ঢাকা, ২ ডিসেম্বর, ২০২১ (বাসস): জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী স্মরণীয় করতে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের আয়োজনে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ১১ দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালা’র মূল মিলনায়তন ও পরীক্ষণ থিয়েটার হলে এই উৎসবের নাটকগুলো মঞ্চায়ন করা হবে। এর আগে আগামীকাল বিকেলে হবে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিকেল ৫ টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নন্দনমঞ্চে উৎসব উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীন বাংলাদেশের সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় অসামান্য ভূমিকা পালনকারী ৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা সংস্কৃতিজন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম মোজাম্মেল হক এমপি। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব মোঃ শাহনেওয়াজ। সভাপতিত্ব করবেন উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন। উৎসব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবে ‘স্মরণে ৭১’ শীর্ষক কোরিওগ্রাফীর মঞ্চায়ন।
এছাড়া পুরো উৎসব জুড়ে থাকবে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ১৪টি নাট্যদলের বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মঞ্চসফল নান্দনিক নাটক মঞ্চায়ন। এরমধ্যে আগামীকাল শুক্রবার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়িত হবে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের নাটক ‘ঘুমনেই’,। উৎসবের আয়োজনে অন্য নাটকগুলো হচ্ছে চট্টগ্রামের উত্তরাধিকার পরিবেশিত নাটক ‘মৃত্যু পাখি’, দৃশ্যকাব্যের নাটক ‘বাঘ’, শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের নাটক ‘রাইফেল’, বুনন থিয়েটারের নাটক ‘সিক্রেট অব হিস্ট্রি’, ঢাকা পদাতিকের ‘কথা ৭১’, বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটারের নাটক ‘অভিশপ্ত আগস্ট’, প্রাঙ্গণেমোর প্রদর্শন করবে ‘কনডেমড সেল’, পরীক্ষণ সংলাপ গ্রুপ থিয়েটার প্রদর্শন করবে তাদের নাটক ‘মানব সুরৎ’।
এছাড়া ১০ ডিসেম্বর শুক্রবার মূল হলে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় মঞ্চস্থ করবে ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’, পরীক্ষণ থিয়েটার হলে থিয়েটার আর্ট ইউনিট আনবে ‘কোর্ট মার্শাল’, ১১ ডিসেম্বর শনিবার মূল হলে বরিশালের নাট্যম মঞ্চায়ন করবে নাটক ‘তীলক’, ১২ ডিসেম্বর বরিবার মূল হলে পদাতিক নাট্য সংসদ (টিএসসি) মঞ্চায়ন করবে তাদের নাটক ‘কালরাত্রি’, ১৩ ডিসেম্বর সোমবার থিয়েটার মঞ্চায়ন করবে ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’।
উৎসব উপলক্ষ্যে জাতীয় নাট্যশালার লবিতে একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোকচিত্র শিল্পী পাভেল রহমান এর ছবি নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর জীবন’ স্থিরচিত্র প্রদর্শনী রয়েছে এবং বাংলাদেশ থিয়েটার আর্কাইভস কর্তৃক বাংলাদেশের ৫০ বছরের নাটকের পোস্টার ও স্থিরচিত্র প্রদর্শনী থাকবে।
উৎসবে ’একটি অমিমাংসিত রাজনৈতিক বাস্তবতা: প্রেক্ষিত মহাকালের ঘুমনেই’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এই উৎসবে বাংলাদেশের ৫০ বছরে সংস্কৃতিচর্চা, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে সকল প্রতিষ্ঠান নিয়মিত গবেষণা ও প্রসারে ভূমিকা রেখে চলেছে এমন ৯টি প্রতিষ্ঠানকে (মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সিরাজগঞ্জ উত্তরণ মহিলা সংস্থা, থিয়েটার পত্রিকা, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, ছায়ানট, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, কেন্দ্রীয় কঁচি-কাচার মেলা, পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ থিয়েটার আর্কাইভস) আগামী ১০ ডিসেম্বর সম্মাননা দেওয়া হবে।
উৎসবের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে উৎসবের সদস্য সচিব মোঃ শাহনেওয়াজ জানান, জাতির জনকের সারা জীবনের ত্যাগ-তীতিক্ষা, জেল-জুলুম সংগ্রাম এবং ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত দান ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জন আমাদের এ প্রিয় স্বদেশ বাংলাদেশ। জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ এবং প্রিয় মাতৃভূমির ৫০ বছর উদযাপন আমাদের সংস্কৃতিচর্চার শক্তি অর্জন এবং ধারাবাহিক সংস্কৃতিচর্চার জন্য অপরিহার্য। সেই জায়গা থেকে বিশ্ব মহামারির এ দুঃসময় কাটিয়ে দর্শক তথা সামাজিকগণকে হলমুখী করতে এবং মানসিকভাবে স্বস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে এ উৎসব অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।