বাসস
  ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৭:০৪

অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়ের স্বপ্ন সাবার

রাজশাহী, ১৩ জুলাই ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় পর্যায়ের সাঁতার প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ ও রৌপ্য পদক জয় করে সকলের নজড় কেড়েছে রাজশাহীর ৯ বছর বয়সী ছোট্ট সাঁতারু আয়েশা তাবাসসুম সাবা। 

গত মে মাসে মিরপুর সুইমিং কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত ৩৭ তম জাতীয় বয়স ভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতা-২০২৫ এ ৩টি স্বর্ণ ও ২টি রৌপ্য পদক জয় করে ১০ বছর বালিকা ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে সাবা। ভবিষ্যতে তার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়েরও স্বপ্ন দেখে সাবা।

এ জন্য সে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন। বাসসের সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে এসব তথ্য জানিয়েছে আয়েশা তাবাসসুম সাবা। রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন ভদ্রা আবাসিক এলাকার দস্তগির আব্দুল্লাহ ও মারুফা খাতুনের বড় মেয়ে সাবা। 

রাজশাহীর ভদ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী সাবা। পড়াশোনার পাশাপাশি বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় সে সাঁতার শিখে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। জুনিয়রদের সাঁতার প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায়ে রাজশাহীতে ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত সাঁতার প্রতিযোতিায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তার লক্ষ্য ছিল জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করার। সেই লক্ষ্যেই অনুশীলন করে যাচ্ছিলো সাবা। 

অনুর্ধ্ব-১৪ সাঁতার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ৩৭ তম জাতীয় বয়স ভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতা-২০২৫ এ অংশগ্রহণ করার সুযোগ লাভ করে সাবা। সুযোগ পাওয়ার পরে বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণা ও নিজের চেষ্টায় পড়াশোনার পাশাপাশি অনুশীলন চালিয়ে যেতে থাকে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় খেলায় বাবা-মায়ের সাথে সে যোগ দেয়। তার প্রবল ইচ্ছে ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সেই ইচ্ছে থেকে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। 

রাজশাহীতে সেভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকার কারণে দস্তগির আব্দুল্লাহ নিজেই মেয়েকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। জাতীয় পর্যায়ে মেয়ের এমন অভাবনীয় সাফল্যে বাবা-মাও গর্বিত। 

গত বছর অনুষ্ঠিত জাতীয় জুনিয়র সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সাবা। ৫০ ফ্রিস্টাইলে রৌপ্য, ৫০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে স্বর্ণ, ৫০ বাটারফ্লাইয়ে স্বর্ণ পদকসহ স্থানীয় বেশ কিছু প্রতিযোগিতায় পদক জয় করেছে সাবা। 

সাবার বাবা আরো জানান, বড় মেয়ের সাথে আমার ছোট মেয়েও একই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্ত সে পারেনি। আগামীতে অনুষ্ঠিত খেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য এখন থেকেই অনুশীলন করছে। তার বড় মেয়ে সাবার লক্ষ্য অলিম্পিকে স্বর্ণ পদক অর্জন করা। এ জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা কামনা করেছেন। তবে তার মেয়ের সঠিক অনুশীলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কারণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খেলায় অংশগ্রহণ করার জন্য যে অনুশীলন দরকার তা পাবেন কিনা সেটা নিয়ে চিন্তিত তিনি। 

আয়েশা তাবাসসুম সাবা বলেন, আমি বাবা ও মায়ের অনুপ্রেণায় জেলা পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ভবিষ্যতে অলিম্পিকে খেলতে চাই। সে জন্য নিজেকে তৈরি করবো। এ জন্য আমি সকলের সহযোগিতা চাচ্ছি। আমি আমার বাবা-মাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। 

রাজশাহী জেলা ক্রীড়া অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, খেলাধুলায় অনুপ্রেরণা বাড়ানোর জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধরণের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে রাজশাহীর প্রতিযোগিরা আরো এগিয়ে যাবে।