শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ মে, ২০২৫ (বাসস): কুমিল্লা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার ভুয়া ও ভিত্তিহীন ভিডিও প্রচার শনাক্ত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।
বাংলাদেশে চলমান গুজব এবং ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। ফ্যাক্টওয়াচ হল একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং ব্যবস্থা, যা লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত এবং সেন্টার ফর ক্রিটিকাল অ্যান্ড কোয়ালিটিভেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস) দ্বারা পরিচালিত।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান টিম জানায়, কুমিল্লা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার দাবিটি ভিত্তিহীন।
তারা আরো জানায়, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের অজ্ঞাত এক সহ-সভাপতিকে মেরে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ফেসবুকে ২২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আরও দাবি করা হচ্ছে, বিএনপি-জামায়াত এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভাইরাল ভিডিওটি পুরোনো এবং এর সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। এটি ২০২৩ সাল থেকেই ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লায় এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান টিম জানায়, বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চে যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র দ্য ডেইলি স্টার ইউকের ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এটি প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালের ৬ মে।
প্রতিবেদনটিতে ব্যবহৃত একাধিক ছবির সঙ্গে ভাইরাল ওই ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ভিডিওটি ২০২৩ সালে প্রকাশ্যে আসে। এতে যে ব্যক্তিটিকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছিল, তিনি লস জেটাস ভিয়েজা এস্কুয়েলা (‘দ্য জেটাস ওল্ড স্কুল’) নামে মেক্সিকোর একটি মাদক পাচারকারী গ্রুপের সদস্য। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ মেক্সিকোর অন্যতম একটি মাদক পাচারকারী গ্রুপ গাল্ফ কার্টেলের সশস্ত্র অংশ স্কোরপিওনের বিরুদ্ধে। প্রতিবেদনটিতে ভিডিওটির যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তার সঙ্গেও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতিকে পুড়িয়ে ফেলার দাবিতে ভাইরাল ভুয়া ও ভিত্তিহীন ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে ভিডিওটির আর কোনো উৎস পাওয়া না গেলেও ডেইলি স্টার ইউকের প্রতিবেদন থেকে এটি নিশ্চিত হওয়া যায়, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগসহ সভাপতিকে পুড়িয়ে ফেলার দাবিতে ভাইরাল ভিডিওটি অন্তত দুই বছরের পুরোনো। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিকে পুড়িয়ে ফেলার দাবিটিও ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে ভিত্তিহীন বলে প্রতীয়মান হয়।।
এছাড়া এ সংক্রান্ত কোন সংবাদ বা প্রতিবেদন বা তথ্য কুমিল্লাসহ দেশের কোন গণমাধ্যম বা কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
একটি মহল দেশ-বিদেশ থেকে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ে নানা গুজব, ভুল তথ্য, অপতথ্য ছড়াচ্ছে এমন প্রমাণ মিলেছে ফ্যাক্টচেক করে। শুধু এপ্রিল মাসে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ২৯৬টি ভুল ফ্যাক্টচেক করে তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।
গত বছর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের হার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে ফ্যাক্টচেক অনুসন্ধান টিমগুলো।