শিরোনাম
ঢাকা, ১৪ মে, ২০২৫ (বাসস) : হুথি নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার পর ইয়েমেনি বন্দরগুলো এড়িয়ে চলতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসরাইল। বুধবার এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
জেরুজালেম থেকে এএফপি জানায়, ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বারবার ইসরাইল এবং লোহিত সাগরের জাহাজ চলাচলে হামলা চালিয়ে আসছে। তারা বলছে, এসব হামলা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির অংশ।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, 'ইসরাইলের বিভিন্ন এলাকায় সাইরেন বাজানোর পর ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়েছে।’
জেরুজালেমে কর্মরত এএফপির সংবাদদাতারা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হওয়ার আওয়াজ শুনেছেন বলে জানান।
হুথিরা জানিয়েছে, এটি ছিল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের তৃতীয় হামলা। তারা দাবি করেছে, তেল আবিবের নিকটবর্তী বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লক্ষ্য করে তারা একটি ‘হাইপারসোনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র’ ছুড়েছে।
এর জবাবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী ইয়েমেনের তিনটি হুথি-নিয়ন্ত্রিত সমুদ্রবন্দর থেকে দূরে থাকার জন্য ইয়েমেনিদের সতর্ক করেছে।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আবিচাই আদরী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ এক পোস্টে বলেন, ‘হুথি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বন্দর ব্যবহারের কারণে হোদেইদা, রাস ইসা ও সালিফ বন্দরগুলোতে অবস্থান করা সকলকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অবিলম্বে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলা হচ্ছে।’
‘আশ্রয়ের জন্য দৌড়াচ্ছে মানুষ’
টোকিওতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সাআর বলেন, ইয়েমেন থেকে হুথিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বিঘ্নিত করছে।
তিনি বলেন, ‘এই সংবাদ সম্মেলনের সময়েই জেরুজালেম ও ইসরাইলের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সাইরেন বাজছে। মিলিয়ন মিলিয়ন ইসরায়েলি এখন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটছে—এই সময়েই স্কুল বা কিন্ডারগার্টেনে যাচ্ছিল শিশুরা। এটাই আমাদের দৈনন্দিন জীবন।'
এর আগের দিনও হুথিরা বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবি করেছিল। সে সময়ও ইসরাইলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করে।
তবে গত মাসে হুথিদের একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ভেদ করে বিমানবন্দরের মূল টার্মিনালের কাছে বিস্ফোরিত হয়। এতে কয়েকজন আহত হয় এবং একটি গর্ত সৃষ্টি হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল ইয়েমেনের রাজধানী সানার বিমানবন্দর ও তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
ইসরাইল গত রোববারও হুথি-নিয়ন্ত্রিত তিনটি বন্দর এলাকা খালি করার জন্য ইয়েমেনিদের সতর্ক করেছিল, যদিও তখন পর্যন্ত কোনো হামলার খবর পাওয়া যায়নি।
গাজার যুদ্ধের সাম্প্রতিক দুই মাসের অস্ত্রবিরতির সময় হুথিরা হামলা বন্ধ রেখেছিল। তবে মার্চে তারা আবার হামলার হুমকি দেয়, গাজায় সহায়তা প্রবেশে ইসরাইলি অবরোধের অভিযোগ তুলে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি বর্তমানে সৌদি আরব সফর করছেন, গত সপ্তাহে বলেন, হুথিরা জাহাজ চলাচলে হামলা বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে।
অন্যদিকে ২০২৪ সালের শুরুতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র হুথিদের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে। পরে মার্চে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনেও পুনরায় হামলা চালানো হয়।
পেন্টাগন গত ৩০ এপ্রিল জানায়, ‘রাফ রাইডার’ নামে পরিচালিত অভিযানে মার্চের মাঝামাঝি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে ১,০০০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।