বাসস
  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৫৬
আপডেট  : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:২৩

আধুনিক স্থাপত্য শৈলীর দৃষ্টি নন্দন গোপালগঞ্জ ঈদগাহ

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ (বাসস) : জেলা শহরের পাঁচুড়িয়ায় আধুনিক স্থাপত্য শৈলীর দৃষ্টি নন্দন ঈদগাহ শহরের সৌন্দর্য বর্ধণ করেছে।
ইসলামি স্থাপত্যের আদলে কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। পাঁচ এক জমির ওপর অধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এই ঈদগাহ নির্মাণে ব্যায় হয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার বিভাগের অর্থায়নে দৃষ্টিনন্দন এই ঈদগাহের নির্মাণ কাজ চলতি বছরের এপ্রিলে শেষ হয়েছে।
গত ঈদ-উল ফিতর ও ঈদ-উল আযহায় গোপালগঞ্জের ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে এই ঈদগাহ মাঠে। সৌন্দর্য মন্ডিত সুবিশাল এই ঈদগাহে প্রতিদিনই বিভিন্ন বয়সের মানুষ ঘুরতে আসেন। এছাড়া স্বাস্থ্যসচেতনরা এখানে সকাল-বিকাল ও সন্ধ্যায় হাঁটা-চলা করেন। এটি এখন জেলা শহরের একটি অন্যতম আকর্ষণীয় খোলা প্রান্তরে পরিনত হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এহসানুল হক জানিয়েছেন, গোপালগঞ্জ শহরের প্রাণ কেন্দ্রে সার্বজনীন সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টি নন্দন ঈদগাহটি নির্মাণ করা হয়েছে। ঈদগাহের সম্মুখভাগে সুদৃশ্য মেহরব করা হয়েছে। মেহেরাব ঈদগাহের সৌন্দর্যকে ফুঁটিয়ে তুলেছে। মূল মেহরাবের মেইন অর্চের উচ্চতা ১২ দশমিক ৫৫০ মিটার। ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশের জন্য সুউচ্চ মনোরম গেটে রাখা হয়েছে ৪টি প্রবেশ পথ।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ঈদগাহে একটি অজুখানা, অফিস রুম, পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা ওয়াশ রুম ও স্টোর রুম  হয়েছে। ঈদগাহে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য মাঠের চারিদিকে ১৭টি ক্যাচ বেসিনসহ ৪৫৫ মিটার পাইপ লাইনের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। বড় ধরনের বৃষ্টি হলেও কিছুক্ষণ পরে নামাজ আদায় করা যাবে এ ঈদগাহ ময়দানে।
ঈদগাহ সম্পর্কে ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ঈদগাহের ভেতরের মাঠে রয়েছে সবুজ ঘাস, চারিদিকে রয়েছে হাঁটার জন্য প্রশস্ত পথ। রাতে ঈদগাহের চারপাশের প্রতিটি পিলারে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। এছাড়া বাহারী বৃক্ষ রোপণ করে এটিকে সুসজ্জিত করা হয়েছে। এউ ঈদগাহ ময়দানে এক সঙ্গে ৫০ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
গোপালগঞ্জ শহরের কোর্ট মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল ফিতর ও পবিত্র ঈদ-উল আযহায় বড় জামাতে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। তাই এ বছর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে জেলার মানুষ এখানে দু’টি ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।
শহরের পাচুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা লিয়াকত আলী বলেন, গোপালগঞ্জের  আধুনিক এই ঈদগাহ ইসলামিক স্থাপত্য শিল্পের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন এ ঈদগাহ দেখতে আশপাশের জেলা থেকে লোকজন ছুটে আসছেন। ঈদগায়ের সৌন্দর্য ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণ করছে। তাই এই স্থাপনাটি অনন্য মুসলিম ঐতিহ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেছে।
শহরের পাঁচুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মীর সাদেক বলেন, গত  ঈদ-উল আযহায় এখানে বাগেরহাট, নড়াইল, পিরোজপুর জেলার মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। প্রথম এসে অনেক দর্শনার্থী অবিভূত হন। তারা এই ঈদগাহর প্রশংসা করেন। শহরের স্বাস্থ্য সচেতনরা সকাল-বিকাল এখানে হাটা-চলা করে শরীর সচল রাখেন। এটি শহরের একটি অন্যতম আকর্ষনীয় স্পর্টে পরিনত হয়েছে।
শহরের স্বাস্থ্যসচেতন কামরুজ্জামান বলেন, এটি শহরের মধ্যে একটি খোলা প্রান্তর। এখানে হাঁটার জন্য প্রশস্ত রাস্তা রয়েছে। সেই সঙ্গে মনোরম পরিবেশ এখানে বিরাজ করছে। ঈদগাহের মধ্য দিয়ে কোন যানবাহন চলাচল করে না। তাই নিরাপদে এখানে শরীর চর্চা করা যায়। এমন সুন্দর একটি স্থাপনা গোপালগঞ্জে করে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গোপালগঞ্জ সদর আসনের এমপি শেখ ফজলুল করিম সেলিম ভাইকে ধন্যবাদ জানাই।
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, নব নির্মিত ঈদগাঁহটি গোপালগঞ্জ শহরের শোভাবর্ষণ করেছে। এই স্থাপনাটি জেলা শহরকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এটি মানুষের ইমশনের একটি জায়গায় পরিনত হয়েছে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়