শিরোনাম
ঢাকা, ১ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ইকুয়েডরের একটি আদালত সোমবার দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জর্জ গ্লাসকে দুর্নীতির দায়ে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
গত বছর মেক্সিকান দূতাবাসে এক নাটকীয় অভিযানের মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মেক্সিকান দূতাবাসে তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।
কুইটো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
৫৫ বছর বয়সী গ্লাস ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সাবেক সমাজতান্ত্রিক নেতা রাফায়েল কোরিয়ার অধীনে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি কোরেয়ার উত্তরসূরি লেনিন মোরেনোর অধীনেও সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৭ সালের পর সর্বশেষ এই সিদ্ধান্ত তাকে চতুর্থ বারের মতো দোষী সাব্যস্ত করেছে।
তিনি এখনও দুটি পূর্ববর্তী দুর্নীতির মামলায় তার আট বছরের কারাদণ্ড সম্পূর্ণ করেননি, যার মধ্যে একটি ব্রাজিলিয়ান নির্মাণকারী বৃহৎ প্রতিষ্ঠান ওডেব্রেখট থেকে লাখ লাখ ডলার ঘুষ নেওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত।
তার সাবেক বস কোরেয়াকে তার অনুপস্থিতিতে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে আট বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তিনি বেলজিয়ামে নিজের ইচ্ছায় নির্বাসনে বসবাস করছেন।
উভয় ব্যক্তিই তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গ্লাসের বিরুদ্ধে সর্বশেষ মামলাটি ২০১৬ সালে ইকুয়েডরের উপকূলীয় প্রদেশ মানাবি ও এসমেরালডাসে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর পরিচালিত পুনর্গঠন কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত।
ওই ঘটনায় প্রায় ৭০০ জন মারা গিয়েছিল।
২০১৬ সালে ইকুয়েডরের উপকূলীয় প্রদেশ মানাবি ও এসমেরালডাসে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর পরিচালিত পুনর্নির্মাণ কাজে ব্যাপক দুর্নীতি সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জর্জ গ্লাসের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ার বিষয় হয়ে ওঠে।
যেখানে প্রায় ৭০০ জন মারা গিয়েছিল।
পুনর্নির্মাণ কাজের জন্য সংগৃহীত তহবিলের অপব্যবহারের ঘটনাটি ঘিরে মামলাটি হয়েছিল।
তার বিরুদ্ধে তহবিল তছরুপের অভিযোগ আনা হয়।
কুইটোর সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে গ্লাস ইকুয়েডরবাসীদের কাছ থেকে সংগৃহীত লাখ লাখ ডলার পুনর্গঠনের জন্য সেই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেননি।
কিছু অর্থ দুর্যোগ অঞ্চল থেকে বেশ কিছুটা দূরবর্তী ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি সেতু নির্মাণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।
বিচারের সময় গ্লাস নিজেকে ‘রাজনৈতিকভাবে নির্যাতিত ব্যক্তি’ হিসেবে দাবি করেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভূমিকম্প পুনর্গঠন তহবিলে তার কোনও হাত নেই এবং তিনি এই পুনর্গঠন কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত চুক্তি পরিচালনা করেন নি।
তার সহ-অভিযুক্ত সাবেক সরকারি কারিগরি সচিব কার্লোস বার্নালকেও আত্মসাতের জন্য সর্বোচ্চ ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং তাদের সম্মিলিতভাবে ২৫০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করা হয়।
২০১৭ সালে দুর্নীতির অভিযোগে গ্লাসকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু তার আটকের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানোর পর ২০২২ সালে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
পরে তার মুক্তি বাতিল করা হয়, কিন্তু ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, আদালত তাকে পুনরায় গ্রেফতারের আদেশ জারি করার আগেই তিনি কুইটোতে মেক্সিকান দূতাবাসে আশ্রয় নেন।
২০২৪ সালের এপ্রিলে, ইকুয়েডরের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার জন্য দূতাবাসে হামলা চালায়। যার ফলে ইকুয়েডর ও মেক্সিকোর মধ্যে বড় ধরনের বিরোধ দেখা দেয়।
এই ঘটনার পর মেক্সিকো কুইটোর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে।
আমেরিকা বিরোধী কোরিয়ার শাসন সমাজকল্যাণ ও বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির দ্বারা চিহ্নিত হয়েছিল, তবে পরবর্তী বছরগুলোতে দুর্নীতির অভিযোগও দেখা দেয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত বছর কোরিয়া ও গ্লাস উভয়কেই তার অঞ্চল থেকে নিষিদ্ধ করেছিল যাকে পররাষ্ট্র দপ্তর ‘গুরুত্বপূর্ণ দুর্নীতি’ বলে অভিহিত করেছিল।