বাসস
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৫১

জনস্বার্থভিত্তিক মিডিয়ার ‘ধস’ নিয়ে শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের সতর্কবার্তা

ঢাকা, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): নোবেলজয়ী জোসেফ স্টিগলিৎস ও দারন এসেমোগ্লুসহ শীর্ষ অর্থনীতিবিদরা সোমবার জনস্বার্থভিত্তিক মিডিয়া খাতের ‘ধস’ নিয়ে সতর্কবাণি উচ্চারণ করেছেন এবং গুণগত সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে সরকারগুলোকে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন অর্থনীতিবিদের এই দলটি ‘ফোরাম অন ইনফরমেশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’র মাধ্যমে এক যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে। সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষাকারী সংস্থা রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস এবং ফরাসি সরকারের উদ্যোগে এ ফোরাম গঠিত হয়।

প্যারিস  থেকে এএফপি জানায়, চাকরি হারানো, আয়ের পতন এবং সাংবাদিকতায় এআই-এর হুমকি থেকে শুরু করে নানা সমস্যার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে অর্থনীতিবিদরা সরকারকে মিডিয়া ইকোসিস্টেমে বিনিয়োগ ও নীতি প্রণয়নে আরও বড় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

তারা লিখেছেন, ‘বিশ্বের সরকারগুলো এআই স্বপ্নকে তাড়া করছে, এই প্রযুক্তিগুলো অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনবে বলে আশা করছে। অথচ তারা যথেষ্ট বিনিয়োগ করছে না এমন এক মৌলিক সম্পদে, যা আমাদের ২১শ শতকের অর্থনীতির ভিত্তি- স্বাধীন ও যাচাইযোগ্য তথ্য।’

ইন্টারনেট আসার পর থেকেই সংবাদ সংগ্রহের জন্য বিজ্ঞাপন বিক্রির ওপর নির্ভরশীল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর প্রচলিত ব্যবসায়িক মডেল প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।

মেটা ও গুগলের মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো অনলাইন বিজ্ঞাপন রাজস্বের বড় অংশ দখল করেছে, অন্যদিকে চ্যাটজিপিটি বা গুগলের জেমিনির মতো নতুন এআই চ্যাটবট তথ্যের জন্য সরাসরি মিডিয়া কোম্পানির ওয়েবসাইটে মানুষের প্রবেশ নাটকীয়ভাবে কমিয়ে দিয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলেন, ‘জনস্বার্থ মিডিয়া যে তথ্যসেবা প্রদান করে, তা এই কোম্পানিগুলো নিজেদের মুনাফার জন্য দখল করে নিচ্ছে।’

তারা উল্লেখ করেন, সমাজকে নির্ভরযোগ্য তথ্যের সামাজিক ও অর্থনৈতিক মূল্য নতুনভাবে বিবেচনা করতে হবে। 

এর ফলে সরকারগুলোকে জনস্বার্থ মিডিয়াকে ভর্তুকি দেওয়া এবং তাদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন করা উচিত।

অর্থনীতিবিদরা উপসংহারে বলেন, সরকারি পদক্ষেপ ছাড়া ‘আমরা এমন এক পথে এগিয়ে যাচ্ছি যেখানে জনস্বার্থ সাংবাদিকতা ধ্বসে পড়বে, যা আমাদের অর্থনীতি, সমাজ ও গণতন্ত্রের জন্য বিরাট পরিণতি ডেকে আনবে।’