বাসস
  ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১৯:২৯

শিল্পকলা একাডেমিতে মাসব্যাপী ৫ম জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী শুরু আগামীকাল

ঢাকা,২৮ নভেম্বও ২০২১(বাসস) : বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে  ৫ম জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীর শুরু হবে আগামীকাল ২৯ নভেম্বর। একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে বিকাল ৪টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী  কে এম খালিদ। 
আজ রোববার জাতীয় চিত্রশালা সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শনীর বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর,  ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান এবং শিল্পী অলক রায়। সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশে ভাস্কর্য শিল্পের চর্চা ষাট বছরেরও অধিক সময় অতিক্রম করেছে। বিগত শতকের পঞ্চাশ দশকের শেষ দিকে নভেরা আহমেদের মাধ্যমে এদেশে আধুনিক ভাস্কর্য চর্চার সূচনা ঘটে। তিনি জানান, পরবর্তীতে ষাট দশকের প্রথমার্ধে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সহচর্যে শিল্পী আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে ঢাকার তৎকালীন চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে ভাস্কর্যের প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা আরম্ভ হয়, যা বর্তমানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে স্বতন্ত্র বিভাগে পরিণত হয়েছে। এর পাশাপাশি মৃৎশিল্প ও অন্যান্য শিল্প মাধ্যমের অনেকেই ভাস্কর্য চর্চা করে চলেছেন। দেশে বর্তমানে একটি সমৃদ্ধ ও সক্রিয় ভাস্কর্য শিল্পীগোষ্ঠীর উপস্থিতি রয়েছে।’
মহাপরিচালক জানান, ‘শিল্পীদের অনেকেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ভাষা আন্দোলনকে বিষয় করে তাৎপর্যপূর্ণ ভাস্কর্য তৈরি করেছেন। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় ভাস্কর্য সম্পর্কে জনমানসে এখনও অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তি রয়েছে। শক্তিমান এই শিল্প মাধ্যমটির সুরক্ষা, বিকাশ ও বিস্তৃতির কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি জাতীয়, নবীন ও এশীয় চারুকলা  প্রদর্শনীর পাশাপাশি আলাদাভাবে জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে।’
একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার গ্যালারিতে  মাসব্যাপী  এই প্রদর্শনী চলবে ২৯ নভেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর  পর্যন্ত  প্রতিদিন সকাল ১১টা (শুক্রবার বিকাল ৩টা) থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
একাডেমি সূত্র জানায়, ধারাবাহিকভাবে ভাস্কর্য চর্চায় উৎসাহ, বিকাশমান চর্চার সুরক্ষা ও বিস্তারে সহায়তা প্রদান করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে ১৯৭৬ সালে প্রথম এবং ১৯৮৩ সালে দ্বিতীয় জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ৩১ বছর বিরতির পর ২০১৪ সালে তৃতীয় জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী এবং ২০১৮ সালে ৪র্থ ভাস্কর্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর পঞ্চম বারেরমত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী। এবারের প্রদর্শনীতে সারাদেশ থেকে ২১ বা তদুর্ধ বয়সী ১৩৫ জন শিল্পীর মোট ২৫৪ টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর জন্য জমা পড়ে। এরমধ্য থেকে  বাছাই করে ১০৭ জন শিল্পীর মোট ১১৪ টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। এছাড়া ১৬ জন আমন্ত্রিত এবং প্রয়াত ৫ জন পথিকৃৎ ভাস্করের একটি করে ভাস্কর্যের এই প্রদর্শনীতে উপস্থাপিত হবে। এছাড়া স্বাধীনতার সুবর্ণজন্তী উপলক্ষে একটি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ভাস্কর্য কর্নার থাকবে। 
আমন্ত্রিত ১৬ জন ভাস্কর হলেন- ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান, ভাস্কর অলক রায়, ভাস্কর শামীম শিকদার, ভাস্কর আইভি জামান, ভাস্কর মজিবুর রহমান, ভাস্কর রাসা, ভাস্কর মাহবুব জামাল শামিম, ভাস্কর সাইদুল হক জুইস, ভাস্কর শেখ সাদি ভূইয়া, ভাস্কর শ্যামল চৌধুরী, ভাস্কর চৌধুরী জাহানারা পারভীন, ভাস্কর রেজাউজ্জামান রেজা, ভাস্কর মোস্তফা শরীফ আনোয়ার তুহিন, ভাস্কর মাহবুবুর রহমান, ভাস্কর প্রণবমিত্র চৌধুরী, ভাস্কর মুকুল কুমার বাড়ৈ, ভাস্কর নাসিমা হক মিতু। প্রয়াত ৫ জন পথিকৃত ভাস্কর হলেন- ভাস্কর আব্দুর রাজ্জাক, ভাস্কর আনোয়ার জাহান, ভাস্কর নিতুন কুন্ডু, ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিনী।
সূত্র  আরো জানায়, জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীতে ইতিপূর্বে ৫জন শিল্পীকে পুরস্কার দেয়া হলেও এ বছর ১৩ জন শিল্পীকে পুরস্কৃত করা হবে। পুরস্কার হিসেবে থাকবে ৫ম জাতীয় ভাস্কর্য পুরস্কার-২০২১ শ্রেষ্ঠ পুরস্কার ১টি যার মূল্যমান ২লাখ টাকা, ২য় পুরস্কার ১টি যার মূল্যমান ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ৩য় পুরস্কার ১টি যার মূল্যমান ১ লক্ষ টাকা। এছাড়াও ১০টি সম্মানসূচক পুরস্কার যার প্রতিটির মূল্যমান ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও  পুরস্কার প্রাপ্ত প্রত্যেককে একটি ক্রেস্ট ও একটি সনদপত্র দেয়া হবে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়