বাসস
  ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:০৯
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:৫৩

টিকাদানে স্থবিরতা নয়, সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ : সায়েদুর রহমান

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : টিকাদান কর্মসূচিতে কোনো স্থবিরতা নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান। 

তিনি বলেন, সরবরাহে কিছু সমস্যা থাকলেও, সরকার আগাম অর্থ দিয়ে টিকা সংগ্রহ করছে এবং কর্মসূচিতে কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। 

আজ রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ইউনিসেফ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, ১৯৮০ সালে টিকাদানের হার ছিল ৮০ শতাংশ, এখনও তাই আছে। এটি বাড়েওনি আবার কমেওনি। এই মূহুর্তে জরুরি ভিত্তিতে সরকারের পক্ষ থেকে ইপিআই-এর টিকা ক্রয় করা হয়েছে। সায়েদুর রহমান আরো বলেন, ইউনিসেফ বিশ্ব বাজার থেকে আমাদেরকে টিকা ক্রয় করে দেয়। তাদেরকে আগাম টাকা দিতে হয়। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আমরা আগাম টাকার ব্যবস্থা করে রেখেছি। আগামী বাজেটের আগেই ইউনিসেফকে টাকা পরিশোধ করা হবে। এই কর্মসূচিতে কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না।

দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘাটতি পূরণ করা হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী বলেন, দুই/একটি সপ্তাহে টিকা সরবরাহ করতে সমস্যা হচ্ছে। অভাব যেখানে থাকে, সেখানে দুই/তিন সপ্তাহের মধ্যে ঘাটতি পূরণ করা হয়। আশা করি, এই ঘাটতিও কমে আসবে। জেলা থেকে উপজেলায় ভ্যাকসিন যায়, সিরিয়াল অনুযায়ী মাসের পর মাস যায়। সেটা না গেলে, মনে হবে ভ্যাকসিন নেই। কিন্তু ভ্যাকসিনের অভাবে টিকা দেয়া যায়নি, এ রকম হয়নি। ৪৫ লাখের জায়গায় ৪০ জন টিকা নাও পেতে পারে।

এ ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে ডা. সায়েদুর বলেন, আগামীতে ভ্যাকসিনের চ্যালেঞ্জ দুটি। একটি হলো- শহর এলাকায় ও বয়সের। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার অগ্রাধিকারের তালিকায় টিকাদান প্রয়োগ নেই। এটা পরিকল্পনাগত ভাবে ঠিক হয়নি। টিকাদানের বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা নিরাপদ। আর সকল বয়সের মানুষের টিকা দেওয়াটা খুবই কঠিন। এটিও সফলভাবে করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, টিকাদানে ফান্ড বিশাল। মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার কারণে প্রচুর পরিমাণে অর্থ দিতে হচ্ছে। সরকার নাগরিকদের টিকা নিশ্চিতে পুরোপুরি অঙ্গিকারাবদ্ধ। জনবল দেওয়া, অর্থ দেওয়া, অবকাঠামো- সবকিছুই সরকার করবে।  তবে মানুষের সহযোগিতা এবং অংশগ্রহণ প্রয়োজন। কোথাও কোথাও কম আর বেশি টিকা প্রয়োগ করা যায়। যিনি টিকা পেয়েছেন, তিনি যেন কৃতজ্ঞতা বশত অন্য আরেকজনকে টিকা নিতে উৎসাহিত ও সহযোগিতা করেন।

একই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, আমরা বাজেটকে সমুন্নত করার চেষ্টা করছি। আপনারা জানেন ওপি (অপারেশন প্ল্যান) বন্ধের পথে বা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর মাঝে আমরা ৪৬২ কোটি টাকা সমন্বয় করেছি। অনেক জায়গায় ভ্যাকসিন নাই। আমরা তা সমাধানের চেষ্টা করছি। আমাদের ট্রান্সপোর্ট ও লোড-আনলোডে কিছু সমস্যা ছিল। আমাদের কিছু গাড়ি অব্যবহৃত ছিল। সেগুলো একটিভ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ভ্যাকসিনেশন করছি কিন্তু সময় মতো করছি না। ফলে সেই বয়সে সেই শিশুটা অনিরাপদ, সেটাকে ভ্যাকসিনেশনের পর্যায়ে আনা যাবে না। অতিমাত্রার আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলে সমস্যার সমাধান হবে না।

জন্ম নিবন্ধনের উপর গুরুত্ব আরো করে তিনি বলেন, শিশু যেখানেই জন্মগ্রহণ করুক, তার বার্থ রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করতে হবে। এটি করা গেলে, সময় মতো ভ্যাকসিনেশন করা সম্ভব। 

ডা. আবু জাফর আরো বলেন, জনবলের ক্ষেত্রে আমাদের ঘাটতি আছে। কিন্তু যে জনবল আছে, সেটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছি কি না- তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পাশাপাশি যারা সেবা নেবে, তাদেরও সচেতন হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, ইউনিসেফের রিপ্রেজেন্টেটিভ মিস রানা ফ্লাওয়ার্স, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও ইপিআই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকতা ও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।