শিরোনাম
\ এ.এস.এম.নাসিম \
নোয়াখালী, ২৮ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জুলাইয়ের শেষ দিকে সরকার এবং আন্দোলনকারী উভয়ই মারমুখী অবস্থান নেয়। একদিকে ছিল সরকারের দমন-পীড়ন। অন্যদিকে ছাত্র-জনতার অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন।
চব্বিশের ২৮ জুলাই নোয়াখালীতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল গণগ্রেপ্তার আতঙ্ক। তবে তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত ছিল।
নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনির নেতৃত্বে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের বাসা, অফিস ও শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ও মেসে চলে চিরুনি অভিযান। যে কোনো মূল্যে আন্দোলনকে বন্ধ করার জন্য স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের দেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুলিশ মাঠে তৎপর ছিল।
তখনকার কয়েকটি গণমাধ্যমে উঠে আসে সেই বিভীষিকাময় গণগ্রেফতারের চিত্র। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা তাদের কর্মসূচি থেকে গণগ্রেপ্তারের বিষয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমের কাছে নানাবিধ অভিযোগ তুলে ধরেন।
এর আগের এক সপ্তাহে নোয়াখালীর নয় উপজেলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ হাসিনা বিরোধী সকল দলের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা না থাকলেও গ্রেফতার থেকে রেহাই পায়নি অনেকেই। গ্রেপ্তার এড়াতে আন্দোলনকারীরা নিজের বাসা ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান নেয়। সে সময় নোয়াখালীতে শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ছাত্রদলের নোয়াখালী জেলার তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মো. নোমানকে।
আবু হাসান মো. নোমান জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি স্মরণ করে বাসসকে বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকার ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে নিজেকে টিকিয়ে রাখার শেষ চেষ্টার অংশ হিসেবে দেশব্যাপী বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার করে। তিনি ভেবেছিলেন গণগ্রেপ্তার করলে প্রতিবাদ বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু তিনি জানতেন না যে, যত গ্রেফতার করা হচ্ছিল, তত আমাদের মধ্যে প্রতিবাদের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দাউ দাউ করে জ্বলে উঠছিল।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালীর সমন্বয়ক নাহিদা সুলতানা ইতু বাসসকে বলেন, হাসিনা সরকার যখন দেখেছে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে তাদের পতন অনেকটাই সুনিশ্চিত ঠিক সে সময় পুলিশকে গণগ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু গণগ্রেপ্তার করেও শেষ রেহাই পায়নি। ছাত্র জনতার বিপ্লবের মুখেই তাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে।