ঢাকা, ১৬ মে, ২০২২ (বাসস) : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, যেসব সরকারি সংস্থার আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে তাদেরকে এডিস নিয়ন্ত্রণে নিজ নিজ আবাসন কেন্দ্রিক জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে, নইলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সকলের লক্ষ্য ঢাকাবাসীকে এডিস মশার বিস্তার থেকে মুক্ত রাখা, ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে মুক্ত রাখা। এটা তখনই সম্ভব হবে যখন এটাকে একটি সামাজিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো। সিটি কর্পোরেশনের করণীয় কাজের বাইরে সকল সংস্থার যথাযথ দায়িত্বশীল ভূমিকা ছাড়া এটা সম্পূর্নরূপে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তাই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সকল অংশীজন ও যে সব সরকারী সংস্থার আবাসন রয়েছে তাদের যথাযথ ভূমিকা প্রয়োজন। কিন্তু আমরা দেখি যে, এ ব্যাপারে অনেক সময় সরকারি সংস্থাগুলো যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন না। সেজন্য সরকারি সংস্থাগুলোকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, নইলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো।’
আজ বিকেলে নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।
নির্মাণাধীন ভবন ৪০ শতাংশ ডেঙ্গু সংক্রমণের জন্য দায়ী উল্লেখ করে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘নির্মাণাধীন ভবনগুলো আমাদের মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করছে। আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছি, ক্ষেত্রবিশেষে জরিমানাও করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরও আবাসন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোনও ধরনের দৃশ্যমান উদ্যোগ বা কার্যক্রম আমরা দেখছি না। আপনারা যদি এডিস মশার প্রজননস্থল সৃষ্টি হয় এমন পরিবেশের উন্নতি না করেন, তাহলে আগামীদিনে শুধু জরিমানাই করব না, আপনাদের ভবন নির্মাণ কার্যক্রমই বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ এ সময় মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিগত সচেতনতা বৃদ্ধি করতে তিন দিনের পরিবর্তে ‘নিয়মিত প্রতিদিন, জমা পানি ফেলে দিন’ কর্মসূচির আহ্বান জানান।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার মতবিনিময়ে অংশ নিয়ে বলেন, ‘কিউলেক্স মশার ক্ষেত্রে সিটি কর্পোরশনকে দায়ী করা গেলেও এডিস মশার ক্ষেত্রে তা করা যায় না। কারন, এডিস মশা বাড়িতে জন্মায়। সেজন্য এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিগত সচেতনতা জরুরি। তাই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আমাদেরকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
মতবিনিময় সভায় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর, কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর সিতওয়াত নাঈম, রাজউক (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) সদস্য মো. শফিউল হক, বিজিবি সদর দপ্তরের ডাইরেক্টর (সিএমএসডি) লে. কর্নেল নূরজাহান আক্তার, ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান, উপ-পুলিশ কমিশনার (ওয়েলফেয়ার ফোর্স) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূইয়া, কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কমিটির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. ইকরামুল হক, রিহ্যাবের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী সোহেল রানা, বাংলাদেশ রেলওয়ে, গণপূর্ত অধিদপ্তর, উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং, আইইডিসিআর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।