান্ডায় কিংবা কন্সপিরেসিতে দমে না যায় এবং সেজন্য আমি মনে করি যে এটা রাজনৈতিক দল, মত এবং সব পথের এটা একটা সার্থকতা তারা তাদের সকল শক্তি নিয়ে এই আন্দোলনটাতে ছিলেন এবং যখন কিছু সমন্বয়ক আন্দোলন থেকে সরে আসলেন ঘোষণা দিয়ে যে আমরা এক দফা থেকে সরে আসলাম তখনও কিন্তু এই বিশাল জনগোষ্ঠী যাত্রাবাড়িতে ছিল। আন্দোলনে ছিল।
বাসস : জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবনা কেমন?
রিচার্ড : জুলাইয়ের এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে ফলে জুলাইয়ের ইমিডিয়েট আকাঙ্ক্ষা আর এখনকার আকাঙ্ক্ষা মধ্যে ভিন্নতা আছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরের ইমিডিয়েট আকাঙ্ক্ষায় মনে হয়েছিল যে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি হাজারো প্রাণের বিনিময়ে এবার এক সত্যিকার একটা পরিবর্তন আসবে এবং এই পরিবর্তন তরুণদের হাত ধরেই হবে; যারা আমরা নেতৃত্ব দিয়েছি তাদের হাত ধরেই হবে। এখানে জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে যেহেতু অভ্যুত্থানটা এসেছে সবাই মিলে আমরা পরিবর্তনটাও করতে চেয়েছিলাম।
সেজন্য আমরা আমাদের প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। কিন্তু এই এক বছরে আমরা দেখলাম যে এখানে ঐক্য রক্ষার জন্য জাতীয় পুনর্গঠনের স্বার্থে ঐক্য প্রচেষ্টার ঘাটছি আছে। যার ফলে এখানে গোষ্ঠী স্বার্থ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি এতো প্রাণ বৃথা যেতে পারেনা। জুলাই যে স্লোগান তুলেছিল দেশটা কারও বাপের না, এই স্লোগানই আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি।
রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক করে তার ওপর জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এগিয়ে নিতে আমরা ওয়াদাবদ্ধ। শহীদের আত্মত্যাগের উপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে আর পিছনে নেবার কোন সুযোগ নেই। আমাদের দেশকে আমরা সামনে এগিয়ে নেব। যে ঐতিহাসিক ব্যর্থতার কারণে দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে জনগণের নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলেই আমরা সত্যিকার অর্থে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র নির্মাণের যাত্রাকে এগিয়ে নেব।