বাসস
  ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ২০:০০
আপডেট  : ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ২০:০২

শেখ হাসিনার পরিবেশবান্ধব সামুদ্রিক শিল্প উদ্যোগের জন্য আইএমওতে সহায়তা কামনা নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর

ঢাকা, ২ ডিসেম্বর, ২০২২ (বাসস) : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব মেরিটাইম শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগের প্রতি আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) এবং প্রধান মেরিটাইম অংশীদারদের সহায়তা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ এখানে প্রাপ্ত লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লন্ডনে আইএমও সদর দফতরে অনুষ্ঠিত ১২৮তম আইএমও কাউন্সিলে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত 'বাংলাদেশ মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রির ৫০ বছর: দ্য রোড টু ডিকার্বনাইজেশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব মেরিটাইম শিল্পে উত্তরণের জন্য, বাংলাদেশ, ল্যান্ডলকড ডেভেলপিং কান্ট্রি (এলএলডিসি) এবং উন্নয়নশীল ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর (এসআইডিএস) এ ক্ষেত্রে আইএমও ও প্রধান মেরিটাইম অংশীদারদের আর্থিক, প্রযুক্তিগত ও জ্ঞান সহায়তা প্রয়োজন।’
২০২৩ সালের মধ্যে হংকং কনভেনশন অনুসমর্থন করার জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে নিরাপদ ও পরিবেশগতভাবে দায়িত্ব¡শীল জাহাজ পুনর্নির্মাণে আইএমও ও এর এসইএনএসআরইসি প্রকল্প ফেজ-৩-’র সাথে অংশীদারিত্ব করছে; এবং ইতিমধ্যে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় জাহাজ পুনর্নির্মাণকারী দেশ হিসাবে ইস্পাত ব্যবহার হ্রাস, পুনর্ব্যবহার এবং রিসাইক্লিং করে বৈশ্বিক কার্বন হ্রাসকরণে অবদান রেখেছে।’
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও আইএমও-তে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি সাইদা মুনা তাসনিম তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, জলবায়ু-বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার প্রাথমিক আইএমও জিএইচজি হ্রাস কৌশল অনুসারে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের নৌপরিবহন খাতের ডিকার্বনাইজেশনের জন্য লক্ষ্য ও অভিলক্ষ্য  নির্ধারণ করেছে।’
আইএমও-তে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আঙ্কটাড রিপোর্টসহ কিছু গবেষণার উদ্ধৃতি দেন যাতে প্রমাণিত হয় যে, অন্যতম প্রধান জাহাজ পুনর্ব্যবহারকারী দেশ হিসাবে বাংলাদেশ একাই প্রতি মেট্রিকটন পুনর্ব্যবহারযোগ্য ইস্পাতে প্রায় ২০০০ কেজি কার্বন ডাই অক্স্রাইড হ্রাস করে, যা সামুদ্রিক শিল্পে ডিকার্বনাইজেশন প্রয়াসে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
তিনি আইএমও’র প্রতি দেশের সরকারি ও বেসরকারি শিপিং খাতে সবুজ জাহাজ চলাচলের জন্য নতুন প্রযুক্তি প্রবর্তনে বাংলাদেশের মেরিটাইম সেক্টরের জন্য পাইলট প্রকল্প শুরু করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে আইএমও মহাসচিব কিট্যাক লিম বাংলাদেশের জাহাজ পুনর্ব্যবহার, পরিবেশগত এবং নিরাপত্তার মান উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশের শিপিং শিল্পে পরিবেশবান্ধব উত্তরণের জন্য আইএমও-এর অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে নৌপরিবহন, বন্দর ও জলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং আইএমও কাউন্সিলে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান ড. সঞ্জীব রঞ্জন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জল সংযোগ সম্পূর্ণ পুনঃস্থাপনের আহ্বান জানান, যা ডিকার্বনাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হবে।
তিনি দুই বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশীর মধ্যে সংযোগ পুনঃস্থাপনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছেন সেজন্য তিনি তার প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মো. নিজামুল হক পরিবেশবান্ধব শিপিং শিল্প অর্জনে বাংলাদেশের রোডম্যাপ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
লন্ডনে আন্তর্জাতিক সংস্থায় ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মার্কো ফারানি, আইএমও-তে জাপানের বিকল্প স্থায়ী প্রতিনিধি কোহেই আইওয়াকি, যুক্তরাজ্যে শ্রীলঙ্কার ডেপুটি হাইকমিশনার সামান্থা পাথিরানা এবং আইএমওর ডেপুটি ডিরেক্টর তিয়ান বিং হুয়াং প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের পরে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল মধ্যাহ্নভোজ সংবর্ধনার আয়োজন করে। প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালের আইএমও নির্বাচনে মহাসচিব পদে মঈন আহমেদকে বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়