বাসস
  ২৫ মে ২০২৫, ১৩:১২

কুর্দিদের সঙ্গে চুক্তির পর আল-হোল শিবিরে সিরিয়া সরকারের প্রতিনিধি দল

ঢাকা, ২৫ মে, ২০২৫ (বাসস) : সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অবস্থিত আল-হোল শিবিরে প্রথমবারের মতো সফর করেছে সরকারি একটি প্রতিনিধি দল। এই শিবিরে আইএস-সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন জঙ্গিদের পরিবারের সদস্যদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। কুর্দিদের সঙ্গে চুক্তির পর সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের এটাই প্রথম সফর।

সিরিয়ার কামিশলি থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

দু’মাস আগে কুর্দি নেতৃত্ব এবং সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার মধ্যে হওয়া চুক্তির ধারাবাহিকতায় এই সফর হয়েছে। চুক্তিতে কুর্দিদের প্রশাসনিক ও সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয় সরকারের সঙ্গে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছিল। আরো বলা হয়, সব সিরিয়ান নাগরিককে তাদের গ্রামে বা শহরে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

তবে এখনো এই চুক্তির অনেক বিষয় বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমানে সিরিয়ায় ইসলামী নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। তারা গত ডিসেম্বর মাসে দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদকে সরিয়ে দায়িত্বগ্রহণ করে তারা।

দামেস্কে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নূরউদ্দিন আল-বাবা জানান, “আল-হোল শিবির হচ্ছে শারা ও আবদির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির অংশ।” 

তিনি আরো বলেন, “আইএসের শিকার এই পরিবারগুলোর জন্য পূর্ণাঙ্গ সামাজিক সমাধান প্রয়োজন।”

এদিকে, কুর্দি প্রশাসনের কর্মকর্তা শেখমুস আহমেদ বলেন, “শনিবার আল-হোল শিবিরে একটি বৈঠক হয়। এতে সিরিয়ার সরকার, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আইএস-বিরোধী জোট এবং কুর্দি প্রশাসনের লোকজন অংশ নেন।”

বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কীভাবে এই শিবির থেকে সিরিয়ান পরিবারগুলোকে সরিয়ে নেওয়া যায়।

চলতি বছরের শুরুতে কুর্দিরা জানিয়েছিল, জাতিসংঘের সঙ্গে মিলে বছরের শেষের দিকে এসব শিবির খালি করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। 

আল-হোল শিবিরে একটি আলাদা নিরাপত্তাবেষ্টিত অংশ আছে, যেখানে বিদেশি আইএস সদস্যদের পরিবারগুলোকে রাখা হয়েছে। এসব পরিবারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সংশ্লিষ্ট দেশের ভূমিকা ও আন্তর্জাতিক জোটের সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কুর্দি প্রশাসন বারবার বলেছে, যে দেশের নাগরিক এখানে আছেন, সেই দেশ যেন তাদের ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু বেশিরভাগ দেশ নিরাপত্তা হুমকি ও অভ্যন্তরীণ বিরূপ প্রতিক্রিয়ার ভয়ে তাদের ফিরিয়ে নিচ্ছে না।

এই অঞ্চলের কারাগারগুলো ভবিষ্যতে কে পরিচালনা করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কুর্দি বাহিনীর নেতা মাজলুম আবদি বলেছেন, তারা চান এসব কারাগার যেন সিরিয়া সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

আল-হোল হলো উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার সবচেয়ে বড় শিবির। সেখানে প্রায় ৩৭ হাজার মানুষ বসবাস করছেন, যাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজারই ইরাকি নাগরিক। শিবিরে আশ্রিতদের জীবনযাত্রা অত্যন্ত মানবেতর।

কুর্দি-চালিত শিবির ও কারাগারগুলোতে এখনও হাজার হাজার মানুষ বন্দি আছেন। অনেকেই সন্দেহভাজন আইএস সদস্য কিংবা তাদের আত্মীয়। আইএস ৫ বছর আগে পরাজিত হলেও তারা এখনো সেখানেই রয়ে গেছেন।