মাগুরা, ৩ এপ্রিল, ২০২২(বাসস) : জেলায় এ বছর পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকরা এখন ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি জমিতে পেঁয়াজের চাষ করছেন কৃষকরা। এ বছর জেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে। সেখানে চাষ কৃষকরা চাষ করছেন ১১ হাজার ৯৮৪ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলানায় ১ হাজার ৬১৪ হেক্টর বেশি। জেলার চার উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ চাষ হয়েছে শ্রীপুরে। এ উপজেলায় ৬ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এছাড়া সদর উপজেলায় ১ হাজার ২০৫ হেক্টর, শালিখায় ৬৯০ হেক্টর ও মহম্মদপুর উপজেলায় ৩ হাজার ৩৯৪ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। চাষকৃত জমিতে থেকে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৩৮৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
চলতি মৌসুমে কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল, লাল তীর কিং, তাহেরপুরী(বারি-১), মেটাল কিং ও লাল তীর কিং হাইব্রিড জাতের পেঁয়াজ চাষ করছেন। পেঁয়াজ চাষ সফল করতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সুষম সার ব্যবহার, জমিতে সেচ দেয়ার পর সেচের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা ছাড়াও রোগ ও পোঁকামাকড় দমনে বালাই নাশক ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে । এছাড়া সময়মত কৃষকরা পেঁয়াজ শেষ করতে পারায় ফলন বেশ ভালো হয়েছে। বিশেষত লাল তীর কিং ও তাহেরপুরী পেঁয়াজ বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায়। এতে কৃষরা পরবর্তী সময়ে ভালো দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন।
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক কুতুবউদ্দিন জানান, এ বছর তিনি ২ একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল লাল তীর কিং জাতের পেঁয়াজের চাষ করছেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগ পেঁয়াজ চাষে তাকে নানা পরমর্শ দিয়ে সহযোগিতা করায় ভালো ফলন পেয়েছেন । চাষকৃত জমি থেকে প্রায় ৩০০ মন পেঁয়াজ পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। মৌসুমের শুরুতে উঠানো পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা কম বলে দাবি করেন তিনি। বর্তমানে জেলার পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা মণ দরে। তবে রমজান মাসের পর আরো ভালো দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পাবেন বলে আশা করছেন এ কৃষক।
এলাকার অপর কৃষক মুন্সী ওমর আলী জানান, ২ একর জমিতে লাল তীর কিং জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনিও প্রায় ৩০০ মণ পেঁয়াজ পাওয়ার পাশাপাশি ভালো দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ জানান, জেলায় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শকে কাজে লাগিয়ে কৃষকরা ভালোভাবে পেঁয়াজ চাষ করতে পেরেছেন। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। ভালো দামে কৃষকরা পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।