শিরোনাম
ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর আক্রমণ থেকে দেশটির বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য নাইজার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
দেশটির সাহেল প্রদেশের মারাত্মক আক্রমণ থেকে নাগরিকদের ‘রক্ষা করার জন্য আরো কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে জানায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি।
আবিজা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
গত ২০২৩ সালের জুলাই মাসে অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতায় আসা জেনারেল আবদুরাহমানে তিয়ানির নেতৃত্বে একটি সামরিক জান্তা নাইজার শাসন করছে।
দেশটি সর্বত্র সাধারণ মানুষ মারাত্মক জিহাদি হামলার মুখোমুখি হচ্ছে । পূর্বে চাদ হ্রদের কাছে অবস্থিত বোকো হারাম, পশ্চিম তিলাবেরি অঞ্চলে আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেট গ্রুপের সাথে যুক্ত গোষ্ঠীগুলো এই অঞ্চলে জঙ্গি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে, বুরকিনা ফাসো ও মালির সীমান্তবর্তী নাইজারের পশ্চিমাঞ্চল জিহাদি সহিংসতার ফাঁদে পড়েছে।
গত মার্চ থেকে রেকর্ড করা পাঁচটি হামলায় ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠী ১২৭ জনেরও বেশি গ্রামবাসী ও একটি মসজিদের মুসুল্লিদের নির্বিচারে হত্যা করেছে।
২১শে জুন মান্দার একটি গ্রামের মসজিদে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। যেখানে জিহাদিরা নামাজরত মুসুল্লিদের ওপর গুলি চালিয়ে ৭০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে।
৭৭ বছর বয়সী এক বাসিন্দা এইচআরডব্লিউকে বলেন, ‘সর্বত্র মৃতদেহ ছিল, একটির ওপরে আরেকটি।’
তিনি এই হামলায় তার তিন ছেলেকে হারিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাটি কর্তৃক রেকর্ড করা অন্যান্য তথ্যে শিশুদেরসহ গুলিবিদ্ধ লাশের কথা উল্লেখ রয়েছে।
কোনও গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা এই হত্যাযজ্ঞের জন্য ইসলামিক স্টেট জিহাদিদের দোষারোপ করেছেন।
আইএস-এর লাল ব্যান্ডযুক্ত পাগড়ি দেখে শনাক্ত করা যায় বলে এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে।
বাসিন্দারা আরো বলেছে, যে সম্প্রদায়গুলোর ওপর হামলা চালানো হয়েছে, তাদেরকে আইএস যোদ্ধারা হুমকি দিত।
তাদের বিরুদ্ধে নাইজেরিয়ান সেনাবাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগ করে আইএস।
সেনাবাহিনী গ্রামবাসীদের সুরক্ষার অনুরোধ উপেক্ষা করে আক্রমণের সতর্কতার প্রতি পর্যাপ্ত সাড়া দেয়নি।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, ‘আক্রমণের সতর্কতা সত্ত্বেও, সেনাবাহিনী বারবার গ্রামবাসীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।’
এইচআরডব্লিউ-এর সিনিয়র সাহেল গবেষক ইলারিয়া অ্যালেগ্রোজ্জি বলেন, ‘সশস্ত্র ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলো কর্তৃক সংঘটিত ‘নৃশংসতা’ থেকে টিলাবেরি অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষকে রক্ষা করার জন্য নাইজেরিয়ান কর্তৃপক্ষকে আরো বেশি কিছু করতে হবে।’
এনজিওটি জানিয়েছে, এই হামলাগুলো ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করেছে এবং স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধ’।
কর্তৃপক্ষকে ‘দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার’ আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।
সংঘাত পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠী অ্যাকলেডের সংগৃহীত এবং এইচআরডব্লিউ কর্তৃক উদ্ধৃত পরিসংখ্যান অনুসারে, দুই বছরেরও বেশি সময় আগে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে নাইজারে ইসলামিক স্টেটের যোদ্ধারা প্রায় এক হাজার ৬শ’ বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে।