বাসস
  ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৫৬

শিকাগোকে ‘যুদ্ধ বিভাগ’-এর হুমকি দিয়ে দমনপীড়ন বাড়ানোর ঘোষণা ট্রাম্পের

ঢাকা, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার শিকাগোতে তার নতুন নামকরণ করা ‘যুদ্ধ বিভাগ’ চালু করার হুমকি দিয়েছেন। 

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। 

ট্রাম্পের এই হুমকি ডেমোক্র্যাট-নেতৃত্বাধীন মার্কিন শহরগুলোতে সেনা মোতায়েনে তার এই প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে চলমান উত্তেজনাকে আরো উস্কে দিয়েছে।

এই পদক্ষেপটি ওয়াশিংটনে পরিচালিত এক অভিযানের প্রতিফলন, যেখানে ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করেছেন এবং ফেডারেল এজেন্টের সংখ্যা বাড়িয়েছেন। 

এর প্রতিবাদে শনিবার রাজধানীতে হাজারো মানুষ নতুন এক বিক্ষোভে অংশ নেয়।

ট্রাম্প শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশালে লিখেন, শিকাগো শিগগিরই জানতে পারবে, কেন এটিকে ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার বলা হয়।

শিকাগোর অঙ্গরাজ্য ইলিনয়ের ডেমোক্র্যাট গভর্নর জেবি প্রিটজকার ট্রাম্পের মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ লিখেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের একটি শহরের সঙ্গে যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছেন। এটি কোনো মজা নয়। এটি স্বাভাবিকও নয়।

তিনি আরও বলেন, ইলিনয় কোনো স্বৈরশাসকের ভয় দেখানোতে ভীত হবে না।

পোস্টটিতে ট্রাম্পের একটি স্পষ্টতই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছবি এবং উক্তিটি ছিল। 

উক্তিটি এই, ‘আমি সকালে নির্বাসনের গন্ধ পছন্দ করি, উভয়ই ১৯৭৯ সালের ভিয়েতনাম যুদ্ধের চলচ্চিত্র ‘অ্যাপোক্যালিপস নাউ’-এর উল্লেখ।

মার্কিন সেনারা যখন ভিয়েতনামের লক্ষ্যবস্তুতে অত্যন্ত দাহ্য এই অস্ত্র নিক্ষেপ করছিল,  তখন লেফটেন্যান্ট কর্নেল বিল কিলগোর চলচ্চিত্রে এ উক্তিটি করে বলেছিলেন তিনি ‘ন্যাপাম’-এর গন্ধ ভালোবাসেন, ‘নির্বাসন’ এর নয়। 

আগস্টের শেষের দিকে শিকাগোর বিরুদ্ধে হুমকির তীব্রতা বৃদ্ধি করেছেন ৭৯ বছর বয়সী রিপাবলিকান।

ট্রাম্প-বিরোধী বিক্ষোভকারীরা শনিবার ‘এই ফ্যাসিবাদী শাসন বন্ধ করুন’ এবং ‘ট্রাম্প নয়, সৈন্য নয়’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করে শিকাগোর রাস্তায় নেমে আসে।

বিক্ষোভের পথটি শিকাগোর ট্রাম্প টাওয়ারের পাশ দিয়েও অতিক্রম করে। ট্রাম্প টাওয়ারের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অশোভন অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন।

আগস্টে  ‘জরুরি অপরাধ অবস্থা’ ঘোষণা করে  ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড সৈন্য মোতায়েন করায় শনিবার ওয়াশিংটনে  হাজার হাজার লোকের একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরতলিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং অংশগ্রহণকারীরা ‘দখলদারিত্ব’ বন্ধ করার দাবি জানায়।

বিক্ষোভকারীরা মার্কিন জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভগুলোর পাশ দিয়ে উল্টো করে রাখা মার্কিন পতাকা নিয়ে হাঁটে, যা ঐতিহ্যগতভাবে জাতীয় সঙ্কটের প্রতীক।

ট্রাম্পের সেনা ও ফেডারেল এজেন্ট মোতায়েন জুনে লস অ্যাঞ্জেলেসে শুরু হয়েছিল, পরে ওয়াশিংটনে প্রসারিত হয়। এর ফলে আইনি চ্যালেঞ্জ ও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, সমালোচকরা এটিকে কর্তৃত্ববাদী শক্তি প্রদর্শন বলে অভিহিত করছেন।

লস অ্যাঞ্জেলেসের স্থানীয় কর্মকর্তারা আইসিই এজেন্টদের সহিংস কৌশল নিয়ে সরব হয়েছেন। প্রায়ই মুখোশ পরা, অচিহ্নিত গাড়ি ব্যবহার করা এবং কোনো কারণ বা পরোয়ানা ছাড়াই মানুষকে রাস্তায় তাড়া করে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শিকাগোর পাশাপাশি ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন বাল্টিমোর ও নিউ অরলিন্সেও এ ধরনের পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছেন।

শুক্রবার ট্রাম্প প্রতিরক্ষা দফতরের (ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স) নাম পরিবর্তন করে ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার’ করার নির্দেশে স্বাক্ষর করেন। 

তিনি বলেন, এটি বিশ্বের কাছে ‘জয়ের বার্তা’ পাঠাবে।

পেন্টাগন প্রধান পিট হেগসেথ এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ়ভাবে সহিংসতা প্রয়োগ করবে, বিন্দুমাত্র দুঃখ প্রকাশ ছাড়াই।