শিরোনাম
ঢাকা, ৮ জুন, ২০২৫ (বাসস) : ভেনেজুয়েলায় ডলার কালোবাজার দমনে নতুন করে অভিযান চালিয়ে আরো ২৬ জনকে আটক করা হয়েছে। ফলে গত কয়েক দিনে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার দেশটির প্রধান সরকারি কৌঁসুলি তারেক উইলিয়াম এ তথ্য জানান।
কারাকাস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
তারেক উইলিয়াম সাব এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘অর্থনৈতিক অপরাধ এবং অবৈধ বৈদেশিক লেনদেনের দায়ে মোট ৫০ জনকে আটক কারা হয়েছে।’
২০১৮ সালে মার্কিন ডলারে লেনদেন বৈধ ঘোষণার পর ভেনেজুয়েলায় কালোবাজারি বিনিময় ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। দেশটির নিয়ন্ত্রণহীন মুদ্রাস্ফীতির প্রেক্ষাপটে সরকারের ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কারণ তখন দেশীয় মুদ্রা বলিভার কার্যত মূল্যহীন হয়ে পড়েছিলো।
এরপর থেকে ডলার ভেনেজুয়েলায় কার্যত প্রধান মুদ্রায় পরিণত হয়েছে। কারাকাস সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ডলার ব্যবস্থায় (ডলারাইজেশন) যায়নি। তবে তারা স্থানীয় মুদ্রা বলিভারের মূল্য ডলারের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে।
ডলারের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সরকারি ব্যবস্থায় জোগান কম থাকায় কালোবাজার দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে। বহু বছর ধরে এই কালোবাজারি চলছিল।
২০২৪ সালে পরিস্থিতি বদলে যায়, যখন সরকার নির্ধারিত ও কালোবাজারি ডলারের দামের পার্থক্য অনেক বেড়ে যায়। এতে তেলসমৃদ্ধ হলেও ভুল ব্যবস্থাপনা ও নানা নিষেধাজ্ঞায় ভুগতে থাকা ভেনেজুয়েলায় নতুন করে মূল্যস্ফীতির চাপ তৈরি হয়।
কয়েক মাস স্থিতিশীল থাকার পর, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কালোবাজারে ডলারের দাম বলিভারের সরকারি রেটের চেয়ে ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেশিতে লেনদেন হচ্ছিল। যদিও পরে সেই ব্যবধান কিছুটা কমে আসে।
শনিবার সরকারি বিনিময় হার অনুযায়ী প্রতি ডলারের বিপরীতে বলিভার ছিল ৯৯.০৯। কিন্তু কালোবাজারে ডলারের দাম ছিল ১১৫.৩৭ বলিভার। কয়েক সপ্তাহ আগেও কিছু ক্ষেত্রে এই হার ১৫০ বলিভার পর্যন্ত পৌঁছেছিল।
সরকারি ও কালোবাজারি দামের এই ব্যবধান আবারে দেশটিতো উচ্চ মূল্যস্ফীতি, গভীর মন্দা এবং পণ্য ঘাটতির শঙ্কা তৈরি করেছে।
অনেক দিন কালোবাজারকে উপেক্ষা করলেও বর্তমানে এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ভেনেজুয়েলা সরকার। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এই কালোবাজারি ডলার ব্যবস্থাকে আখ্যায়িত করেছেন ‘অপরাধমূলক ডলার’ হিসেবে। একারণেই এই ইস্যুতে গণহারে গ্রেপ্তারে নির্দেশ দিয়েছেন।
ভেনেজুয়েলার ওপর ওয়াশিংটনের তেল নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সিদ্ধান্ত বাতিল করায়, ডলারের সঙ্গে বলিভারের বিনিময় হারের ব্যবধান আরও বেড়ে গেছে। এতে পণ্যের দাম বাড়ছে এবং বলিভারের মূল্য আরো কমে যাচ্ছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কারাকাস সরকার বাজারে বিপুল পরিমাণ ডলার ছাড়ার চেষ্টা করছে, যেন বিনিময় হারের ব্যবধান আর বেশি বাড়তে না পারে।