পিরোজপুরের কমিউনিটি ক্লিনিকে মহিলা রোগীর সংখ্যা পুরুষের প্রায় দ্বিগুণে পৌঁছেছে

416

পিরোজপুর, ১ মার্চ, ২০১৯ (বাসস) : জেলার পল্লী এলাকায় অবস্থিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা মহিলা রোগীর সংখ্যা পুরুষের প্রায় দ্বিগুণে পৌছেছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত জেলার ৭ উপজেলার ৫২ ইউনিয়নের ১৬৩ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ৯ লক্ষ ১৮ হাজার ২শ ১৪ জন রোগী বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা গ্রহণ করেছে। এবং এর মধ্যে নারীর সংখ্যা হচ্ছে ৫ লক্ষ ৮৫ হাজার ৯ শত ৮৮ জন।
পিরোজপুরের পল্লী অঞ্চলের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে পল্লী এলাকার মানুষের নিত্য নৈমিত্তিক রোগ চিকিৎসা ও সেবা গ্রহণের নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। প্রত্যন্ত অঞ্চলের এসব ক্লিনিকে এখন গর্ভবতী মা-দের স্বাভাবিক সন্তান প্রসব করানো হচ্ছে সযতেœ। গত বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত জেলার ৭ উপজেলার ৫২টি ইউনিয়নের ১শ ৬৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ৯ লক্ষ ১৮ হাজার ২শ ১৪ জন রোগী চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা হচ্ছে ৫ লক্ষ ৮৫ হাজার ৯ শ ৮৮ জন । একই সময় ২ লাখ ৮৩ হাজার ১শ ৮১ জন পুরুষ এবং ৩৪ হাজার ৫ শ ২৬ জন শিশু ও চিকিৎসা এবং ওষুধ নিয়েছে।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে উল্লেখিত সময় ৬ হাজার ৬শ ৩৫ জন পুরুষ ১১ হাজার ৬শ ৮০ জন মহিলা এবং ১ হাজার ৯শ ৮৩ জন শিশু রোগীকে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পিরোজপুর, বরিশাল, খুলনা এবং ঢাকার সরকারি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। জেলার ১ শত ৬৮টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে বর্তমান সরকার ইতোমধ্যেই ১ শত ৬৩ টি ক্লিনিক চালু করেছে এবং ৫ টির নির্মাণ কাজ চলছে। যার মধ্যে চলতি অর্থ বছরে ৩টির কাজ শেষ হবে।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ ফারুক আলম বাসসকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে পল্লী এলাকার নারী-পুরুষ-শিশুর স্বাস্থ্য সেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক চালুর এক যুগান্তকারী পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করে। ২০০১ পরবর্তী সরকার এর নির্দেশে পিরোজপুর সহ সারাদেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে পল্লী এলাকার মানুষদের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়। ২০০৯ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পর্যায় ক্রমে বন্ধ হওয়া ক্লিনিক চালুর পাশাপাশি নতুন ক্লিনিক ভবন নির্মাণ করছে। জ্বর, আমাশয়, গ্যাষ্ট্রিক, কাশি, ডায়রিয়া, জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধ, বদ হজমসহ ৩৩ ধরনের রোগের ওষুধ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া পিরোজপুরের কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিকে নিরাপদে সন্তান প্রসব করানো হচ্ছে। সিভিল সার্জন আরও জানান মাতৃস্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য এবং গর্ভবতী মা’দের এবং শিশুদের পুষ্টি সেবাও প্রদান করা হয়ে থাকে। ২০১৮ সালে ৭ জন গর্ভবতী নারী কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক সন্তান প্রসব করেছে।
জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েক জন নারী-পুরুষ এ প্রতিবেদককে জানান বাড়ি থেকে অনতি দূরে এসব ক্লিনিক চালু হওয়ায় তাদের অর্থ ও কষ্ট দুটোই লাঘব হচ্ছে এবং নারীও শিশুসহ স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষ ভীষণভাবে উপকৃত হচ্ছে।