বাসস
  ১৪ মে ২০২৫, ১৪:০৬

আফগান শরণার্থী ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে 'সংলাপে' প্রস্তুত কাবুল

ঢাকা, ১৪ মে, ২০২৫ (বাসস): যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত আফগান শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সংলাপ করতে প্রস্তুত কাবুল। আগামী জুলাই থেকে এসব আফগান শরনার্থীদের আইনি নিরাপত্তা প্রত্যাহার করবে যুক্তরাষ্ট্র। কাবুল থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।

আফগানিস্তানে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির কথা বিবেচনায় নিয়ে সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করে, অস্থায়ী সুরক্ষা সুবিধার (টেম্পোরারি প্রটেক্টেড স্ট্যাটাস-টিপিএস) আওতায় যাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তাদের মেয়াদ আগামী ২০ মে শেষ হবে এবং ১২ জুলাই থেকে তা কার্যকর হবে।

আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল কাহার বালখি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যেসব আফগান আর স্বাগতিক দেশগুলোতে থাকার শর্ত পূরণ করছেন না, তাঁদের প্রত্যাবাসন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপে অংশ নিতে আমরা প্রস্তুত।’

২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার সময় যেসব আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের নিরাপদে ফিরিয়ে নেওয়ার নিশ্চয়তা আগেই দিয়েছে তালেবান সরকার।

তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে, দেশে ফেরার পর কিছু আফগানকে হত্যার ঘটনা ও নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তালেবান নারীদের শিক্ষা, চাকরি ও জনজীবন থেকে প্রায় পুরোপুরি সরিয়ে নিয়েছে। জাতিসংঘ এটিকে লিঙ্গ-ভিত্তিক বর্ণবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল।

আফগান ইভ্যাকের সভাপতি শন ভ্যানডিভার বলেন, ওয়াশিংটনের নেওয়া সিদ্ধান্তের ফলে ১১ হাজারের বেশি আফগান প্রবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এদের অনেকেই দুই দশকের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করেছিলেন এবং তালেবান নির্যাতনের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন।

আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল কাহার বালখি বলেন, ‘আফগানিস্তান সকল আফগানের অভিন্ন আবাসস্থল। এখানে সকল নাগরিকের স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার রয়েছে।’

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০২১ সালের পর থেকে আফগানিস্তান এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। বর্তমানে সুদানের পর বিশ্বের দ্বিতীয় ভয়াবহ মানবিক সংকটে পরিণত হয়েছে।

সম্প্রতি পাকিস্তান একটি নতুন ‘বড় আকারের বহিষ্কার অভিযান’ শুরু করার পর এপ্রিল থেকে ১ লাখের বেশি আফগান দেশে ফিরে এসেছেন।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেশী ইরান থেকেও ২ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি অনিয়মিত আফগান দেশে ফিরে গেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইনে বলা আছে, যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্যান্য অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে যারা নিজ দেশে নিরাপদে ফিরতে পারে না, তাদের অস্থায়ী সুরক্ষা সুবিধা (টিপিএস) দেওয়া যেতে পারে।

তবে ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সামগ্রিক অভিবাসন কঠোর নীতির অংশ হিসেবে হাইতি ও ভেনেজুয়েলাসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের  দেয়া এ সুবিধা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়েছেন।