বাসস
  ২৩ মে ২০২৫, ১৩:৪৮

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পুরস্কার পেলেন কারাবন্দী থাই আইনজীবী

ঢাকা, ২৩ মে, ২০২৫ (বাসস) : থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্রের সমালোচনার দায়ে কারাবন্দি আইনজীবী আরনন নাম্পা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের পক্ষে ভূমিকা রাখায় তাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংকক থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

ঝুঁকিতে থাকা মানবাধিকারকর্মীদের জন্য দেওয়া ফ্রন্ট লাইন ডিফেন্ডারস অ্যাওয়ার্ডের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের বিজয়ী হিসেবে মনোনীত হন ৪০ বছর বয়সী আরনন। থাই নাগরিক হিসেবে তিনিই প্রথম এই সম্মাননা পেয়েছেন। 

বর্তমানে তিনি থাইল্যান্ডের ‘লে ম্যাজেস্টে’ বা রাজতন্ত্র অবমাননা আইনসহ অন্যান্য অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২২ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। এ আইনের আওতায় রাজপরিবারের সমালোচনা কঠোরভাবে দণ্ডনীয় এবং সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে।

এক বিবৃতিতে, থাই লয়ার্স ফর হিউম্যান রাইটস (টিএলএইচআর) বলেছে, “নিজের জীবনের ঝুঁকি জেনেও মানবাধিকার রক্ষায় অবিচল থাকার জন্যই আরনন এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন।”

বিশ্বজুড়ে ঝুঁকির মধ্যে কাজ করা মানবাধিকার কর্মীদের সম্মানে প্রতিবছরই এই পুরস্কার ঘোষণা করে আয়ারল্যান্ড-ভিত্তিক সংস্থাটি।

ডাবলিনে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে, আরননের লেখা চিঠি পড়ে শোনান তাঁর পরিবারের এক সদস্য। সেখানে বন্দি আরনন বলেছেন, “এটি আমার জন্য গভীর সম্মানের এবং সামনে এগিয়ে চলার শক্তি জোগাবে।”

তিনি থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক দমন-পীড়নকে “পুরোনো ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রজন্মের লড়াই” হিসেবেও বর্ণনা করেন চিঠিতে।

২০২০ সালে থাইল্যান্ডের যুব-নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের সময় আলোচনায় আসেন আরনন। ওই সময় তিনি প্রকাশ্যে রাজতন্ত্র এবং সেনা-সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে সংস্কারের কথা বলেন, যা দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে নিষিদ্ধ হিসেবে বিবেচিত হত। 

তার এ ধরনের বক্তব্য ও অনলাইন পোস্টের জেরে লেসে ম্যাজেস্টে বা দণ্ডবিধির ১১২ ধারার অধীনে একাধিকবার দণ্ডিত হন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি গ্রেফতার হন এবং এরপর থেকে কারাবন্দি আছেন।

টিএলএইচআর আরো জানিয়েছে, আরননের মোট কারাদণ্ডের মেয়াদ এখন দাঁড়িয়েছে ২২ বছরে এবং তার বিরুদ্ধে আনা প্রতিটি মামলার আপিল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

২০২৪ সালে তিনি অন্তত ৪১ বার জামিন আবেদন করেন, তবে সবগুলোই নামঞ্জুর করেন আদালত। 

এদিকে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এই আইনজীবীর কারাবাসের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানিয়েছে।