শিরোনাম
ঢাকা, ৬ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : আজ সারা দেশে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পবিত্র আশুরা।
এই দিনটি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন ইবনে আলী (রা.)-এর শাহাদাতের স্মরণে পালিত হয়।
আজ হিজরি ১৪৪৭ সালের মহররম মাসের ১০ তারিখ। দিনটি মুসলিম বিশ্বে ‘পবিত্র আশুরা’ নামে পরিচিত।
এই দিনটি কারবালা দিবস হিসেবে মুসলিম বিশ্বে একটি ‘শোক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা’ হিসেবে বিবেচিত। যা বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে বিশেষ ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে।
বিশ্বের মুসলিমরা আজ স্মরণ করেন হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)-এর আত্মত্যাগ। ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে ইরাকের কারবালার মরুভূমিতে ফোরাত নদীর তীরে তিনি, তাঁর পরিবার এবং ৭২ জন সঙ্গী সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ইয়াজিদ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে শহীদ হন।
শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহৎ আদর্শ রক্ষায় কারবালা প্রান্তরে তাঁদের আত্মত্যাগ মানব ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
পবিত্র আশুরার প্রাক্কালে শনিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এক বাণী দিয়েছেন।
এতে তিনি হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)সহ কারবালার অন্যান্য শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বাণীতে পবিত্র আশুরাকে এক শোকাবহ, তাৎপর্যপূর্ণ ও গৌরবময় দিন হিসেবে উল্লেখ করেন।
বাণীতে তিনি বলেন, ‘পবিত্র আশুরা পুরো মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও শোকের দিন। এই শোকাবহ দিনে আমি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) এবং কারবালার মরুভূমিতে মর্মান্তিকভাবে শাহাদাত বরণকারী সকলকে আমার গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ইসলাম সত্য, ন্যায় ও শান্তির ধর্ম। ইসলামের এই মহান আদর্শ রক্ষায় ১০ মহররম কারবালার প্রান্তরে হযরত ইমাম হোসাইন (রা.), তাঁর পরিবার ও ঘনিষ্ঠ সাহাবিরা বিশ্বাসঘাতক ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে শহীদ হন।’
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আরো বলেন, অত্যাচারী শাসকের অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ইসলামের সাহসী যোদ্ধাদের এই ত্যাগ বিশ্বের ইতিহাসে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। এটি মানবজাতিকে নিপীড়ন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় শক্তি ও সাহস জোগাবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই দিনে বিশ্ব সৃষ্টিসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে দু’টি রোজা রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই এই গৌরবময় দিনের তাৎপর্য বুঝি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য আরও বেশি সৎ কাজ করি। সমাজে সাম্য, ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এই পবিত্র আশুরার দিনে আমি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও ধারাবাহিক অগ্রগতি কামনা করি।’
পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে আজ দেশে সরকারি ছুটি।
বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো এ উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে পত্রপত্রিকা ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলোও আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।
আশুরা উপলক্ষ্যে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদ ও স্থানে পবিত্র আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।