বাসস
  ২৩ অক্টোবর ২০২১, ০৯:২৭

সাদা বলে ভারত-পাকিস্তানের ৬টি শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ

দুবাই, ২৩ অক্টোবর, ২০২১ (বাসস) : পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলমান বিশ্বকাপের ফেভারিট দল হিসেবেই মিশন শুরু করবে বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারত।
ক্রিকেটে আগামীকাল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই অন্যরকম উন্মাদনা।  আগামী ম্যাচের আগে এশিয়ার চির প্রতিদ্বন্দ্বি দুই প্রতিবেশী দলের মধ্যকার ছয়টি রোমঞ্চকর ও শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচের দিকে আলোকপাত করা যাক।
শেষ বলের ছক্কা (শারজাহ -১৮ এপ্রিল, ১৯৮৬) : মরুর ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে জাভেদ মিয়াঁদাদের শেষ বলের ছক্কাটি এখনো জ¦লজ¦ল করছে ভারতীয় সমর্থকদের মনে। কারণ নাটকীয় ওই ফাইনালে তাদের হৃদয় ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছিল ওই ছক্কা। ম্যাচে এক উইকেট জয়লাভ করে পাকিস্তান।
ম্যাচটি জয়ের জন্য পাকিস্তানের টার্গেট ছিল ২৪৬ রান। দলটি ৬৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলার পর মাঠে নেমে মিয়াঁদাদ ১১৪ বলের অপরাজিত ১১৬ রান করেন। ম্যাচের শেষ বলে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল চার রান। ভারতীয় ফাস্ট বোলার চেতন শর্মার ফুলটস বলটি সোজা গ্যালারিতে পাঠিয়ে দেন পাক ব্যাটসম্যান।  
টেন্ডুলকার নৈপুণ্য (সেঞ্চুরিয়ান -১ মার্চ ২০০৩) : ভারতকে বহু ম্যাচ জিতিয়েছেন লিটল মাস্টার শচিন টেন্ডুলকার। কিন্তু ৫০ ওভারের ওয়ানডে বিশ^কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে তার করা ৯৮ রানের ইনিংসটি এখনো স্মরনীয় হয়ে আছে পাকিস্তানের গতিদানব শোয়েব আক্তারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে।
২৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস ও শোয়েব আখতারের মত আগ্রাসী বোলিং লাইন আপের বিপরীতে শচিনের ৭৫ বলের ওই ব্যাটিং ভারতকে পৌঁছে দিয়েছিল জয়ের বন্দরে।     
আখতারের অসাধারণ গতির একটি বল মাস্টার ব্লাস্টর শচিনের আপার কাটের মাধ্যমে থার্ডম্যান অঞ্চল দিয়ে ছয় হাকানোর ঘটনাটি এখনো তার কাছে স্মরনীয় হয়ে আছে। শেষ পর্যন্ত শচিনের উইকটটি অবশ্য দখল করে প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হয়েছিলেন শোয়েব আখতার। কিন্তু ততক্ষনে ক্ষতি যা হবার হয়ে গেছে।
বোল আউট নাটক (ডারবান- ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৭) : টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম আসরে গ্রুপ পর্বে ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচটি টাই হয়। ভারতের মত পাকিস্তানও সংগ্রহ করেছিল ১৪১ রান।
কিন্তু আকর্ষনীয় বোল আউট প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করে ভারত। দুই দলের ৫জন করে খেলোয়াড়কে নেয়া হয় অপর প্রান্তের স্টাম্পে বল লাগানোর জন্য। এই সময় ভারতীয় অধিনায়ক এমএস ধোনি তার দলে বেছে নেন অনিয়মিত স্লো বোলারদের। সফলও হন তিনি। পাকিস্তানের পেসাররা স্টাম্প ভাংতে ব্যর্থ হলেও ভারতের সব বোলারই বল স্টাম্পে লাগাতে সক্ষম হন।
পরে অবশ্য এই বোল আউট পদ্ধতি বাতিল করে সুপার ওভার প্রবর্তন করা হয়েছে।
মিসবাহ’র হৃদয় ভেঙ্গে যাওয়া (জোহানেসবার্গ- ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৭):  ১০দিন পর দল দুটি শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল দর্শকে ঠ্সাা স্টেডিয়ামে। এই সময় ১৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে পাকিস্তান মাাত্র ৭৭ রানে হারিয়ে বসে ৬টি উইকেট। তবে একপাশ আগলে রেখে মিসবাহ পাকিস্তানের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। ম্যাচটিকে তিনি নিয়ে যান শেষ  ওভার পর্যন্ত।
এই সময় যোগিন্দার সিংয়ের শেষ ওভার থেকে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে দেন মিসবাহ। পরের বলে স্কুপ শট খেলতে গিয়ে সেটি উপরে উঠে যায়। আর আছড়ে পড়ে শান্তকুমারন শ্রীশান্তের হাতে। যা ভেঙ্গে দেয় মিসবাহর হৃদয়কে।
প্রফেসরের ভুমিকা (ব্যাঙ্গালোর-২৫ ডিসেম্বর, ২০১২): অধিনায়ক মোহাম্মদ হাফিজের বিশেষ প্রচেস্টায় দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে টি-২০ ফর্মেটে একমাাত্র জয়টি লাভ করেছিল পাকিস্তান।
ভারতের বিপক্ষে জয়ের জন্য ১৪৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে মাত্র ১২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় পাকিস্তান। এই সময় ভুবনেশ^র কুমার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন উমর আকমলকে।
পরে ‘প্রফেফসর’ খেতাব ধারী হাফিজ শোয়েব মালিককে নিয়ে ১০৬ রানের যোগাান দেন। যেখানে তার সংগ্রহ ছিল ৫৭ রান। ফলে দুই বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। তবে টি-২০ ক্রিকেটের পাকিস্তানের বিপক্ষে হেড টু হেডের বিচারে ভারত এগিেেয় আছে ৭-১ ব্যবধানে।
জামান ক্লাসিক (লন্ডন-১৮ জুন ২০১৭): আন্ডর ডগ হিসেবে খেলতে এসে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠে যায় পাকিস্তান। ভারতের বিপক্ষে ওভালে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ফখর জামানের ঝড়ো  সেঞ্চুরিতে ভর করে পাকিস্তান চার উইকেটে সংগ্রহ করে ৩৩৮ রান। জামান সতীর্থ আজহার আলীর সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে সংগ্রহ করেন ১২৮ রান। তিনি নিজে ১০৬ বলের মোকাবেলায় করেন ১১৪ রান। যার ফলে সহজেই বিরাট কোহলির ভারতকে হারাতে সক্ষম হয় পাকিস্তান।
ভুবনেশ^র কুমার ও জস্প্রিত বুমরাহকে বাঁ হাতি জামান পাড়া মহল্লার বোলার বানিয়ে হাকিয়েছেন ১২টি চার ও তিনটি ছক্কা। জবাবে মাত্র ১৫৮ রানে ভারতকে আটকে দেয় পাকিস্তানী বোলাররা।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়