শিরোনাম
ঢাকা, ১২ জুলাই ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয় নারী কাবাডি দলের কোচ শাহনাজ পারভীন মালেকা মনে করেন ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ করে কাবাডিতে দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা পেতে তারুণ্যের উৎসবের ধারাবাহিকতার প্রয়োজন রয়েছে।
বাসসের সাথে আলাপকালে জাতীয় দলের সাবেক এই খেলোয়াড় বলেন এবারের তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ থেকে পঞ্চাশ জন খেলোয়াড়কে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন বাছাই করেছে। ভবিষ্যতে ভাল মানের খেলোয়াড় হিসেবে প্রস্তুত করে তোলার জন্য তাদেরকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।
২০১০ সালে এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পদক পাওয়া বাংলাদেশ নারী দলে অন্যতম সদস্য মালেকা বলেন, ‘বাংলদেশের জাতীয় খেলা কাবাডিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য আমাদের খেলোয়াড়দের দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষনের প্রয়োজন। কাবাডিতে জাতীয় মানের খেলোয়াড় খুবই সীমিত। তারুণ্যের উৎসব এক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে।
এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা যে সমস্ত খেলোয়াড়কে খুঁজে পেয়েছি তাদেরকে নিয়ে যদি পরিকল্পিত একটি প্রশিক্ষনের আয়োজন করা যায় এবং সেটা যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য হয় তবে ভবিষ্যতে ভাল একটি জাতীয় দল অবশ্যই পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।’
দেশে প্রথমবারের মত আয়োজিত তারুণ্যের উৎসব অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ বলে শাহনাজ উল্লেখ করেছেন। এভাবে যদি তারুণ্যের উৎসবের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা যায় তবে শুধুমাত্র কাবাডি নয় বাংলাদেশের প্রতিটি ইভেন্টই ভবিষ্যতের জাতীয় দল গড়তে উপকৃত হবে বলে শাহনাজ আশাবাদী।
জাতীয় দলের এই কোচ আক্ষেপ করে বলেছেন, কাবাডিতে নারী খেলোয়াড়রা অনুশীলনে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা পায়না। এমনকি জিমের অভাবে খেলোয়াড়রা শারিরীক ভাবেও নিজেদের ফিট করে গড়ে তুলতে পারছেনা। ফেডারেশনগুলোর বাজেট সীমিত থাকার কারনে নারীরা বিভিন্ন ভাবে অনুশীলনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। একইসাথে বিদেশে অনুশীলন ম্যাচ খেলার অভাবে আন্তর্জাতিক ভাবে নিজেদের মান যাচাইয়ের সুযোগ পাচ্ছেনা। সারা বিশ্বেই উন্নত দেশগুলোতে আন্তর্জাতিক কোন ইভেন্টে অংশ নেবার আগে বিদেশী দলের বিপক্ষে অনুশীলন ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেয়া হয়। কিন্তু বড় কোন টুর্নামেন্টের আগে আমাদের খেলোয়াড়রা এ ধরনের কোন সুযোগ সুবিধা কখনই পায়নি।
শাহনাজ পারভীন আরো বলেন, বাংলাদেশের নারী কাবাডি দল অতীতে দেশের জন্য বেশ কিছু সম্মান বয়ে এনেছে। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য সাবেক এই জাতীয় খেলোয়াড় সরকারের সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
এ বছর প্রথমবারের মত দেশব্যপী তারুণ্যের উৎসব আয়োজিত হয়, যা ক্রীড়াঙ্গনে ব্যপক সাড়া ফেলেছে। একইসাথে বর্তমান সরকারের একটি সফল উদ্যোগ হিসেবেও প্রশংসিত হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে কমপক্ষে ২ লাখ ৭৪ হাজার নারী ও তরুণী ২ হাজার ৯৩১টি ক্রীড়া ইভেন্ট এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন।
বিভিন্ন ইভেন্টে সর্বমোট ম্যাচের মধ্যে কমপক্ষে ৮৫৫টি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে কিছু অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত এত বেশি নারী এর আগে কখনও এত বিপুল সংখ্যক ক্রীড়া ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেননি।
ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব ফেব্রুয়ারিতে শেষ হলেও সম্প্রতি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশে তারুণ্যের শক্তিকে উজ্জীবিত করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তারুণ্যের উৎসব এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান রাখার ঘোষনা এসেছে।