শিরোনাম
ঢাকা, ৭ মে, ২০২৫ (বাসস): স্বাভাবিক এস্কর্টিংয়ের সময় ধারণকৃত ভিডিওকে সাজেকে আরাকান আর্মির আগমনের আশঙ্কায় পর্যটকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে দাবি করে প্রচার করা তথ্য মিথ্যা বলে শনাক্ত করেছে রিউমার স্ক্যানার।
বাংলাদেশে চলমান গুজব এবং ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমার স্ক্যানার।
স্বাভাবিক এস্কর্টিংয়ের ভিডিওকে আরাকান আর্মি আতঙ্কে পর্যটকদের সাজেক ছাড়ার মিথ্যা দাবিতে প্রচার করার বিষয়টির ফ্যাক্টচেক করে রিউমার স্ক্যানার।
রিউমার স্ক্যানার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে জানায়, সাজেকে আরাকান আর্মির আগমনের আশঙ্কায় পর্যটকদের পুলিশি পাহারায় দ্রুত সাজেক থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাজেকে আরাকান আর্মির আগমনের আশঙ্কায় পর্যটকদের সরিয়ে নেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বাভাবিক এস্কর্টিংয়ের সময় ধারণকৃত ভিডিও সংগ্রহ করে তা ওই মিথ্যা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘পারভেজ খান বাপ্পি’ নামক এক ব্যক্তির ফেসবুক প্রোফাইলে এ সংক্রান্ত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ফেসবুক অ্যাকাউন্টটিতে গত ৩ মে রিলস ভিডিও আকারে প্রচারিত ‘সাজেকিয়ান’ লেখা যুক্ত ভিডিওটি ‘সাজেক থেকে বাড়ি ফিরছে ট্যুরিস্টরা' শীর্ষক ক্যাপশনে পোস্ট করা হয়।
ফ্যাক্টচেক অনুসন্ধান টিম জানায়, ভিডিওটিতে আরকান আর্মি বা পর্যটকরা আতঙ্কিত হওয়ায় তাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে সংক্রান্ত কোনো তথ্যের উল্লেখ নেই। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এটা অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক ঘটনার ধারণকৃত ভিডিও বলে প্রতীয়মান হয়। এছাড়া, ভিডিওটির মন্তব্যের ঘর পর্যবেক্ষণ করেও তা স্বাভাবিক ভিডিও বলেই প্রতীয়মান হয়। মো. জনি খান নামের অন্য একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ৪ ডিসেম্বর আপলোডকৃত পর্যটকদের এস্কর্ট দেওয়ার একইরকম একটা ভিডিও খুঁজে পায় ফ্যাক্টচেক অনুসন্ধান টিম।
বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য মূল ভিডিও প্রকাশকারী ‘পারভেজ খান বাপ্পি’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমার স্ক্যানারকে জানান, 'এটি ২ মে সকালে ধারণ করা। আমার বড় ভাইয়ের করা। আমরা আপলোড করেছি। এস্কর্ট করে নামার সময়। আর উনি বাইক নিয়ে নিচে নামার ভিডিও করেছে। আমরা নিয়মিত সাজেকের আপডেট দিয়ে থাকি। আমাদের কয়েকটা পেজ এবং আইডি তে এসব ভিডিও নিয়মিত দিয়ে থাকি।'
তিনি জানান, 'এখানে আরাকান বাহিনী নেই। সাজেকে প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে পর্যটক যাওয়া আসা করে। আর পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে এস্কর্টের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয়,আবার নতুন ভ্রমণকারীদের আনা হয়। সামনে পুলিশ থাকে, পিছনে আর্মি থাকে।' তিনি জানান, 'পার্বত্য অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ টুরিস্ট প্লেস সাজেক।
এখানে টুরিস্টরা সর্বোচ্চ নিরাপদ থাকে। এস্কর্টের মাধ্যমে পর্যটকদের আনা নেয়া ৭/৮ বছর ধরে চলছে।
রিউমার স্ক্যানার জানায়, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে সাজেকে আরাকান আর্মি আতঙ্কে পর্যটকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে শীর্ষক কোনো তথ্য গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
স্বাভাবিক এস্কর্টিংয়ের সময় ধারণকৃত ভিডিওকে সাজেকে আরাকান আর্মির আশঙ্কায় পর্যটকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে দাবি প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর বলে শনাক্ত করেছে রিউমার স্ক্যানার।