বাসস
  ২১ জুলাই ২০২৫, ১৫:১৮

গাজার মধ্যাঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী

ঢাকা, ২১ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ইসরাইলি সেনাবাহিনী রোববার গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। 

এই এলাকায় হামাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বলে তারা সতর্ক করেছে।

জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থা ওসিএইচএ রোববার জানিয়েছে, গাজার দেইর এল-বালাহ এলাকার বাসিন্দা ও বাস্তুচ্যুতদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার জন্য ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর নির্দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে মানবিক প্রচেষ্টার জন্য ‘আরেকটি বিধ্বংসী আঘাত’ ডেকে আনছে।

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী কর্তৃক জারি করা গণ-স্থানচ্যুতি আদেশ গাজা উপত্যকা জুড়ে ইতোমধ্যেই ভঙ্গুর জীবনরেখার ওপর আরেকটি বিধ্বংসী আঘাত এনেছে। 

রোবাবার সকালে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী আসন্ন অভিযানের কারণে মধ্যাঞ্চলীয় গাজা অঞ্চলের বাসিন্দাদের অবিলম্বে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পুরো পরিবারসহ তাদের কিছু জিনিসপত্র নিয়ে দক্ষিণে চলে যেতে দেখা গেছে।

ওসিএইচএ জানিয়েছে, জাতিসংঘের কর্মীরা ওই অঞ্চলে ‘রয়েছেন’ এবং তাদের সমন্বয়কারীরা ‘প্রাসঙ্গিক পক্ষগুলোর সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে।

ওসিএইচএ সতর্ক করে বলেছে, এই স্থানগুলো সমস্ত বেসামরিক এলাকা। অবশ্যই বাস্তুচ্যুতির আদেশ নির্বিশেষে সুরক্ষিত রাখতে হবে। এই অঞ্চলে স্বাস্থ্য ক্লিনিক, পানির অবকাঠামো এবং ত্রাণ গুদামের যেকোনো ক্ষতি ‘জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ পরিণতি বয়ে আনবে।’

ওসিএইচএ-এর প্রাথমিক অনুমান অনুসারে, সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ জারির সময় ওই এলাকায় আনুমানিক ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার  মানুষের বসবাস ছিল।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, গাজার প্রায় সমস্ত  মানুষ তীব্র খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখিও হচ্ছে। 

ওসিএইচএ-এর মতে, সর্বশেষ আদেশের ফলে গাজার ৮৭ দশমিক ৮ শতাংশ এলাকা এখন বাস্তুচ্যুতির আদেশের অধীনে রয়েছে।

জাতিসংঘের সংস্থাটি জানিয়েছে, এই আদেশ গাজার অভ্যন্তরে জাতিসংঘ এবং আমাদের অংশীদারদের নিরাপদে এবং কার্যকরভাবে চলাচলের ক্ষমতা সীমিত করবে, যার ফলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনের সময় মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার বন্ধ হয়ে যাবে।

রোববার ইসরাইল দেশটির ওসিএইচএ অফিসের প্রধান জোনাথন হুইটলের আবাসিক অনুমতি প্রত্যাহার করেছে। যিনি বারবার গাজার মানবিক পরিস্থিতির নিন্দা করেছেন।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযানে ৫৮ হাজার ৮শ’ ৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক। 

জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে।

সরকারী পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এএফপি’র এক হিসাব অনুসারে, ২০২৩ সালে ইসরাইলের ওপর হামাসের আক্রমণের ফলে এই যুদ্ধ শুরু হয়, যেখানে ১ হাজার ২শ’ ১৯ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।