বাসস
  ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:২৭

নাজমুলের স্পিন ভেল্কিতে প্রথম জয় সিলেটের

ঢাকা, ২৫ জানুয়ারি ২০২২ (বাসস) : বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলামের বোলিং নৈপুন্যে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অষ্টম আসরে প্রথম জয়ের দেখা পেল সিলেট সানরাইজার্স। আজ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট ৭ উইকেটে হারিয়েছে মাহমুদুল্লাহ-মাশরাফি-তামিমের মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকাকে। প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে ২ উইকেটে হেরেছিলো সিলেট। আর নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে তৃতীয় হারের স্বাদ পেলো ঢাকা। 
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন সিলেট সানরাইজার্সের অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন।
প্রথমে ব্যাট করে ১৮ দশমিক ৪ ওভারে ১০০ রানে গুটিয়ে যায়  ঢাকা। সিলেটের নাজমুল ১৮ রানে ৪ উইকেট নেন। জবাবে ১৮ বল বাকী রেখে জয় নিশ্চিত করে সিলেট। 
৯ রানের মধ্যে ঢাকার দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও আফগানিস্তানের মোহাম্মদ শাহজাদের বিদায় নিশ্চিত করেন সিলেটের দুই স্পিনার সোহাগ গাজী ও মোসাদ্দেক হোসেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই শাহজাদকে ৫ রানে থামান গাজী। আর তৃতীয় ওভারে  ৩ রান করা তামিমকে  লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেরেন  মোসাদ্দেক। 
ষষ্ঠ ওভারে আবারও উইকেট শিকারের আনন্দে মাতে সিলেট। চার নম্বরে নামা জহিরুল ৪ রান করে গাজীর দ্বিতীয় শিকার হন। এমন অবস্থায়  ১৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ঢাকা। 
সেখান থেকে দলকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কাউন্টার অ্যাটাকে ৩টি চারও মারেন মাহমুদুল্লাহ। চতুর্থ উইকেটে মোহাম্মদ নাইমের সাথে বড় জুটির গড়ার পথে ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। কিন্তু ১৩তম ওভারে ঢাকাকে জোড়া আঘাত হানেন বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম। প্রথম বলে নাইম ও ও পঞ্চম ডেলিভারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হার্ড-হিটার আন্দ্রে রাসেলকে আউট করেন নাজমুল। নাইম ৩০ বলে ১৫ ও রাসেল শুন্য রানে ফিরেন। মাহমুদুল্লাহ-নাইম ৪০ রানের জুটি গড়েন। 
নিজের দ্বিতীয় ওভারে দুই উইকেট নিয়ে ক্ষান্ত হননি নাজমুল। তৃতীয় ওভারেও ঢাকার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে শিকার করেন তিনি। ২৬ বল খেলে ৩টি চারে ৩৩ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। ৬৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে কোনঠাসা হয়ে পড়ে ঢাকা। এতে দলীয় স্কোর শতরানে যাওয়াটাই মুশকিল হয়ে পড়ে। 
৪০২ দিন পর মাঠের লড়াইয়ে ফেরা মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নিয়ে ব্যাট হাতে মারমুখী হয়ে উঠেন শুভাগত হোম। ২টি চার ও ১টি ছক্কাও হাকান শুভাগত।
নিজের শেষ ওভারে শুভাগতকেও তুলে নেন নাজমুল। ১৬ বলে ২১ রান করেন শুভাগত। ইনিংসে ৪ ওভারে ১৮ রানে ৪ উইকেট নেন নাজমুল। টি-টোয়েন্টিতে এটিই তার সেরা বোলিং ফিগার। 
ইনজুরির কারনে এবারের আসরের প্রথম তিন ম্যাচ খেলতে না পারা মাশরাফিকে ২ রানে থামান  সিলেটের পেসার তাসকিন আহমেদ। কিন্তু শেষ দিকে ৬ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ঢাকার স্কোর ১শতে নিয়ে যান পেসার রুবেল হোসেন। রুবেলকে শিকার করে ঢাকাকে কাটায় কাটায় ১শতেই গুটিয়ে দেন তাসকিন। নাজমুল ছাড়াও, সিলেটের পেসার তাসকিন ৩টি ও গাজী ২টি উইকেট নিয়েছেন। 
জয়ের জন্য ১০১ রানের লক্ষ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেন্ডন সিমন্সকে নিয়ে সিলেটের ইনিংস শুরু করেন এনামুল হক বিজয়। দলীয় ২১ রানে সিলেটের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন ঢাকার পেসার মাশরাফি। ম্যাশের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে মিড-অনে রুবেলকে ক্যাচ দেন সিমন্স। ২টি চারে ২১ বলে ১৬ রান করে আউট হন তিনি। 
এরপর মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে দলের জয়ের ভিত গড়েন আরেক ওপেনার এনামুল। সাবধানতার খেলে ৪১ বলে ৩৮ রান যোগ করেন এনামুল-মিঠুন জুটি। ৩টি চারে ১৫ বলে ১৭ রান করা মিঠুনকে শিকার করে সিলেটের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন বাঁ-হাতি স্পিনার হাসান মুরাদ। 
দলীয় ৫৯ রানে মিঠুনের আউটের পর দক্ষিণ আফ্রিকার কলিন ইনগ্রামকে নিয়ে সিলেটকে জয়ের দোড়গোড়ায় নিয়ে যান এনামুল। তবে  জয় থেকে ২ রান দূরে থাকতে মাশরাফির দ্বিতীয় শিকার হন এনামুল। মিড উইকেটে তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে  ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৫ বলে ৪৫ রান করেন এনামুল। 
শেষ পর্যন্ত ১৮ বল বাকী রেখে সিলেটকে জয় এনে দেন ইনগ্রাম ও ইংল্যান্ডের রবি বোপারা। ইনগ্রাম ১৯ বলে ২১ ও বোপারা ১ রানে অপরাজিত থাকেন। 
ঢাকার মাশরাফি ৪ ওভারে ২১ রানে ২ উইকেট নেন। হাসান ৩১ রানে নেন ১ উইকেট। 
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা : ১০০/১০, ১৮.৪ ওভার (মাহমুদুল্লাহ ৩৩, শুভাগত ২১, নাজমুল ৪/১৮)।
সিলেট সানরাইজার্স : ১০১/৩, ১৭ ওভার (এনামুল ৪৫, ইনগ্রাম ২১*, মাশরাফি ২/২১)।
ফল : সিলেট সানরাইজার্স ৭ উইকেটে জয়ী। 
ম্যাচ সেরা : নাজমুল ইসলাম(সিলেট সানরাইজার্স)।
 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়