শিরোনাম
ঢাকা, ৮ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির একটি হাই-প্রোফাইল মামলা বাতিল করা হয়েছে। কারণ, যুক্তরাজ্য সরকার বেইজিংকে নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ব্রিটেনের প্রধান আইনজীবী একথা বলেছেন।
লন্ডন থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
গত মাসে একজন সাবেক সংসদীয় গবেষকসহ দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ করার পর আইন প্রণেতারা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
কিন্তু পাবলিক প্রসিকিউশনের পরিচালক স্টিফেন পার্কিনসন মঙ্গলবার সংসদীয় কমিটিগুলোকে লেখা এক চিঠিতে বলেছেন, বিচার এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহে প্রসিকিউটররা ‘অনেক মাস ধরে’ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে তা পাওয়া যায়নি।
২০২৩ সালে ৩০ বছর বয়সী ক্রিস্টোফার ক্যাশ এবং ৩৩ বছর বয়সী ক্রিস্টোফার বেরিকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা এমন তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন যা ‘প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শত্রুর জন্য কার্যকর’ হতে পারে।
এই গ্রেপ্তারের ফলে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল কারণ, ক্যাশ একজন সংসদীয় গবেষক হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং জ্যেষ্ঠ রক্ষণশীল আইন প্রণেতাদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা গেছে।
যুক্তরাজ্যের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে মামলাটি প্রমাণ করার জন্য প্রসিকিউটরদের দেখাতে হয়েছিল যে, আসামিরা ‘শত্রু - এমন একটি দেশ যা যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
কিন্তু ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের সবচেয়ে সিনিয়র পাবলিক প্রসিকিউটর পার্কিনসন বলেছেন, তাদের পর্যাপ্ত প্রমাণ দেওয়া হয়নি যে চীন ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ’ ছিল।
পার্কিনসন বলেছেন, ‘এই প্রমাণ সংগ্রহের জন্য অনেক মাস ধরে প্রচেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু আরো সাক্ষীর বিবৃতি প্রদান করা সত্ত্বেও এরমধ্যে কেউই বলেনি যে, অপরাধের সময় চীন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল’।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, যেহেতু কথিত অপরাধটি পূর্ববর্তী রক্ষণশীল সরকারের অধীনে সংঘটিত হয়েছিল, তাই চীনের নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে প্রসিকিউশনকে পূর্ববর্তী প্রশাসনের নীতির কথা উল্লেখ করতে হবে। অথচ তিনি নিজেই একজন প্রাক্তন ডিপিপি।
‘দ্য টাইমস’ সংবাদপত্র জানিয়েছে, স্টারমার বলেছেন, ‘একজন প্রসিকিউটর হিসেবে আমি জানি যে, আপনি যদি এই ধরনের মামলা চালাতে চান তাহলে অপরাধটি সংঘটিত হওয়ার সময় পরিস্থিতি কী ছিল তা গুরুত্বপূর্ণ’।
এই সপ্তাহের শুরুতে একজন সরকারি মুখপাত্র বলেছেন, ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে মামলা না চালানোর সিদ্ধান্ত ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস দ্বারা নেওয়া হয়েছিল, যা সরকারের থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন।’
স্টারমারের সরকার ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বেইজিংয়ের সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চেষ্টা করেছে। এরআগের পূর্ববর্তী টোরি সরকারের অধীনে ঐতিহাসিক সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছিল। অথচ তখন সিনিয়র মন্ত্রীরা চীন সফর করছেন।