।। কামাল আতাতুর্ক মিসেল।।
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ (বাসস) : জেলায় জনশক্তি রপ্তানীতে গতি ফিরেছে। গত দুই বছরে করোনা ভাইরাসের সংকট কাটিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানীতে আবারো সরূপে ফিরে এসেছে কুমিল্লা জেলা ।
কুমিল্লা জেলা জনশক্তি রপ্তানি কার্যালয় সূত্র বলছে, ২০১৯ সালে মহামারি করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর মুখ থুবড়ে পরে বাংলাদেশের শ্রমবাজার। ফলে জনশক্তি রপ্তানীর গতি কমে আসে। তবে ২০২১ সালে ধীরে ধীরে আলোর মুখ দেখতে শুরু করে জনশক্তি রপ্তানী। যা পুরো বছর জুড়েই গতিতে ছিলো। ফলে মহামারির আগের সময়ের গতিতে ফিরেছে। কুমিল্লা জেলা থেকে এবছরের আগষ্ট মাস পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানী হয়েছে ৫০ হাজারেরও বেশি। নতুন করে শ্রমবাজার না খুললেও পুরনো বাজার থেকেই চাহিদা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ২০২১ সালে রপ্তানী হয়েছে ৬৮ হাজার ১৬৭ জন, ২০২০ সালে ২৪ হাজার ১৮৯ জন ও ২০১৯ সালে ৬৫ হাজার ৯৪১ জন। কার্যালয়ের প্রধান জানান, প্রতিবছর কুমিল্লা জেলা থেকে ১৩শ’ থেকে ১৪শ’ মিলিয়ন ডলার দেশে আসছে। অর্থাৎ প্রতিমাসে এ জেলার প্রবাসীরা ১শ’ মিলিয়ন ডলার দেশে পাঠাচ্ছেন। কুমিল্লার বেশির ভাগ প্রাবসীরা চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, দাউদকান্দি ও সদর উপজেলার। এছাড়া অন্যান্য উপজেলার প্রবাসীরাও উল্লেখযোগ্য পরিমানে বৈদেশিক মূদ্রা পাঠিয়ে থাকেন।
জনশক্তি খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাওয়ায় অনেক দেশেরই অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। যে কারণে কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এছাড়া খুলতে যাচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারও। সব মিলিয়ে নতুন বছরে জনশক্তি রপ্তানীআরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে নারী জনশক্তি রপ্তনী ও আগের বছরগুলোর চেয়ে বেড়েছে। ২০২২ সালের আগষ্ট পর্যন্ত এই জেলা থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ১২ শতাংশ নারী কর্মী কাজ নিয়ে বিদেশে গেছেন। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীদের কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তা দিতে পারলে আরও অধিক সংখ্যক কর্মী শ্রমবাজারে পাঠানো সম্ভব। তাই নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সচেতনতা অভিযান পরিচালনা করছে কুমিল্লা জেলা শ্রম ও জনশক্তি রপ্তানী কার্যালয়।
জেলা শ্রম ও জনশক্তি রপ্তানী কার্যালয়ের প্রধান দেবব্রত ঘোষ বাসসকে বলেন, অভিবাসন প্রক্রিয়ায় নারী অভিবাসন একটি গুরুত্বপূর্ন সংযোজন। নিরাপদ, নিয়মিত, সুশৃঙ্খল এবং দায়িত্বশীল অভিবাসন নিশ্চিতকরণ, মানব পাচার রোধ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রক্রিয়ায় মধ্যসত্বভোগীদের দৌরাত্ব নিরসন, উচ্চ অভিবাসন ব্যয় হ্রাস, অভিবাসী কর্মীর অধিকার সুরক্ষা, অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিশ্চিতকরণে বর্তমান সরকারের সচেষ্ট রয়েছে। জেনে বুঝে, প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ হয়ে বিদেশ গেলে, অর্থ-সম্মান দুটোই পাওয়া যাবে বলে উল্লেখ করে বলেন, পড়াশুনা কিংবা প্রশিক্ষণ ছাড়া এ সময়ে এসে প্রবাসে গমণ করে লাভবান হবার সুযোগ কম। পৃথিবীর সব দেশই এখন দক্ষতার মূল্যায়ন করে। অদক্ষ লোকদের কেউই এখন আর চাচ্ছে না। তাই এখন যেসবই জনশক্তি আমদানি করবে তারা আগে দক্ষতাকে প্রাধাণ্য দিবে। তাই বাংলাদেশ থেকে উপার্জনের উদ্দেশ্যে বিদেশ যেতে চাইলে আগে প্রশিক্ষিত হওয়া জরুরী। তাই আমরা আমাদের দপ্তর থেকে ১২ মাসই নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি।