শিরোনাম
ঢাকা, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : লিসবনের জনপ্রিয় ফিউনিকুলার দুর্ঘটনায় নিহত ১৬ জনের মধ্যে ১১ জন বিদেশি নাগরিক রয়েছে বলে পর্তুগিজ কর্তৃপক্ষ শুক্রবার জানিয়েছে।
বুধবারের এই ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত বিদেশীদের মধ্যে রয়েছেন- তিন জন ব্রিটিশ, দুই দক্ষিণ কোরীয়, দুই কানাডীয়, একজন ফরাসি নারী, একজন সুইস, একজন মার্কিন ও একজন ইউক্রেনীয় নাগরিক।
এছাড়া এ দুর্ঘটনায় পাঁচ জন পর্তুগিজও নিহত হন।
ফিউনিকুলার হলো একটি ক্যাবল রেলওয়ে সিস্টেম, যা খাড়া ঢালে রেলওয়ে ট্র্যাকের সঙ্গে পয়েন্টগুলোকে সংযুক্ত করে।
লিসবন থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
আগের দিনের তথ্যে জার্মান নাগরিক নিহতদের মধ্যে রয়েছে বলে জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ শুক্রবার তা নাকচ করেছে।
তবে আহতদের মধ্যে তিন জার্মান রয়েছেন, যার মধ্যে একটি তিন বছরের শিশুও রয়েছে।
এ দুর্ঘটনায় মোট প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ১১ জন বিদেশি বলে জরুরি বিভাগ জানিয়েছে।
নিহত পর্তুগিজদের মধ্যে চার জন একটি সামাজিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছিলেন।
ফানিকুলার দ্বারা পরিসেবাপ্রাপ্ত খাড়া পার্শ্ববর্তী রাস্তার উপরেই ছিলো প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়।
শুক্রবার শহরের সাও রোকে গির্জায় নিহতদের স্মরণে এক প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তাদের বন্ধু, স্বজন ও সহকর্মীরা অংশ নেন।
শতবর্ষী গ্লোরিয়া ফিউনিকুলারটি একটি ভবনে ধাক্কা দেওয়ার পর যে ধ্বংসাবশেষ সৃষ্টি হয়েছিল, তা বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোরে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে পর্তুগিজ রাজধানী এখনও গভীর শোকে নিমজ্জিত।
দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনও অজানা। বিমান ও রেল দুর্ঘটনা তদন্তে দায়িত্বরত সংস্থা শুক্রবার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে ধারণা করা হলেও পরে তারা জানিয়েছে, ‘আজ (শুক্রবার) প্রতিবেদন প্রকাশ সম্ভব নয়’।
প্রতিবেদনটি শনিবার বিকেলে প্রকাশ করা হবে।
প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা নেলসন অলিভেইরা বৃহস্পতিবার জানান, ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
বিচার বিভাগীয় পুলিশ প্রধান লুইস নেভেস বলেন, তদন্তকারীরা সম্ভাব্য সব কারণ খতিয়ে দেখছেন। ‘কোনো কিছুকেই এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। আমাদের খোলা মনের থাকতে হবে’।
স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে ছিঁড়ে যাওয়া হাই-টেনশন তার অথবা রক্ষণাবেক্ষণ কাজের ত্রুটি।
পর্তুগালের প্রকৌশল নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাবেক প্রধান কার্লোস মাইনেরো আইরেস স্থানীয় এসআইসি টেলিভিশনকে বলেন, ‘হঠাৎ কেবল ছিঁড়ে যাওয়ার মতো কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছে এবং তদন্তের মূল ফোকাস হওয়া উচিত সেটিই।’
তবে গণপরিবহন সংস্থা ক্যারিসের প্রধান পেদ্রো বোগাস জানিয়েছেন, কোম্পানির রক্ষণাবেক্ষণ নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়েছে। ‘আমরা ধরে নিতে পারি না যে, সমস্যার উৎস কেবল (তার)। তদন্তই এর সত্যতা প্রমাণ করবে’।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দুর্ঘটনার দিন সকালে পরিচালিত নিয়মিত পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিকমতো কাজ করছে।
সাপ্তাহিক প্রকাশনা এক্সপ্রেসো জানিয়েছে, ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে লিসবনের তিনটি ফিউনিকুলারে যাত্রী সংখ্যা ৫৩ শতাংশ বেড়ে ২০২৪ সালে দাঁড়ায় ১৫ লাখে। তবে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় অপরিবর্তিত ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ভারসাম্য ব্যবস্থায় কেবল (তার) দিয়ে সংযুক্ত ফিউনিকুলারের দুটি হলুদ গাড়ির একটি দ্রুতগতিতে খাড়া ট্র্যাক বেয়ে নেমে আসে এবং একটি বাঁকে লাইনচ্যুত হয়ে একটি ভবনে ধাক্কা খায়।