বাসস
  ০৭ জুলাই ২০২২, ১১:০৯

খাদ্য উদ্বৃত্ত উপজেলা টুঙ্গিপাড়া

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ৭ জুলাই, ২০২২ (বাসস) : খাদ্যে উদ্বৃত্ত উপজেলা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা। এ উপজেলায় এ বছর বোরো মৌসুমে ৮ হাজার ৩০৫ মেট্রিক টন চাল উদ্বৃত্ত উৎপাদিত হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ ও বাম্পার ফলনের কারণে এ বছর উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদিত হয়েছে বলে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  জানিয়েছেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, বোরো মৌসুমে টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৮ হাজার ৪ শ’ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে কৃষক ৮ হাজার ৯ শ’ হেক্টর জমিতে বোরো ধনের আবাদ করেন। চালের হিসেবে টুঙ্গিপাড়ায় ৩৩ হাজার ৩০৫ মেটিক টন চাল উৎপাদিত হয়েছে। বছরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় চালের চাহিদা ২৫ হাজার মেট্রিক টন। সে হিসাবে টুঙ্গিপাড়ায় ৮ হাজার ৩০৫ মেট্রিক টন চাল উদ্বৃত্ত উৎপাদিত হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জমি অত্যন্ত উর্বর। এ উপজেলার জমিতে প্রচুর আর্গানিক উপাদান রয়েছে। এখানে সব ধরণের ধান প্রত্যাশা থেকেও বেশি ফলে। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৫ শ’ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। এসব কারণে উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদিত হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, বিএডিসির এলএল-৮ জাতের ধানের  উৎপাদন ক্ষমতা প্রতি হেক্টরে ৭/৮ টন। কিন্তু টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় এ ধানের সর্বোচ্চ ফলন ৯/১০ টন পর্যন্ত পাওয়া গেছে। হিরা হাইব্রিড ধানের ফলন ধরা আছে হেক্টরে ৮ টন। টুঙ্গিপাড়ায় এ ধানের ফলন পাওয়া গেছে ১১ টন । এছাড়া ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ব্রি হাইব্রিড ধান ,ব্রিধান-৬৭, বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ সহ ব্রি’র বোরো মৌসুমের সব জাত সর্বোচ্চ ফলন দিয়েছে। বোরো ধান কর্তন মৌসুমে ঝড় বৃষ্টিতে অন্তত ১ ভাগ ধান নষ্ট হয়েছে। ধান নষ্ট না হলে উৎপাদন আরো বেশি হত। ধানের বেশি ফলন পেয়ে টুঙ্গিপাড়ার কৃষক লাভবান হচ্ছেন। সেই সাথে তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে। বোরো সৌমুমের উৎপাদিত ধানের টুঙ্গিপাড়া খাদ্য উদ্বৃত্ত উপজেলা। এছাড়া এখানে গম, আউশ ও আমন ধানের চাষাবাদও হয়।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমরিয়া গ্রামের কৃষক কবির আলম তালুকদার (৫২) বলেন, আমি আমার ২৫ বিঘা জমিতে হাইব্রিড, ইনব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান আগাম চাষ করে ছিলাম। প্রতিটি জাতের ধানের ফলন প্রত্যাশা থেকে বেশি ফলেছে। ঝড় বৃষ্টির আগেই ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরেছি। তাই ধানের কোন ক্ষতি হয়নি।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী গ্রামের কৃষক আজিজ সরদার (৫৪) বলেন, আমার ১০ বিঘা জমিতে ধানের ফলন ভালো হয়েছিলো। কিন্তু ধান কাটা মৌসুমে কৃষাণ সংকট ছিল। এ কারণে ঝড় বৃষ্টিতে কিছু ধান নষ্ট হয়েছে। তারপরও খাবার ধান ঘরে রেখে অতিরিক্ত ১ শ’ মণ ধান বিক্রি করেছি। কৃষিকে যান্ত্রিকী করণ করা হলে শ্রমিক সংকট মিটে যাবে। প্রকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে ফসল রক্ষা করা সম্ভব হবে। আমরা ধান চাষ করে আরো বেশি লাভবান হতে পারব। 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়