বাসস
  ২৫ জুন ২০২২, ০৯:৩৩

পদ্মা সেতু: উদ্বোধনী জনসভায় শরীয়তপুরের লাখো মানুষের স্বপ্ন যাত্রা

শরীয়তপুর, ২৫ জুন, ২০২২ (বাসস): শরীয়তপুরসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা ছাড়াও সারা বাংলার স্বাধীনতা পরবর্তী গৌরবময় অনন্য কৃতিত্বপূর্ণ অর্জন কোটি বাঙ্গালীর প্রাণের স্পন্দন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন’কে ঘিরে শরীয়তপুরের ১৩ লাখ মানুষের মধ্যে সাজ-সাজ আনন্দমুখর পরিবেশ বিরাজমান। গৌরবময় মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী হতে জেলার দুই লক্ষাধিক আওয়ামী পরিবারের সদস্যসহ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের আগ্রহের মাত্রা ভিন্নতর। পদ্মা সেতুর গৌরবময় অংশীদার হিসেবে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের ভিটে-মাটি হারানো মানুষের চোখে-মুখেও এখন কেবলই আনন্দের ঝিলিক। সেতু উদ্বোধনী জনসভায় অংশগ্রহণ করে ইতিহাসের অংশ হতে নানা সাজে বাদ্য যন্ত্রের তালে তালে তাইতো তাদের ছুটে চলা জনসভাস্থলের দিকে। 
জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌকিদার বলেন, জাজিরা উপজেলার সকল বয়সের মানুষ প্রধানমন্ত্রী’কে একনজর দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন। তিন হাজারেরও বেশি মোটর সাইকেল, একশত বাস, চল্লিশটি লঞ্চ ও দুই শতাধিক ট্রলার যোগে যাত্রা করেছি বাংলাবাজার জনসভাস্থলে। সকাল ৬টায় জাজিরা উপজেলা সদর থেকে মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা, বাস, ট্রাকে করে বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে আমরা ছুটে চলেছি। শেষ রাত থেকেই লঞ্চ ও ট্রলার যোগে মানুষ চলছে জনসভায় যোগ দিতে। জাজিরা উপজেলার শিশু ও বৃদ্ধ বাদে সকলেই জনসভায় যোগ দেবে ইনশাআল্লাহ্। আমরা আশাবাদী জাজিরা উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ জনসভায় যোগ দিয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে যাবো।
শরীয়তপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সুমন বলেন, আর কিছু সময়ের মধ্যেই আমরা হতে যাচ্ছি বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন পরবর্তী জনসভায় উপস্থিত হয়ে তিনি যেমন বাংলাদেশের গৌরবমময় ইতিহাস রচনা করবেন, তেমনি আমরাও হয়ে যাবো মাহেন্দ্রক্ষণের গর্বিত সাক্ষী। আবেগতাড়িত হয়ে গতরাতে আমরা আওয়ামী পরিবারের লোক ঘুমাতে পারিনি। আগের নির্দেশনা অনুযায়ী ভোররাত থেকেই আমরা জড়ো হতে থাকি শরীয়তপুর শিল্পকলা একাডেমী মাঠে। শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য ইকবাল হোসেন অপু’র পরিকল্পনা এবং নির্দেশনা অনুযায়ী সুশৃঙ্খলভাবে পাঁচ হাজার মোটর সাইকেল শোভাযাত্রার মাধ্যমে সুসজ্জিত হয়ে সকাল ছয়টায় জনসভাস্থলের দিকে রওয়ানা করি। আমাদের বহরে বয়ষ্কদের জন্য বাস, মাইক্রোবাস ও ট্রাকে করে বাদ্যযন্ত্রের তালে-তালে শুরু করি স্বপ্ন যাত্রার। এ যেন শরীয়তপুরের অর্থনৈতিক মুক্তির শুভ উদ্বোধন। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলার আরেক যাত্রার উদ্বোধন করলেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা বিশ^ উন্নয়নের অন্যতম সাহসী অগ্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। 
পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার আবেগাপ্লুত হয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, এই পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের জন্য ১৯৮৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার’র অনুপ্রেরণা, সাহস ও পরামর্শে শরীয়তপুরসহ দক্ষিণ বঙ্গের ২১ জেলার গুটি কয়েক মানুষকে নিয়ে প্রথম পথচলা শুরু করি। শুরুর দিকে এ অসম্ভব বিষয়কে বাস্তবায়নের দাবি তোলায় তখন অনেকেই আমাকে পাগল আখ্যায়িত করেছিলেন। সময়ের ব্যবধানে আজ যখন আমি সেই ইতিহাসের অংশীদার হতে যাচ্ছি এ আনন্দ ও তৃপ্তি প্রকাশের ভাষা আমার নেই। আমি শুধু বঙ্গবন্ধু’র সাহসী কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা’কে কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। শত প্রতিকূলতাও চক্রান্তের জাল ছিন্ন করে তিনি শরীয়তপুরসহ দক্ষিণ বঙ্গের কোটি মানুষের উন্নয়নের প্রবেশদ্বার উন্মুক্ত করবেন আর কিছুক্ষণ পর। আমার জীবদ্দশায় সেই মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়