বাসস
  ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:২৪

সুদানের এল-ফাশারে বাজারে হামলায় ১৫ জন নিহত

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সুদানের অবরুদ্ধ শহর এল-ফাশারের একটি বাজারে ড্রোন হামলায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় হাসপাতালের একজন চিকিৎসা কর্মী বুধবার এএফপি’কে একথা জানিয়েছেন। 

পোর্ট সুদান থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের হামলায় ‘১৫জন নাগরিক নিহত এবং আহত হয়েছেন ১২ জন। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর’। 

স্থানীয় প্রতিরোধ কমিটি, যারা সুদান সংঘাতে সাহায্য এবং নৃশংসতার নথিপত্র সংগ্রহ করে তারা এই হামলাকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে যাতে মোট ২৭ জন নিহত বা আহত হয়েছেন এবং আধা-সামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) কে এই হামলা চালানোর জন্য দায়ী করেছে।

শহরে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় মার্কিন আফ্রিকা দূত মাসাদ বোলোস বুধবার বলেছেন, তিনি আশাবাদী যে, মানবিক সাহায্য শীঘ্রই পুনরায় প্রবেশ করতে সক্ষম হবে।
তিনি বলেছেন, ‘আশা করি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আমরা এই অতি প্রয়োজনীয় সাহায্যের প্রবাহ দেখতে পাব’।
আরএসএফ বর্তমানে এল-ফাশার দখলের চেষ্টায় সবচেয়ে ভয়াবহ আক্রমণ চালাচ্ছে। এল ফাশার দখলের জন্য তারা গত বছরের মে মাস থেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।

বোলোস আরো বলেছেন, ‘এই ক্ষেত্রে আমরা আরএসএফ-এর সাথে কথা বলছি এবং এই মানবিক সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার একটি উপায় নিয়ে আমরা একমত হয়েছি। তাই আমরা যখন কথা বলছি তখন এটি বাস্তবে রূপ নিচ্ছে’।

২০২৩ সালের এপ্রিলে আরএসএফ এবং নিয়মিত সেনাবাহিনীর মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ লোককে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।

- আটকা পড়া বেসামরিক নাগরিক -

আরএসএফের বোমাবর্ষণে যুদ্ধক্ষেত্র এল-ফাশার শহর ধ্বংস হয়ে গেছে। আরএসএফের যোদ্ধারা শহরের চারপাশে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের শিবির দখল করে নিয়েছে।

জাতিসংঘের আনুমানিক হিসেব মতে, শহরটিতে আটকা পড়া ২,৬০,০০০ বেসামরিক নাগরিকের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু। এসব শিশুরা প্রায় সকল বহিরাগত সাহায্য থেকে বঞ্চিত।

এদিকে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবার শহরের একটি মসজিদে আরএসএফের ড্রোন হামলায় কমপক্ষে ৭৫ জন নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ১১ জন ছয় থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশু।

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে চিকিৎসক এএফপি’কে বলেছেন, এল-ফাশার হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মীদের প্রায় সমস্ত সরবরাহ শেষ হয়ে গেছে। আহতদের ‘ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ 
করার জন্য গজের পরিবর্তে মশারির টুকরো ব্যবহার করতে বাধ্য করা হচ্ছে।’

তিনি বলেছেন, ‘সবচেয়ে বেদনাদায়ক বিষয় হলো আহতদের যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা এবং তাদের চিকিৎসার জন্য আমাদের কাছে ওষুধ নেই’।

এল-ফাশার হল দারফুরের শেষ শহর যা এখনও সেনাবাহিনীর হাতে রয়েছে এবং এর দখলের ফলে আরএসএফ পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল অঞ্চলের সমস্ত জনসংখ্যা কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ পাবে।

জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা আধাসামরিক বাহিনী এবং তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে অ-আরব জাতিগত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ এনেছে।

তাদের মধ্যে জাঘাওয়াও রয়েছে, যারা এল-ফাশারে সেনাবাহিনীর সাথে লড়াইরত যৌথ বাহিনী জোটের বেশিরভাগ যোদ্ধা।