শিরোনাম
ঢাকা, ১ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত একটি পারমাণবিক অস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠী মঙ্গলবার হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে মার্কিন পারমাণবিক বোমা হামলায় নিহত ৩৮ হাজার শিশুকে নিয়ে একটি অনলাইন স্মারক চালু করেছে।
আগামী মাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকীকে সামনে রেখে অনলাইন স্মারক চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
টোকিও থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপন্স (আইসিএএন) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এতে শিশুদের জীবন, ‘তাদের যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু এবং বেঁচে থাকা পরিবারের সদস্যদের শোকের বিবরণসহ ৪০০ টিরও বেশি প্রোফাইল বা পরিচিতি রয়েছে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘তাদের হৃদয় বিদারক গল্প ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে, আমরা তাদের স্মৃতিকে সম্মান জানানো এবং পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণরূপে নির্মূলের জন্য পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করার আশা করি। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে এটি অত্যন্ত জরুরি কাজ।
১৯৪৫ সালের ৬ এবং ৯ আগস্ট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরে পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল। এটি ছিল যুদ্ধের ইতিহাসে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র ব্যবহার। এই হামলার কয়েকদিন পর জাপান আত্মসমর্পণ করে।
হিরোশিমায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ এবং নাগাসাকিতে প্রায় ৭৪ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল, যাদের মধ্যে অনেকেই বিস্ফোরণে বেঁচে গেলেও পরে তেজস্ক্রিয়তার সংস্পর্শে এসে মারা যায়।
হিরোশিমা এবং নাগাসাকির কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে আইসিএএন জানিয়েছে, প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার ভুক্তভোগীর মধ্যে প্রায় ৩৮ হাজার শিশু ছিল।
ওয়াশিংটন কখনও বোমা হামলার জন্য ক্ষমা চায়নি।
একটি ক্রেন আইকনে ক্লিক করে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মের দর্শকরা শিশুদের প্রোফাইল বা পরিচিতি পড়তে পারেন, যেখানে ৪২৬ জনের মধ্যে ১৩২ জন শিশুর ছবি রয়েছে, যাদের বয়স শিশু থেকে কিশোর পর্যন্ত।
তাদের মধ্যে তাদাকো তামেনোও রয়েছেন, যে হিরোশিমা পারমাণবিক বোমা হামলার দুই দিন পর ১৩ বছর বয়সে তার মায়ের কোলে যন্ত্রণায় মারা যান।
নাগাসাকি পারমাণবিক বোমা হামলায় মিজুমাচি পরিবারের ছয় শিশু নিহত হয়েছিল। মাত্র ১৪ বছর বয়সী সাচিকো নামে এক মেয়ে বেঁচে গেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ওয়াশিংটনের হামলাকে হিরোশিমা ও নাগাসাকি বোমার সাথে তুলনা করার পর এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প হেগে বলেন, ‘আসলে, যদি আপনি হিরোশিমা দেখেন, যদি আপনি নাগাসাকি দেখেন, তাহলে আপনি জানেন এটিও একটি যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়েছে’।
এর ফলে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং হিরোশিমায় একটি ছোট বিক্ষোভ দেখা দেয়। নগরীর পরিষদে পারমাণবিক বোমার ব্যবহারকে ন্যায্যতা দেওয়া মন্তব্যের নিন্দা করে একটি প্রস্তাব পাস হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, জাপানে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ কোহেন এ বছরের নাগাসাকিতে অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
গাজা সম্পর্কে শহরের মেয়রের মন্তব্যের পর কোহেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্রদূতদের সাথে গত বছরের অনুষ্ঠান বয়কট করেছিলেন।
এনএইচকে জানিয়েছে, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত নাগাসাকি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন, ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর রাশিয়ার প্রতিনিধিকে প্রথমবারের মতো আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
রাশিয়ান দূতাবাসের বরাত দিয়ে সম্প্রচারক জানিয়েছে, তবে, নিকোলে নোজদ্রেভ তিন দিন আগে ৬ আগস্ট ৮০তম বার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না।
আইসিএএন ২০১৭ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছে। গত বছর, সংগঠকটিকে হিরোশিমা এবং নাগাসাকির বেঁচে যাওয়াদের তৃণমূল আন্দোলন নিহন হিডানকি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।