প্রিমিয়ার লিগ : জয় দিয়ে শুরু আবাহনী ও রূপগঞ্জের, শেখ জামালকে হারালো উত্তরা

391

ঢাকা, ৮ মার্চ ২০১৯ (বাসস) : ১২টি দল নিয়ে আয়োজিত ওয়ানডে ফর্মেটে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটের উদ্বোধনী দিনে আজ নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছে আবাহনী লিমিটেড। ওপেনার জহিরুল ইসলামের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে আবাহনী ৬০ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিড়া প্রতিষ্ঠানকে (বিকেএসপি)।
শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেয় বিকেএসপি। আগে ব্যাট হাতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি আবাহনীর ব্যাটসম্যানরা। স্কোর বোর্ডে ৫৩ রান উঠতেই ৪ উইকেট হারায় তারা। শ্রীলংকার কুশল সিলভা ৭, নাজমুল হোসেন শান্ত শুন্য, অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন ১৩ ও সাব্বির রহমান ২ রান করে আউট হন।
শুরুতে চাপে পড়ে যাওয়া আবাহনীকে রক্ষা করার পণ করেন ওপেনার জহিরুল ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। পঞ্চম উইকেটে দারুন এক জুটিতে ১১২ রান যোগ করেন জহিরুল ও সাইফউদ্দিন। এরমধ্যে ৫৫ রান অবদান ছিলো সাইফউদ্দিনের। ৬টি চারে ৮০ বল মোকাবেলা করে নিজের দায়িত্বশীল ইনিংসটি সাজান সাইফ।
সাইফ ফিরে যাবার পর জহিরুলকে আর কোন ব্যাটসম্যানই সঙ্গ দিতে পারেননি। তবে এক প্রান্ত আগলে একাই লড়াই করে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরিও তুলে নেন জহিরুল। তিন অংকে পা দিয়ে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ব্যাট করা জহিরুল ১২১ রানে অপরাজিত থাকেন। এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান ১৪৭ বল মোকাবেলা করে ১৩টি চার ও ১টি ছক্কা হাকান। তার সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২১৬ রানের সম্মানজনক সংগ্রহ পায় আবাহনী। বিকেএসপির আবু নাসের ৩৯ রানে ৩ উইকেট নেন।
২১৭ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে আবাহনী বোলারদের তোপের মুখে পড়ে বিকেএসপি। দলের সংগ্রহ ৯৯ রানে পৌঁছাতেই ৬ ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। ছোট ছোট ইনিংস খেলে দলকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন ওপেনার রাতুল খান ও অধিনায়ক আব্দুল কাইয়ুম। কিন্তু তারা বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ৪০ দশমিক ৫ ওভারে ১৫৬ রানেই গুটিয়ে যায় বিকেএসপির ইনিংস। রাতুল ৩৭ রানে থামলেও কাইয়ুম অপরাজিত ৩৮ রান করেন। আবাহনীর নাজমুল ইসলাম ১০ ওভারে ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট। এছাড়া সানজামুল ইসলাম ৪১ রানে শিকার করেন ২ উইকেট।

উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে শেখ জামালকে হারালো উত্তরা
ঢাকা, ৮ মার্চ, ২০১৯ (বাসস) : আজ থেকে শুরু হওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে শুভ সূচনা করলো উত্তরা স্পোটিং ক্লাব। উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে শেখ জামালকে ধানমন্ডি ক্লাবকে ৯ রানে হারায় উত্তরা। প্রথম ব্যাট করে ৪ উইকেটে ২৪৯ রান করে উত্তরা। জবাবে ৯ উইকেটে ২৪০ রান করতে সমর্থ হয় শেখ জামাল।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় শেখ জামাল। ব্যাট হাতে নেমে দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও আনিসুল ইসলাম ইমন দুর্দান্ত সূচনা এনে দেন উত্তরাকে। ২৪ দশমিক ২ ওভারে ১১৩ রানের জুটি গড়েন তারা। তবে দলীয় ১১৬ রানের মধ্যে বিদায় নেন দুই ওপেনার। তানজিদ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৬৪ রানে থামেন। তবে ইমন আউট হন ৪৭ রানে।
এরপর মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু রানের গতিটা বাড়াতে পারছিলেন না তারা। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৪৯ রানের সংগ্রহ পায় উত্তরা। রাজা আলী দার ১৮, মিনহাজ খান ৩৮ রান করেন। তবে তিন নম্বরে নামা সজিব হোসেন ৮৩ বলে ৬১ ও অধিনায়ক মহিমেনুল খান ৯ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন। শেখ জামালের তানবীর হায়দার ২২ রানে ২ উইকেট নেন।
২৫০ রানের টার্গেটে ভালো শুরু হয়নি শেখ জামালের। ৩৫ রানে ২ উইকেট হারায় তারা। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে তৃতীয় উইকেটে ৫৩ রানের জুটি গড়েন ওপেনার ফারদিন হাসান ও নাসির হোসেন। তবে দু’জনের কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ফারদিন ৩৯ ও নাসির ৪৮ রান করে আউট হন। ছয় নম্বরে নামা তানবীর ১ রানে ফিরলে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে শেখ জামাল।
তবে লোয়ার-অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান জিয়াউর রহমান ও ইলিয়াস সানিকে নিয়ে লড়াই করেন অধিনায়ক নুরুল হাসান। কিন্তু তাদের লড়াই দলের হার এড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিলো না। এই তিনজনের কেউই দলকে জয়ের স্বাদ দিতে পারেননি। নুরুল ৩টি করে চার-ছক্কায় ৬৫ বলে ৬৫, জিয়াউর ২৭ বলে ২৭ ও ইলিয়াস ২০ বলে ২৮ রান করে আউট হন। শেখ জামাল ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪০ রান পর্যন্ত যেতে পারে। উত্তরার আব্দুর রশিদ ও আসাদুজ্জামান পায়েল ৩টি করে উইকেট নেন।

জয় দিয়ে লিগ শুরু করলো রূপগঞ্জ
ঢাকা, ৮ মার্চ, ২০১৯ (বাসস) : জয় দিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করলো লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। আজ থেকে শুরু হওয়া লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে রূপগঞ্জ ৩ উইকেটে হারিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে।
সাভারের বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে রূপগঞ্জ। ব্যাট হাতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে ব্রাদার্স। দলের স্কোর সেঞ্চুরিতে পৌঁছানোর আগেই পাঁচ ব্যাটসম্যান ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। তবে মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলীর হাফ-সেঞ্চুরির সাথে লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ছোট ছোট ইনিংসের কল্যাণে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২২০ রানের সম্মানজনক স্কোর পায় ব্রাদার্স।
ইয়াসির ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৯ বলে ৬৫ রান করেন। এছাড়া শরিফুল্লাহ ৩৫, অধিনায়ক মোহাম্মদ শরীফ অপরাজিত ২৪ ও হাবিবুর রহমান ২০ রান করেন। রূপগঞ্জের মুক্তার আলী-নাবিল সামাদ ২টি করে উইকেট নেন।
২২১ রানের জয়ের টার্গেটে ৬৭ রানের সূচনা পায় রূপগঞ্জ। কিন্তু দুই ওপেনারসহ দলীয় ৬৯ রানের মধ্যে তিন ব্যাটসম্যান হারায় তারা। ওপেনার আজমির আহমেদ ৩৮, মোহাম্মদ নাইম ২১ ও চার নম্বরে নামা অধিনায়ক নাইম ইসলাম ১ রান করে আউট হন।
২ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কাটা পরবর্তীতে ভালোভাবেই সামাল দেন তিন নম্বরে নামা শাহরিয়ার নাফীস। এক প্রান্ত আগলে দলকে জয়ের পথে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন তিনি। তাকে ছোট ছোট ইনিংস খেলে সঙ্গ দিয়েছেন আসিফ আহমেদ, ভারতের ঋষি ধাওয়ান ও জাকের আলী। আসিফ ৩৮, ধাওয়ান ২২ ও জাকের ১৭ রান করেন।
তবে ৪৯তম ওভার পর্যন্ত ব্যাট করে রূপগঞ্জকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়ে আউট হন নাফীস। মাত্র ২টি চারে চাপের মুখে ব্যাট করে ৯৮ বলে ৫৯ রান করেন নাফীস। দলীয় ২১১ রানে নাফীস ফিরলে মুক্তার আলী ও মোহাম্মদ শহীদ ১ বল বাকী থাকতে রূপগঞ্জকে জয় এনে দেন। মুক্তার ১১ ও শহীদ ৩ রানে অপরাজিত থাকেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন রূপগঞ্জের নাফীস।