রাঙ্গামাটির আম বাগানগুলো ছেয়ে গেছে মুকুলে

702

রাঙ্গামাটি, ১১ মার্চ, ২০১৮ (বাসস) : ফাল্গুন মাসের শুরু থেকে আমের মুকুলে ছেয়ে গেছে রাঙ্গামাটির জেলা শহরসহ উপজেলাগুলোতে আম বাগানগুলো। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে কৃষকরা বিমোহিত। আর কয়েক মাস পর মুকুল পরিণত হবে ফলে। তাদের চোখে মুখে হাসির ফুলকি ঝড়ছে। তাই এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার না হলে আমের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ।
রাঙ্গামাটিতে সাধারণত আম্রপালি এবং রাঙ্গুলী দু’ধরনের জাতের আম চাষ হয়। এর মধ্যে আ¤্রপালির স্থানীয় বাজার থেকে শুরু করে জেলার বাইরে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এর দামও ভালো পাওয়া যায়। এজন্য স্থানীয় কৃষকরা কয়েকবছর ধরে আ¤্রপালি চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।
বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের আম চাষি ধনলাল চাকমা জানান, গাছে প্রচুর আমের মুকুল দেখে খুব ভালো লাগছে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে ব্যবসা ভালো হবে বলে জানান তিনি। এ চাষি বলেন, আম চাষ লাভজনক হওয়ায় স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় চার বছর আগে ২০০টি আ¤্রপালি লাগানো হয়েছিলো। গত বছরও লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন। তিনি আরও বলেন, আশা করি এবার আরো ভালো দাম পাবো।
মগবান ইউনিয়নের আম চাষি সৈকত চাকমা জানান, আম চাষ কষ্টসাধ্য কম হওয়ায় এবং লাভ ভালো পাওয়ায় তিন একর জমিতে তিন বছর আগে ১৫০টি আ¤্রপালি লাগানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার বাগানের গাছে মুকুলের বাম্পার ফলন হয়েছে এবার। আবহাওয়া ঠিক থাকলে ফলন ভালো পাওয়া যাবে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, জেলা সদরের বালুখালি, মগবান, কুতুকছড়ি, জিপতলী, সাপছড়ি প্রভৃতি এলাকা এবং উপজেলাগুলোর মধ্যে বাঘাইছড়ি, লংগদু, বিলাইছড়ি, জুরাইছড়ি, বরকল প্রভৃতি উপজেলার আম বাগানগুলোতে প্রচুর মুকুল এসেছে। আম চাষ লাভজনক হওয়ায় জেলায় কয়েক বছর ধরে আম চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। আম বাগানের মুকুলের বাম্পার দেখে কৃষকরা বেজায় খুশি বলে সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান।
তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আবহাওয়া ঠিক থাকলে আম ব্যবসা এবার জমে উঠবে। জেলার বাইরে এ জেলার আমের প্রচুর চাহিদা এবং লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় গত বছরের চাষের তুলনায় এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার হেক্টরে।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রমনী কান্তি চাকমা জানান, রাঙ্গামাটির জেলার বেশির ভাগ আমবাগানগুলোতে মুকুলের বাম্পার ফলন হয়েছে।
তিনি বলেন, বাম্পার ফলন বড় কথা নয়, মূলত আবহাওয়ার উপর নির্ভর করছে কৃষকের ভাগ্য। এছাড়া বাগানগুলোতে কৃষক সঠিক নিয়মে যতœ করতে পারলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
এ কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, বাগানে মুকুল ফোটার আগে বাগানে স্প্রে করতে হয়। এরপর গুঁটি ফোটার সময় তিনবার করে পোকামুক্ত করার জন্য স্প্রে করতে হয়। সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে কৃষক ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারবে এবং লাভের মুখ দেখবে বলে এ কৃষি কর্মকর্তা জানান।
এদিকে জেলায় কয়েক বছর ধরে আমের ভালো ফলন হলেও আম সংরক্ষণের জন্য কোন ব্যবস্থা নেই। তাই সংরক্ষণের অভাবে অনেক আম নষ্ট হয়ে যায়। তাই জেলায় একটি হিমাগার স্থাপন করার জন্য স্থানীয় কৃষকরা দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছে।