শিরোনাম
ঢাকা, ১৫ মে, ২০২৫ (বাসস) : বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে ভাইরাসবাহী টাইগার মশার বিস্তার উত্তরদিকে প্রসারিত হওয়ায় ইউরোপে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগ স্থায়ী বা স্থানীয় রোগে (এনডেমিক) রূপ নিতে পারে বলে নতুন এক গবেষণায় সতর্ক করা হয়েছে।
প্যারিস থেকে এএফপি জানায়, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া মূলত জ্বরজনিত রোগ এবং বিরল ক্ষেত্রে প্রাণঘাতীও হতে পারে। এগুলো ছড়ায় এডিস এজিপ্টাই ও এডিস এলবোপিকটাস মশার মাধ্যমে। এর মধ্যে এডিস এলবোপিকটাসকে টাইগার মশা বলা হয়, যা বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে ক্রমশ ইউরোপের উত্তরের দিকে বিস্তৃত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ সামযি়কীতে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, গত ৩৫ বছরে ইউরোপে এসব রোগের বিস্তারে জলবায়ুসহ নানা উপাদানের প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ২০১০ সালের পর থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই রোগগুলোর প্রকোপ ও তীব্রতা বেড়েছে।
২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ডেঙ্গুর ৩০০টিরও বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হয়, যা আগের ১৫ বছরে মোট শনাক্তকৃত ২৭৫টির তুলনায় বেশি। ইতোমধ্যে ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, ফ্রান্স ও স্পেনে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আমাদের বিশ্লেষণ বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন টাইগার মশাবাহিত রোগের ক্ষেত্রে বিক্ষিপ্ত সংক্রমণ থেকে ধীরে ধীরে স্থানীয় সংক্রমণের দিকে এগোচ্ছে।’
ইউরোপীয় গবেষকরা সতর্ক করেছেন, তাপমাত্রা যত বাড়বে, টাইগার মশার মাধ্যমে ছড়ানো রোগের প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকিও তত বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ সম্ভাব্য পরিস্থিতি অনুসারে, ২০৬০ সালের মধ্যে এই রোগগুলোর প্রাদুর্ভাব বর্তমানের তুলনায় পাঁচগুণ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, অপেক্ষাকৃত ধনী এলাকায় সংক্রমণ বেশি শনাক্ত হচ্ছে, যা উন্নত পরীক্ষার কারণে হতে পারে। এর মানে দরিদ্র এলাকায় অনেক সংক্রমণ শনাক্তই হচ্ছে না।
ফরাসি ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপ রিইউনিয়নে সম্প্রতি চিকুনগুনিয়ার মারাত্মক প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, টাইগার মশা জিকা ও ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসও বহন করতে পারে, যদিও সেগুলো এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিল না।