বাসস
  ১৫ মে ২০২৫, ১৮:৪৫

শিশু যৌন নিপীড়ন প্রশ্নে ফরাসি প্রধানমন্ত্রীর শুনানি ঘিরে পার্লামেন্ট বিভক্ত

ছবি : সংগৃহীত

প্যারিস, ১৫ মে ২০২৫ (বাসস): ক্যাথলিক বিদ্যালয়ে শিশু যৌন নিপীড়নের অভিযোগ নিয়ে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু’র শুনানি ঘিরে দেশটির রাজনীতিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

প্যারিস থেকে এএফপি জানায়, বুধবার (১৪ মে) ফরাসি সংসদে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এক উত্তেজনাপূর্ণ শুনানিতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের একটি স্কুলে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেন।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, গণমাধ্যমেই তিনি এসব অভিযোগের কথা প্রথম শোনেন। তিনি অভিযোগ করেন, শুনানি কমিটি এবং বিশেষ করে বামপন্থী ‘ফ্রান্স আনবাউড’ (এলএফআই) দলের একজন সহ-প্রতিবেদক সরকারের পতন ঘটানোর উদ্দেশ্যে কাজ করছেন।

কিন্তু অনেক সংসদ সদস্যই প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট নন। সমাজতান্ত্রিক দলের সংসদীয় নেতা বরিস ভালো বলেন, ‘এই শুনানির পর জনগণ বা ভুক্তভোগীরা কি সত্যিই কী ঘটেছিল তা জানতে পারল? আমি মনে করি না।’

অন্যদিকে, ডানপন্থী ‘ন্যাশনাল র‌্যালি’ দলের সহ-সভাপতি সেবাস্তিয়েন চেনু শুনানিকে ‘মস্কোর বিচার’ বলে উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, ‘এটি ছিল এক ধরনের স্তালিনপন্থা।’
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মর্ক ফেসনো বলেন, ‘মানুষকে এভাবে হেনস্তা করাটা ভয়ংকর। এটা যেন একপ্রকার ত্মালিনবাদ।’

বিপরীতে, এলএফআই দলের পল ভানিয়ে অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী ফেব্রুয়ারিতে সংসদে মিথ্যা বলেছেন। তার ভাষায়, ‘ফ্রাঁসোয়া বাইরু সংসদের সামনে মিথ্যা বলেছেন—এটি এখন পরিষ্কার।’

তিনি জানান, কমিটি প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ বক্তব্য গভীরভাবে পর্যালোচনা করবে।

‘এলএফআই’ দলের জাতীয় সমন্বয়ক ম্যানুয়েল বমপার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘একজন প্রধানমন্ত্রী যদি সংসদীয় পর্যবেক্ষণের সময় মিথ্যা বলেন, আমরা কি তাঁকে মেনে নিতে পারি? আমাদের উত্তর,না।’

প্রসঙ্গত, বাইরু ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালীন এই নিপীড়নের ঘটনা জানতেন বলে বিরোধীরা অভিযোগ করছেন। উল্লেখ্য, বাইরু’র সন্তানরাও ওই স্কুলে পড়াশোনা করেছে এবং তার স্ত্রী সেখানে ধর্মীয় শিক্ষক ছিলেন।

ফ্রাঁসোয়া বাইরু প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ’র মেয়াদে ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে দায়িত্ব নেন। তবে বেথারাম স্কুল-কাণ্ডে তার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে এবং জনসমর্থনও কমছে বলে জানা গেছে।