বাসস দেশ-৪৮ : ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে : কৃষিমন্ত্রী

296

বাসস দেশ-৪৮
কৃষিমন্ত্রী-সভা
ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে : কৃষিমন্ত্রী
ঢাকা, ১৯ মার্চ, ২০১৯ (বাসস) : কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক দেশে জনসংখ্যার মাথাপিছু ভোজ্য তেলের ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে দেশীয় ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সরিষা বা তেলবীজ চাষ সম্প্রসারণ ও ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ’-শীর্ষক এক সভায় কৃষিমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।
সভায় কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, সংস্থার প্রধানগণ ও কৃষি বিজ্ঞানী, গবেষক ও কৃষিবিদগণ এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকগণ উপস্থিত ছিলেন।
ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তৈল বীজ আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশে তৈলবীজ চাষের এলাকা বৃদ্ধি ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে সব ধরণের সহায়তা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী নতুন নতুন তৈল বিজের জাত উদ্ভাবন করে ব্যাপকহারে আবাদ করে ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে। এক সময় ভোজ্য তেল হিসেবে সরিষাই প্রধান ছিল। সরিষা শুধু তেলই নয় এ থেকে পুষ্টি সমৃদ্ধ খৈল পাওয়া যায়, যা আমাদের মৎস্য ও পশু খাদ্য হিসেবে বেশ চাহিদা রয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ গড়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ গ্রাম করে তেল খায়। আমাদের চাহিদার মধ্যে ৪৬ দশমিক ২১ লাখ মেট্রিক টন আমদানি করতে হয়, টাকায় মোট ৩ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। আমাদের দেশে তেল ফসলের মধ্যে সরিষা, চীনাবাদাম, তিল, তিসি, সয়াবিন ও সুর্যমূখী প্রভৃতি চাষ হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে আবাদী জমির মাত্র ৪ ভাগে তৈল ফসলের আবাদ হয়ে থাকে। দেশে সামান্য পরিমান সয়াবিন উৎপন্ন হয় তা দিয়ে খৈল তৈরী করে হাস মুরগী ও মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরিষায় বীজে ৪০-৪৪ ভাগ তেল ও ৪০ ভাগ আমিষ সমৃদ্ধ খৈল পাওয়া যায়। বারি এ যাবত ৪৪টি ও বিণা ২৮ উচ্চফলনশীল তেল বীজ জাত উদ্ভাবন করেছে।
তিনি বলেন, ধানের কুঁড়া থেকে তৈরি ভোজ্য তেল (রাইস ব্রান অয়েল)-এর চাহিদা দেশে ক্রমেই বাড়ছে। নতুন ৬ টি প্রতিষ্ঠানও এ খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে, গত বছরে তারা ১ দশমিক ১৮ লাখ মে. টন তেল উৎপাদন করে। দেশে ৫ কোটি টন ধান থেকে ৮ শতাংশ কুড়া এবং কুড়া থেকে ২০-২৫ শতাংশ তেল পাওয়া যায়। সয়াবিন তেলের পাশাপাশি মানুষ এখন এই তেলের দিকে ঝুঁকছেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, তৈলবীজ উৎপাদন বৃদ্ধিতে মাঠ পর্যায়ে সরিষার আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিতে হবে। এ ছাড়া কৃষকদের উন্নত বীজ সরবরাহ করা, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা ও কৃষি উপকরণের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। তৈল বিজ তথা সরিষা উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এব্যাপারে অতিরিক্ত সচিব গবেষণাকে প্রধান করে ৬ সদস্যের একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটি আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এব্যাপারে একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
বাসস/সবি/এমএন/২১০০/-জেজেড